২৫ অক্টোবর থেকে রাজপথ দখলে রাখবে আ.লীগ
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিরোধী দলের আন্দোলন ঠেকাতে ২৫ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশের মাধ্যমে রাজপথ দখল ও পর্যায়ক্রমে গোটা দেশে সাংগঠনিক তৎপরতা জোরদার করার পরিকল্পনা নিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৫ অক্টোবর থেকে ঢাকার বাইরে পাড়া-মহল্লায় নেতা-কর্মীদের সচেতন থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে ভেতরে ভেতরে আন্দোলন মোকাবিলার প্রস্তুতি থাকলেও আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, তাঁরা নিশ্চিত, বিএনপি ‘কঠোর কর্মসূচি’র কথা বললেও আন্দোলন হালে পানি পাবে না। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘তাদের অনেক আন্দোলন দেখেছি। ঈদের পর আর আগে কী, তারা কিছুই করতে পারবে না।’
আর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘আমরা বিএনপিকে প্রতিদ্বন্দ্বীই মনে করি না। কাউকে প্রতিহত করতে ওই সমাবেশ ডাকা হয়নি। দলের সাফল্য ও নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসেবে এই সমাবেশ ডাকা হয়েছে। ওই দিন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ রাজপথ দখল করে রাখবে।’
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অনেকেরই আশঙ্কা, ২৪ অক্টোবরের পর বিএনপি নয়, জামায়াতে ইসলামীই সহিংসতা চালাতে পারে। সে বিষয়ে নজর রাখার ব্যাপারে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জানা গেছে, আগামী রোববার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক রয়েছে। বৈঠক থেকে সারা দেশের নেতা-কর্মীদের নির্বাচনী প্রচার এবং বিরোধী দলের আন্দোলনের পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার নির্দেশনা থাকতে পারে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ প্রথম আলো ডটকমকে বলেছেন, সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা, বিরোধী দলের অপতত্পরতা, কর্মসূচি নির্ধারণ সামনে রেখেই মূলত কার্যনির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হবে।
আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, ২৪ অক্টোবরের পর থেকে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর নিয়মিত কর্মসূচি থাকবে। এ ছাড়া বিরোধী দলের আন্দোলন ঠেকাতে এসব সংগঠনকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ সময় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এলাকায় আওয়ামী লীগের পাশাপাশি অবস্থান করবে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগের মতো সংগঠনগুলো। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল বলেন, ‘কেউ যদি জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটায়, তাহলে আমরা প্রতিহত করব। আমরা রুটিন ওয়ার্ক করব।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, ঈদের পর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সার্বক্ষণিক অবস্থান করবে দলের নেতা-কর্মীরা। একইভাবে ঢাকার সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সার্বক্ষণিক উপস্থিতি থাকবে দলীয় নেতা-কর্মীদের। স্থানীয়ভাবে সভা, সমাবেশ, প্রচার, মিছিল, মহড়ার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নিজেদের সাংগঠনিক কাজে ব্যস্ত রাখবেন। এ ছাড়া জেলা ও বিভাগীয় শহরের কর্মসূচিতে গুরুত্ব অনুসারে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই কর্মসূচি সরাসরি পর্যবেক্ষণ করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলো ডটকমকে বলেছেন, রাজপথে অবস্থানের বাইরেও আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের দৃষ্টি ফেরাতে শিগগির ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করবে। তবে এবারের প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারের পাশাপাশি আন্দোলনও করতে হবে। আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন, আসনভিত্তিক প্রচারে নামলে মানুষের মধ্যে নির্বাচনী আবহ তৈরি হবে। এতে করে বিরোধী দল আন্দোলনে জনগণের সাড়া পাবে না।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ নির্দেশনা
২৫ অক্টোবরের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন অবনতি না হয় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে যেকোনো সংঘাত-সহিংসতা কঠোরভাবে দমন করতে হবে। বাস্তবতার নিরিখে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে তারা।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর ৮ অক্টোবর ফেনীর ফুলগাজী থানার নবনির্মিত ভবন উদ্বোধনকালে বলেছিলেন, ‘২৫ অক্টোবরের পর আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করা হলে সর্বাত্মক শক্তি দিয়ে দুর্বৃত্তদের দমন করা হবে