৭২-৭৫ পর্যন্ত মানুষ মুক্তির পরিবর্তে আরো বেশী নির্যাতিত হয়েছে : মির্জা ফখরুল

19/08/2020 11:38 pmViews: 5

৭২-৭৫ পর্যন্ত মানুষ মুক্তির পরিবর্তে আরো বেশী নির্যাতিত হয়েছে : মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যুদ্ধের ঘোষণা শুনে সেদিন ১৯৭১ সালে যারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তাদের স্বপ্ন ছিল তারা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পাবে, একটি গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা পাবে এবং অর্থনৈতিক মুক্তি আসবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ১৯৭২ সালের পর থেকে মানুষ আরো ক্রীতদাস হয়েছে। মুক্তি তো পায়নি বরং আরো বেশী করে নির্যাতিত হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা দেখেছি ১৯৭২-৭৫ সালে আওয়ামী লীগ শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য স্বাধীনতার সকল স্বপ্নগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছিলো। তারা প্রথমেই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন। তারও আগে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইন করেছিলো। সবশেষে ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল কায়েম করেছে।

বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয়তাবাদী সেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ সহ শীর্ষ নেতারা আলোচনায় অংশ নেয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি একটি বই দেখছিলাম “১৯৭২-৭৫ এর কয়েকটি দলিল”। এই বইটা সকল যুব সমাজের দেখা দরকার। এই বইটির মধ্যে শেখ মজিবুর রহমানের বক্তব্য, আওয়ামীলীগ এর এবং সকল রাজনৈতিক দলের ডকুমেন্ট আছে। ১৯৭৪ সালের দূর্ভিক্ষের প্রেক্ষিতে কি কি বক্তব্য এসেছিলো তাও এখানে আছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল’ কায়েম করার পরে এখানে জাসদের বক্তব্য আছে, অন্যান্য বাম রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য আছে। এখানে শান্তি সেনের স্ত্রী অরুণ সেন তার বউমা এবং হানুফা বেগম এর উপর রক্ষীবাহিনী যে নির্যাতন করেছে তার বর্ননা নিজ মুখ দিয়ে দেয়া আছে।

তিনি বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ তাদের আইনজীবী ছিলেন। সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে একটি পরিবর্তনের শুভ সূচনা করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি একটি নতুন সমাজের, নতুন বহুদলীয় গণতন্ত্র ও মুক্ত অর্থনৈতিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু এক এগারোর পর থেকে আবার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে তারা এই কাজটি শুরু করেছে এবং মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে বাংলাদেশের দুটি দুর্যোগ চলছে একটি হলো প্রকৃতি থেকে আসা করোনা মহামারী, আরেকটা রাজনৈতিক দূর্যোগ। আজকে কোভিড-১৯ এর কারণে মানুষের জীবন-যাবপন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে অরাজনৈতিক দূর্যোগের মধ্য দিয়ে এই দেশের প্রতি জনগণের যে মালিকানা ছিলো সেটা সরকার কেড়ে নিয়ে একটি লুটেরা অর্থনীতি, একটি লুটেরা সমাজ ব্যবস্থা চালু করেছে।

আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বাকশাল তৈরি করে যে রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি করেছিল সেই শূন্যতাকে পূরণ করার জন্য শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠা করেছেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ধংস করেছিলো। অর্থনৈতিক সমাজতন্ত্রের নামে একটি লুটেরা অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চালু করেছিল। এই অবস্থা থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশকে মুক্ত করেছেন ও দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছেন। অর্থনৈতিক সমাজতন্ত্রের পরিবর্তে তিনি সুষম সমাজ ব্যবস্থা চালু করেছেন।

তিনি আরো বলেন, দেশ এখন রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে দুর্যোগে আছে। তার মধ্যে বৈশ্বিক মহামারী করোনা ও বন্যা আমাদের দূর্যোগের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। আজকে সে কারণে আমরা স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ভার্চুয়াল আলোচনা সভার মাধ্যমে করছি তা না হলে অতীতের ন্যায় আমাদের দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে বড় সমাবেশ করে পালন করা হতো।

Leave a Reply