ভারতীয় ছবি পাকিস্তানে নিষিদ্ধ করেছে লাহোর হাইকোর্ট
ঢাকা : ভারতীয় প্রযোজনায় তৈরি কোনও সিনেমা পাকিস্তানে দেখানো চলবে না। শুক্রবার লাহোর হাইকোর্টের এই নির্দেশের ফলে স্পষ্টতই জোরাল চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ল পাকিস্তানে ভারতীয় ছবির ব্যবসা। সেই সঙ্গে মুক্তি নিষিদ্ধ হলো বহুল আলোচিত ছবি ‘ধুম থ্রি’।
শুক্রবার লাহোর হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, পাকিস্তানের ফেডেরাল ফিল্ম সেন্সর বোর্ড এখন থেকে কোনও ভারতীয় সিনেমাকে প্রদর্শন-যোগ্য বলে সার্টিফিকেট দিতে পারবে না।
সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানি চলাকালীন পাকিস্তানের চলচ্চিত্র-কর্মীদের অ্যাশোসিয়েশান দাবি করে, পাকিস্তানে ভারতীয় ছবির অবৈধ প্রদর্শনের পিছনে পাক সেন্সর বোর্ড মূল ভূমিকা পালন করে। অ্যাসোসিয়েশানের তরফে বলা হয়, পাকিস্তানের আইন অনুসারে এ দেশে এমন কোনও ছবি দেখানো যায় না যার প্রযোজনা ভারতে হয়েছে। এ দিন বিচারক খালিদ মহমুদ খান নির্দেশ দেন, পরবর্তী কোনও নোটিশ জারি হওয়ার আগে পর্যন্ত পাক প্রেক্ষাগৃহতে চলার জন্য কোনও ভারতীয় ছবিকে সার্টিফিকেট দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি, এ প্রসঙ্গে পাক সেন্সর বোর্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের কাছ থেকে লিখিত প্রতিক্রিয়াও চেয়ে পাঠিয়েছে আদালত।
পাক টেলিভিশনের সঞ্চালক মুবাশির লুকম্যানের অভিযোগ ছিল, ভারতীয় চলচ্চিত্র অবৈধ ভাবে পাকিস্তানে পাচার এবং প্রদর্শন করা হচ্ছে। এই মর্মে আদালতে একটি পিটিশনও দাখিল করেছিলেন তিনি। তারপর, ওই অবৈধ পাচার এবং প্রদর্শন রুখতে বর্তমান আইনগুলিকে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে সক্রিয় হতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট৷ লুকম্যান তার পিটিশনে এ-ও জানান যে, পাকিস্তানের মোশন পিকচার্স অর্ডিন্যান্সের ২৭০(এ) ধারা এবং মার্শাল বিধির ৮১ নং ধারা অনুযায়ী, ভারতীয় কোনও সিনেমা, নাটক বা অন্য কোনও অনুষ্ঠান পাকিস্তানে দেখানো অবৈধ।
এ ছাড়াও, পাক ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অন্যান্য আবেদনকারীর অভিযোগ ছিল, ভারতীয় সিনেমার প্রদর্শন পাকিস্তানের নিজস্ব সিনেমা শিল্পের অপূরণীয় ক্ষতি করছে। গত ১৯ নভেম্বর এক পিটিশনার তথ্য দেখিয়ে দাবি করেন, ২০০৬ সাল থেকে পাকিস্তানে অন্তত ২১৩টি এমন ভারতীয় ছবি মুক্তি পেয়েছে, যেগুলির ক্ষেত্রে জাল নথিপত্র দেখিয়ে প্রদর্শনীর ছাড়পত্র আদায় করা হয়েছে। ঘটনাক্রমে এমন দিনে এই নিষেধাজ্ঞা জারি হলো যখন পাকিস্তানসহ সারা বিশ্বে মুক্তি পেয়েছে এমন একটি বড় বাজেটের ভারতীয় ছবি, যার জন্য আক্ষরিক অর্থেই দিন গুনছিলেন মানুষ আমির খান অভিনীত ধুম থ্রি। করাচির প্রেক্ষাগৃহ মালিকরা জানাচ্ছেন, আগামী কয়েক সপ্তাহের অধিকাংশ টিকিটের অগ্রিম বুকিং হয়ে গিয়েছে। আদালতের নির্দেশ যাই হোক না কেন, এ দিন পাক জনতার মধ্যে ছবিটি দেখার তুমুল আগ্রহ দেখা গিয়েছে। করাচির বহু সিনেমা-হলের সামনে টিকিটের জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন উৎসাহী মানুষ। টিকিট না পেয়ে অনেককেই আশাহত হয়ে ফিরে যেতে হয়েছে।