১০২ উপজেলা নির্বাচন ১৯ ফেব্রুয়ারি
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশের ১০২ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করে তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি সচিবালয়ে দুই দফা বৈঠক শেষে রোববার বিকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ এ তফসিল ঘোষণা করেন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ জানুয়ারি, যাচাই বাচাই হবে ২৭ জানুয়ারি। আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ ফেব্রুয়ারি।
এর আগে শনিবার স্থানীয় সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে ইসি এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। এছাড়া মেয়াদ শেষ হওয়ার ভিত্তিতে বাকি উপজেলা নির্বাচনগুলো ক্রমান্বয়ে মার্চ ও এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হবে।
ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আইন অনুযায়ী উপজেলা পরিষদের মেয়াদ ৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে এ নির্বাচন করার বিধান রয়েছে। এ জন্য কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখা হচ্ছে। শপথ গ্রহণের পর প্রথম বৈঠকের দিন থেকে ৫ বছরের মেয়াদ গণনা শুরু হয়। এ কারণে ভিন্ন ভিন্ন সময় এসব উপজেলা নির্বাচনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে। কমিশনের হিসাব অনুযায়ী ফেব্রুয়ারিতে ৪৮ জেলা ১১৩টি, মার্চে ৫৯ জেলার ২২১টি, এপ্রিলে ২৬ জেলার ৩৬টি, মে মাসে ৩৫ জেলার ৮৬টি উপজেলাসহ জুন-জুলাইতেও বেশকিছু উপজেলার মেয়াদ শেষ হবে।
তফসিল অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ এবং ফেব্রুয়ারিতে মেয়াদ শেষ হওয়ায় যে ১০২ উপজেলায় নির্বাচন হতে যাচ্ছে সেগুলো হলো- পঞ্চগড়ের সদর, বোদা, আটোয়ারী দেবীগঞ্জ উপজেলা, দিনাজপুরের কাহারোল, খানসামা উপজেলা, নিলফামারীর ডিমলা, সৈয়দপুর ও জলঢাকা উপজেলা, রংপুরের সদর, গংগাচড়া, তারাগঞ্জ, মিঠাপুকুর, পীরগাছা, পীরগঞ্জ ও কাউনিয়া উপজেলা, কুড়িগ্রামের ভুরুংগমারী, ফুলবাড়ী ও উলিপুর উপজেলা, গাইবন্ধার সাঘাটা ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা, বগুড়ার দুপচাচিয়া, সারিয়াকান্দি, ধুনট নন্দীগ্রাম, শেরপুর ও নওগাঁর রানীনগর, মান্দা ও মহাদেবপুর উপজেলা, রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা, নাটোরের সিংড়া, সিরাজগঞ্জের সদর, কাজীপুর, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া উপজেলা, পাবনার সাথিয়া সুজানগর ও আটঘড়িয়া উপজেলা, মেহেরপুরের সদর উপজেলা, কুষ্টিয়া সদর, ভেড়ামারা উপজেলা, ঝিনাইদহ সদর, কালিগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও শৈলকুপা উপজেলা, যশোরের অভয়নগর উপজেলা, মাগুড়ার শ্রীপুর ও সদর উপজেলা, নড়াইলের কালিয়া, খুলনার দিঘলিয়া ও কয়রা উপজেলা, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা, ভোলার লালমোহন উপজেলা, বরিশালের গৌরনদী ও বাকেরগঞ্জ উপজেলা, জামালপুরের সদর ও সরিষাবাড়ী উপজেলা, নেত্রকোনার দুর্গাপুর ও কেন্দুয়া উপজেলা, কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ, বাজিতপুর ও নিকলী উপজেলা, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর, সিংগাইর, সাটুরিয়া ও শিবালয় উপজেলা, ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা, গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা, নরসিংদীর পলাশ ও বেলাবো উপজেলা, রাজবাড়ীর সদর, বালিয়কান্দি ও পাংশা উপজেলা, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী ও মকসুদপুর উপজেলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ, জজিরা, ডামুড্যা গোসাইরহাট উপজেলা, সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, দোয়রাবাজার ও ছাতক উপজেলা, সিলেটের বিশ্বনাথ, জকিগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, গোয়াইনহাট, জৈয়ন্তাপুর ও মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা, হবিগঞ্জের বাহুবল ও মাধবপুর উপজেলা, চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও মিরশরাই উপজেলা, খাগড়াছড়ি সদর, রামগড়, মাটিরাংগা, মহালছড়ি, পানছড়ি ও মানিকছড়ি উপজেলা।
উল্লেখ্য, ১৯৮২ সালে উপজেলা পদ্ধতির প্রবর্তন হয়। ১৯৮৫ সালে প্রথমবারের মতো এবং ১৯৯০ সালে দ্বিতীয়বার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর উপজেলা পদ্ধতি বাতিল করে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে আবার উপজেলা পদ্ধতি চালু করে। কিন্তু ওই সময় নির্বাচন হয়নি। ১৯ বছর পর ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি তৃতীয় বারের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের পর উপজেলা পরিষদগুলোর প্রথম বৈঠক হয় ওই বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৭ মে’র মধ্যে। আইন অনুসারে প্রথম বৈঠকের দিন থেকে পরবর্তী ৫ বছর হচ্ছে উপজেলা পরিষদের মেয়াদ।