জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধে যেকোনো সময় প্রজ্ঞাপন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করতে যেকোনো সময় প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
বুধবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধে দেশে নতুন করে অশান্তি হবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, জামায়াত-শিবিরই তো এই অবস্থা তৈরি করে রেখেছে। এই অবস্থা তৈরি করার পেছনে তাদের যথেষ্ট যোগসাজশ রয়েছে। কোটা আন্দোলনের সবকিছু মেনে নেয়ার পরেও আন্দোলন থামছে না, সহিংসতায় রূপ নিয়েছে।
তিনি বলেন,‘পরামর্শদাতারা পরামর্শ না দিলে ছাত্ররা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড ঘটাত না। এই যে এত মানুষ হতাহত হয়েছে, সবই কী পুলিশের গুলিতে হয়েছে? আমরাও প্রকাশ করব, কার গুলিতে কতজন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে। সবই আমরা প্রকাশ করব। এসব কিছু ছাত্ররা করেনি। ছাত্রদের পেছনে জামায়াত-বিএনপি ও অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলোও সম্পৃক্ত ছিল বলে আমরা জেনেছি।’
তিনি আরো বলেন, অনেকদিন ধরে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করার যে দাবি ছিল, সেটার বাস্তাবয়নের প্রক্রিয়া চলছে। এই পরিস্থিতির অবনতির জন্য যারা রয়েছেন, তাদেরও আইনের আওতায় আনার জন্য প্রক্রিয়া চলছে। যারা এগুলো করছেন, জনগণকে সে সম্পর্কে জানাতে হবে।
নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, জামায়াত-শিবির আগেই নিষিদ্ধ ছিল। জিয়াউর রহমান এসে তাদের দল করার রাজনৈতিক অধিকার দিয়েছে। এ দেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলগুলো এবং সুশীল সমাজও জামায়াত নিষিদ্ধের কথা বলে এসেছে। এটা জনগণেরও দাবি।
তিনি বলেন,‘গেল পরশুদিন ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠকে সবাই এ দলটিকে নিষিদ্ধ করার জন্য পরামর্শ দিয়েছে।’
আজকের মধ্যে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ হবে কি না- এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক কিছু হতে পারে, তবে এখনো আমি বলব এটা প্রক্রিয়াধীন। সন্ত্রাস দমন আইনের ১৮ অনুচ্ছেদে এমন একটি সুযোগ রয়েছে। কাজ চলছে, যেকোনো সময় সিদ্ধান্ত এলে আমরা ঘোষণা দেব। প্রক্রিয়া শেষ হলেই আমরা জানাতে পারব।’
জাতিসঙ্ঘের আবাসিক প্রতিনিধির বৈঠক প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তারা জিজ্ঞাসা করেছেন আর কতদিনের মধ্যে অবস্থা স্বাভাবিক হবে। আমরা বলেছি, ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। অল্পসময়ের মধ্যেই আমরা কারফিউ তুলে নিতে পারব, সামরিক বাহিনী ব্যারাকে ফিরে যাবে।
আর প্রাণহানির বিষয়ে বলেছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন, তাদের দেখতে গিয়েছেন, তাদের কিছু নগদ টাকা সাহায্য করেছেন। আমরা মনে করি, এই ঘটনা পুলিশ বা নিরাপত্তা বাহিনী ইচ্ছা করে কিংবা কারো প্ররোচনায় করেনি। তারা জানমাল ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে মোকাবিলা করেছে।
জাতিসঙ্ঘের আবাসিক প্রতিনিধির প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি কিছু বলেননি। তিনি আরেকটি প্রশ্ন করেছেন, সেনাবাহিনী জাতিসঙ্ঘ লেখা এপিসি ভেহিকল ব্যবহার করেছে। আমি বলেছি, এটা জাতিসঙ্ঘ থেকে ফেরত এনেছে, সেনাবাহিনী তাড়াহুড়ো করে সেটা বের করেছে। যখন দৃশ্যমান হয়েছে, সাথে সাথে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। যখনই তাদের নজরে এসেছে, তখনই সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
তদন্তের তাদের আগ্রহ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের একটি বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন ছিল। আমরা সংখ্যা বাড়িয়ে আরো শক্তিশালী করেছি। তদন্ত শুধু তাদেরই না, পুলিশেরও তদন্ত হবে। কেন পুলিশ গুলি করতে বাধ্য হলো, সেই তদন্ত হবে। কেউ ভুল করে থাকলে সেটাও আমরা দেখব।
সূত্র : ইউএনবি