৬৫ দিন অনশনের পর মুক্তি পেলেন ফিলিস্তিনি বন্দী
ইসরাইলি কারাগারে অনশনরত বন্দী গাদানফার আবু আতওয়ানকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে তাকে ইসরাইলের রেহভুত জেলার কাপলান মেডিক্যাল সেন্টার থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
টানা ৬৫ দিন অনশনের পর মুক্তি পেলেন এই ফিলিস্তিনি বন্দী। বর্তমানে তিনি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পশ্চিম তীরের রামাল্লার আল-ইসতেশারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছেন।
মুক্তি পাওয়ার পর অনশনও শেষ করেছেন তিনি।
এর আগে গত বছরের অক্টোবরে পশ্চিম তীরের হেবরনের কাছাকাছি দুরা গ্রামের বাসিন্দা গাদানফার আবু আতওয়ানকে গ্রেফতার করে ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনী। গ্রেফতারের পর ২৮ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাস্টম পুলিশের সদস্য আবু আতওয়ানকে কোনো অভিযোগ ছাড়াই প্রশাসনিক আটকাদেশের অধীনে ছয় মাস বন্দী রাখার আদেশ দেয়া হয়। পরে আরো ছয় মাস তার প্রশাসনিক আটকাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হলে ইসরাইলি র্যামন কারাগারে ৫ মে থেকে অনশন শুরু করেন তিনি।
টানা ৫০ দিন অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়লে আবু আতওয়ানকে কাপলান মেডিক্যাল সেন্টারে পাঠায় ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মুক্তি না দেয়ায় অনশন অব্যাহত রাখেন তিনি।
গত ২১ জুন কাপলান মেডিক্যাল সেন্টারের কর্তৃপক্ষ এক জানিয়েছিল, যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া না হলে আবু আতওয়ান প্যারালাইজ বা দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত হতে পারেন অথবা তার হঠাৎ মৃত্যুও হতে পারে।
অনশনের ৬১তম দিনে রোববার ফিলিস্তিনি বন্দীদের সংগঠন ডিটেইনিইস অ্যান্ড এক্স-ডিটেইনিস অ্যাফেয়ার্স কমিশনের মুখপাত্র হাসান আবেদ-রাব্বু এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, অনশনের কারণে আবু আতওয়ান ভয়াবহ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার শরীরে পানি জমে গিয়ে হৃৎপিণ্ড ও কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্রম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এছাড়া তিনি ক্লান্তি ও মাথা ব্যথায় ভুগছেন।
অনশনে ইতোমধ্যেই আবু আতওয়ানের ১৫ কেজি ওজন কমেছে। সাথে সাথে তিনি কথা বলার ও চলাচল করার শক্তি হারিয়েছেন। অনশনের সাথে সাথে ইসরাইলি কারা কর্তৃপক্ষের চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণেও আবু আতওয়ান অস্বীকার করে আসছিলেন বলে জানান হাসান আবেদ-রাব্বু।
পরিবারের সূত্রে জানা যায়, ১৯ বছর বয়স থেকে নিয়মিত ইসরাইলি কারাগারে যাওয়া আসার মধ্যে রয়েছেন আবু আতওয়ান। ২৮ বছর বয়সী এই তরুণ চার মেয়াদে জীবনের সাত বছরই ইসরাইলি কারাগারে কাটিয়েছেন। এর মধ্যে কোনো প্রকার অভিযোগ ছাড়া প্রশাসনিক আটকাদেশের অধীনে পাঁচ বছর কারাগারে কাটান তিনি।