২০ দলীয় জোট আছে থাকবে

13/08/2015 1:31 pmViews: 6
২০ দলীয় জোট আছে থাকবে

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ২০ দলীয় জোট আছে, থাকবে। জোট নিয়ে কে কি বলল, সেদিকে কান না দিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকুন। নিজ নিজ দলকে কিভাবে আরও গতিশীল করা যায় তা নিয়ে কাজ করুন। আপাতত দল পুনর্গঠন করুন। কর্মসূচি নিয়ে পরে আমরা আবার বসব। প্রায় নয় মাস পর জোট নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে শিশু হত্যা, নারী নির্যাতনসহ নানা ঘটনায় আইনশৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। জোটের দুই শীর্ষ নেতা এসব ঘটনায় সারা দেশে জোটগতভাবে মানববন্ধনসহ সভা-সেমিনার বা অন্য কোনো কর্মসূচি দেয়া যায় কিনা সে বিষয়ে  জোটপ্রধান খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দেন জোট নেতারা। তবে এ বিষয়ে খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে ফেরার পর সিদ্ধান্ত হবে। তবে প্রতিমাসে একবার করে জোটের সভা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জোট নেতারা জানান। বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জোট নেতাদের সঙ্গে  রাত সাড়ে ৮টা থেকে  দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন খালেদা জিয়া।

এর আগে সর্বশেষ ২২ নভেম্বর একই স্থানে জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেছিলেন। জোটে সন্দেহ, অবিশ্বাস এবং ভাঙন নিয়ে নানা মহলে যে আলোচনা  রয়েছে তা এ বৈঠক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে শেষ হল বলে মনে করেন জোট নেতারা।

বৈঠক শেষে জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমদ বলেন, ‘বৈঠকে ২০ দলীয় জোটের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে বৃস্পতিবার ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে।

বৈঠকে খালেদা জিয়া বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বিষয়টি বুঝে গেছে। আমরাও শেখ হাসিনা মার্কা কোনো সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনে যাব না। সরকার জাতীয় নির্বাচন দিতে চায় না। কিন্তু ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করেই আমাদের নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করে নিতে হবে। সেই নির্বাচনেই অংশ নিতে চাই।

বাংলাদেশে সফরে আসা ভারতের নরেন্দ্র মোদির বৈঠক সম্পর্কে খালেদা জিয়া বলেন, আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, বিশেষ কোনো দলের সঙ্গে নয়; আপনারা এ দেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক গড়–ন। মোদিও এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন। ভারতও জেনে গেছে বাংলাদেশে কোন দলের জনপ্রিয়তা কত।

খালেদা জিয়া বলেন, বেসিক ব্যাংকসহ নানা প্রতিষ্ঠানে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হচ্ছে। তা নিয়ে সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই। তারা আমার নামে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট সরকার গঠন করলে আমরা কোনো প্রতিহিংসার রাজনীতি করব না বলে ঘোষণা দেন খালেদা জিয়া।

খালেদা জিয়া বলেন, আমরা সব হত্যার বিচার চাই। ব্লগার হত্যা সরকারের ইন্ধনে হচ্ছে। তারা বিশ্বকে বুঝাতে চাইছে, বাংলাদেশ একটি  জঙ্গি ও মৌলবাদী রাষ্ট্র। এর মাধ্যমে তারা রাজনৈতিক সুবিধা আদায় করতে চাইছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, প্রতিটি সেক্টরেই দলীয়করণ করা হয়েছে এবং হচ্ছে। যার কারণে কোনো কিছুই সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই। সন্ত্রাসীতে ছাত্রলীগ চ্যাপিম্পয়ন হয়েছে। তাদের কাছে আজ মায়ের পেটের শিশুও নিরাপদ নয়। দেশের আইনশৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে।

তিনি বলেন, সব পুলিশ কর্মকর্তা খারাপ তা নয়। হাতেগোনা কয়েকজন কর্মকর্তা রয়েছে যারা এ সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে। এরাই সারা দেশে বিরোধী নেতাকর্মীদের গুম, খুনের সঙ্গে জড়িত। চাকরি টিকিয়ে রাখতে এসব কর্মকর্তার কথা অন্যরা মানতে বাধ্য হচ্ছে। আমি বলতে চাই, আমরা সরকারে গেলে ঢালাওভাবে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে না। যারা সরিসরি জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের প্রধান খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকে এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমদ, বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ  নেজামী, খেলাফত মজলিশের মহাসচিব আবদুল কাদের, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, এনডিপির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্তজা, এনপিপির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপের  জেবেল রহমান গানি, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান, পিপলস লীগের গরিবে নেওয়াজ, ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার সায়েদুল হাসান, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মুফতি ওয়াক্কাস ডিএলের সাইফুদ্দিন মনি প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply