৮ নেতাকর্মীকে হত্যার অভিযোগ ফখরুলের

27/10/2013 5:28 pmViews: 11
1382805009বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের ওপর সরকারের হামলা,হত্যা,মামলা ও নির্যাতনের অভিযোগ তুলে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শনিবার দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি সারাদেশে ১৮ দলের নেতাকর্মীদের ওপর শাসকদল ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন। এছাড়া গত শুক্রবার ১৮ দলের কর্মসূচিতে দেশজুড়ে সংঘটিত সহিংসতায় নিহত ও আহত নেতাকর্মীদের পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন ফখরুল। শুক্রবার দেশব্যাপী ১৮ দলের বিক্ষোভ ও সমাবেশ কর্মসূচিতে আইনশঙ্খলা বাহিনী ও শাসকদলের হামলায় মোট ৮ জন নিহত,আহত সাড়ে ৬শ জন, ১৭৫ জনকে আটক এবং ৩১ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের অভিযোগ তোলেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে দমনমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। তারা ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ও ১৪৪ ধারা জারি করে। যদিও জনগণের চাপে এসব নিষেধাজ্ঞা  ও ১৪৪ ধারা তুলে নিতে বাঁধ্য হয় তারা।  ফখরুল বলেন, সারাদেশে সরকার দমনমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। ২০ তারিখ থেকে নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয় বন্ধ। এমনকি ঢাকায় সভা সমাবেশের ওপরও নিষেধাজ্ঞা  আরোপ করেছে তারা।  তিনি বলেন, এসব সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি। তবে জনগণের চাপে শেষ পর্যন্ত তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেয়। একই ভাবে বরিশাল, খুলনা,রাজশাহী, সিলেট সহ দেশের মহানগরী এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে জেলাগুলোতেও সমাবেশ বন্ধ করে দিয়েছে তারা।

তবে অনেক জায়গায় জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলে ১৪৪ ধারা ভেঙে রাস্তায় নেমে আসে। শুক্রবার সারাদেশে ১৮ দলের কর্মসূচিতে সরকার নিষ্ঠুরভাবে দমন পীড়ন চালিয়েছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ,কক্সবাজারের চকরিয়া, সাতক্ষীরার শ্যামনগর এবং নীলফামারীর জলঢাকায় গুলি করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে শাসকরা। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত নেতাকর্মীদের নামের তালিকা প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল। ত্রিশ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে সারাদেশে শুক্রবার ১৮ দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের বর্ণনা দেন মির্জা ফখরুল। এছাড়া রাজধানীতে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাসা বাড়িতে পুলিশি অভিযান ও হয়রানির চিত্রও তুলে ধরেন তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, পুলিশ-র‌্যাব ও বিজিবি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। কিন্তু তাদের নিজেদের দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে সরকার। তাদের দায়িত্ব জনগণকে রক্ষা কারা। বিজিবির দায়িত্ব সীমান্ত রক্ষা করা। সেই দায়িত্ব পালনে ব্যবহার না করে তারা বিজিবিকে ব্যবহার করছে দেশের জনগণের গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমনে।

তিনি বলেন, সরকার চোরাগলি দিয়ে পুনরায় ক্ষমতায় আসতে চায়। শেয়ার বাজার, হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে যারা জড়িত তাদের না ধরে ছোটোখাটো কর্মচারীদের ধরা হয়েছে। চৌধুরী আলমকে গুম করা হয়েছে, তার কোনো খবর নেই।  তিনি বলেন, সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হস্তক্ষেপ করেছে। আমার দেশ বন্ধ করে দিয়েছে। দিগন্ত, ইসলামিক টিভি ও চ্যানেল ওয়ানকে বন্ধ করে দিয়েছে।  এ সময় তিনি শুক্রবার সারাদেশে নেতাকর্মীদের নিহত করার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানোর পাশাপাশি গণতন্ত্র রক্ষার শহীদ অভিহিত করে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। একই সঙ্গে সারাদেশে আটক নেতাকর্মীদেরও মুক্তির জোর দাবি জানান সরকারের প্রতি।

Leave a Reply