হিলারি-স্যান্ডার্সের তুমুল বিতর্ক
হিলারি-স্যান্ডার্সের তুমুল বিতর্ক
গতকাল হয়ে গেল ডেমোক্রেটিল দলের সবচেয়ে উত্তেজনা মাখা প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক। দুই প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও বার্নি স্যান্ডার্সের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় ও সরাসরি আক্রমণ ছিল সর্বশেষ বিতর্কের আকর্ষণ। হিলারি সামগ্রিকভাবে ভোটাভুটিতে এগিয়ে আছেন। কিন্তু সর্বশেষ ৮টি প্রাইমারি ও ককাসের মধ্যে ৭টিতে জিতে স্যান্ডার্স এখন হিলারির ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছেন। জানান দিয়েছেন, লড়াই এখনও শেষ হয়নি। এতে ক্রমেই পর¯পরের সমালোচনায় সুর চড়া করেছেন উভয়েই।
সিএনএন’র খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার অনুষ্ঠেয় নিউ ইয়র্কের গুরুত্বপূর্ণ প্রাইমারি নির্বাচনের পাঁচদিন আগে এ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হলো। বন্দুক নিয়ন্ত্রণ, ইসরাইল ও ওয়ালস্ট্রিট সংস্কার ইস্যুতে তীব্র বাহাস হয়েছে দু’ জনের মধ্যে। স্যান্ডার্স এক পর্যায়ে ক্লিনটনের ‘জাজমেন্ট’ ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপণ করেন। অপরদিকে হিলারির যুক্তি ছিল, স্যান্ডার্সের অভিজ্ঞতা নেই। নেই বাস্তবধর্মিতাও।
দুই ঘন্টাব্যাপী এ বিতর্কে একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণ দাগিয়েছেন। একাধিকবার হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে বিতর্ক উপস্থাপকদের। উত্তেজনায় ঠাসা বিতর্কে দর্শকরাও চিৎকার-চেঁচামেচি আর বিদ্রƒপ অব্যাহত রেখেছেন। স্যান্ডার্স চেষ্টা করছেন আরও প্রতিদ্বন্দ্বীতার মোড় পালটে দিতে। আর ক্লিনটন চান তার অপ্রত্যাশিত শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী স্যান্ডার্সের পক্ষে যে গণযোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, সেটির লাগাম দ্রুত টেনে ধরতে।
স্যান্ডার্স বলেন আমাদের এখন যে ধরণের প্রেসিডেন্ট প্রয়োজন, তার মধ্যে থাকা যে জাজমেন্ট থাকা দরকার, তা হিলারির মধ্যে নেই। তবে ভারমাউন্টের এ সিনেটর কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যান, যখন হিলারি তাকে তার ট্যাক্স রিটার্ন নিয়ে আক্রমণ করেন। স্যান্ডার্স বলেন শুক্রবার তিনি নিজের ট্যাক্সের বিস্তারিত প্রকাশ করবেন। ক্লিনটন আবারও আক্রমণের মুখে পড়েন বড় ব্যাংকে দেয়া তার পেইড বক্তৃতা নিয়ে। সিএনএন তাকে ওই বক্তৃতাগুলোর ট্রান্সক্রিপ্ট প্রকাশের কথা বললে তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক ডেইলি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে স্যান্ডার্স নিজের প্রধান নীতিগুলো ব্যাখ্যা করতে বেগ পেয়েছেন বলে পাল্টা আক্রমণ করেন ক্লিনটন।
বিতর্ক হয়েছে ইসরাইল ইস্যুতে। বিরল এক অবস্থান নিয়েছেন স্যান্ডার্স। নিজে ইহুদী হলেও, ইসরাইল স¤পর্কে এমন সব মন্তব্য করেছেন, যা সচরাচর মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীরা করেন না। তিনি বলেছেন, গাজায় ইসরাইলের হামলা ছিল অসম ও মাত্রাতিরিক্ত। তার মতে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আনতে হলে ফিলিস্তিনিদেরও সম্মান দেখাতে হবে। এছাড়া তার মন্তব্য, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু সবসময় সঠিক হবেন, তা-ও নয়। কিন্তু হিলারি কট্টর ইসরাইলপন্থী অবস্থান গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, ইসরাইলের অধিকার রয়েছে নিজেকে রক্ষা করার। হামাসই যুদ্ধে উস্কানি দিয়েছে। এমনকি হামাস বেসামরিক নাগরিকদের বেশভ’ষা নিয়ে হামলা চালিয়েছে। তার মতে, ইসরাইল গাজা ছেড়ে যাওয়ার পর, সেটি সন্ত্রাসীদের নিরাপদ স্বর্গ হয়ে উঠেছে।