১৭০ মণ ইলিশ ধরলেন একদল জেলে, সোনার চেইন দিয়ে বরণ
১৭০ মণ ইলিশ ধরলেন মাঝি, সোনার চেইন দিয়ে বরণ

বঙ্গোপসাগরের গভীরে একবার জাল পেতেই (স্থানীয়ভাবে “খ্যাপ” নামে পরিচিত) ১৭০ মণ ইলিশ ধরেছেন একদল জেলে। এ ঘটনায় খুশি হয়ে ট্রলারের মাঝিকে এক ভরি ওজনের (অর্ধ লাখ টাকা মূল্যের) একটি সোনার চেইন উপহার দিয়েছেন ট্রলারের মালিক। ওই মাঝির নাম ইমরান হোসেন।
তিনি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার পদ্মা এলাকার বাসিন্দা এবং “এফবি আল মদিনা” নামে ট্রলারের চালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এফবি আল মদিনা ট্রলারের মালিক পাথরঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পাথরঘাটা মৎস্য আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসাইন।
মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র (বিএফডিসি) ট্রলার চালক ইমরান হোসেনকে সোনার চেইন গলায় পরিয়ে দেন ট্রলারমালিক এনামুল হোসাইন।
জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাগরে ৬৫ দিনের ইলিশ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও কাঙ্ক্ষিত মাছ পাচ্ছিলেন না গভীর সমুদ্রে যাওয়া জেলেরা। এরই মধ্যে গত শনিবার (২১ আগস্ট) রসদ সামগ্রী নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যায় এফবি আল মদিনা। রবিবার রাতে বঙ্গোপসাগরের মৌডুবি বয়া এলাকায় জাল ফেললে একবারেই ১৭০ মণ ইলিশ ধরা পড়ে। ট্রলারের মাছ রাখার জায়গা না হওয়ায় দ্রুত পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে (বিএফডিসি) ঘাটে রওনা দেন তারা।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই মাছ বিক্রি শুরু হয়ে দুপুর ১২টায় শেষ হয়। মাছগুলো ২১ থেকে ৫২ হাজার টাকা মণ হিসেবে কিনে নেন ১৫ জন পাইকার। মোট দাম হয় প্রায় ৫০ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে ট্রলার মাঝি মো. ইমরান হোসেন বলেন, “গত শনিবার পাথরঘাটা থেকে বাজার সদায় নিয়ে গভীর সাগরে মাছ শিকার করতে যাই আমরা। পরে রবিবার রাতে জাল পেতে সোমবার সকালে জাল তুললে প্রচুর পরিমাণে ইলাশ ধরা পড়ে আমাদের জালে। পরে ট্রলারে মাছ রাখার জায়গা না থাকায় দ্রুত আমরা পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে (বিএফডিসি) রওনা দিয়ে সোমবার রাতে ঘাটে পৌঁছাই। পরে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই মাছ বিক্রি শুরু হয়ে দুপুর ১২টায় শেষ হয়। একবারে শিকার করা আমাদের এই মাছ প্রায় ৫০ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়। এতে একসঙ্গে বিপুল পরিমাণ টাকা লাভ হওয়ায় ট্রলার মালিক আমাকে একটি স্বর্ণের চেইন উপহার দেন।”
উপহার পেয়ে ট্রলার মালিককে ধন্যবাদ জানান মাঝি।
এফবি আল মদিনা ট্রলারের মালিক পাথরঘাটা এনামুল হোসাইন বলেন, “বর্তমানে ইলিশের ভরা মৌসুম। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না। গভীর সমুদ্রে লাল জালের ট্রলারে কিছু কিছু মাছ ধরা পরছে। তবে অনেকেই অল্প মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরেছে। তার ট্রলারের জাল প্রায় তিন কিলোমিটার লম্বা এবং ৩০ হাত খাড়া হওয়ায় বেশি পানিতে মাছ শিকার করতে পারে। এ কারণেই বেশি মাছ পেয়েছে।”
এ বিষয়ে জেলা ট্রলার মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, “ভালো কাজের জন্য আমাদের সমাজে উপহার দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। কোনো কাজের জন্য কাউকে উপহার দিলে তিনি সেই কাজ আরও ভালোভাবে করার জন্য উৎসাহিত হন। এরই ধারাবাহিকতায় একসঙ্গে ১৭০ মণ ইলিশ শিকার করায় ট্রলার মাঝি ইমরান হোসেনকে এ উপহার দেওয়া হয়েছে।”