হিলারি প্রেসিডেন্ট হলে সঙ্কট ঘিরে ধরবে যুক্তরাষ্ট্রকে’
হিলারি প্রেসিডেন্ট হলে সঙ্কট ঘিরে ধরবে যুক্তরাষ্ট্রকে’
হিলারি ক্লিনটনকে দেশের জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দল থেকে প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, হিলারি যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তাহলে সঙ্কট ঘিরে ধরবে যুক্তরাষ্ট্রকে। তিনি যতদিন ক্ষমতায় থাকবেন তার পুরোটা সময় তার ইমেইল তদন্ত ছায়া ফেলবে প্রশাসনে। সোমবার তিনি এসব মন্তব্য করেন বলে খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয় ট্রাম্প সোমবার মিশিগানের গ্রান্ড র্যাপিডসে একটি র্যালি করেন। সেখানে তিনি বলেন, হিলারির ইমেইল নিয়ে তদন্ত কয়েক বছর ধরে চলবে। তারপর হয়তো তার বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই কংগ্রেসকে হিলারির আরও কিছু নতুন ইমেইল পাওয়ার কথা জানায়। বলা হয়, হিলারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে ব্যবহার করেছিলেন প্রাইভেট ইমেইল সার্ভার। এ নিয়ে রিপাবলিকান শিবির, বিশেষ করে ডনাল্ড ট্রাম্পতে ভীষণ খুশি। এফবিআই প্রধানের ওই ঘোষণার পর হিলারি ক্লিনটনের জনপ্রিয়তা বিভিন্ন জরিপে নিম্নমুখী। তবে হিলারি দৃঢ় আস্থাশীল। তিনি বলেছেন, ওই ইমেইলগুলোতে সমস্যা সৃষ্টি করবে এমন কিছুই খুঁজে পাবে না এফবিআই। তার এর আগের অনুসন্ধান শেষে যে রিপোর্ট দিয়েছিল একই রকম রিপোর্ট আসবে এবারও। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর সব মিলে বাকি প্রায় এক সপ্তাহ। এ নির্বাচনে প্রচারণায় হিলারি ও ট্রাম্প দু’জনেই ছিলেন একে অন্যকে চরিত্রগত ও প্রেসিডেন্ট পদে কতটুকু যোগ্য তা নিয়ে আক্রমণে। কিন্তু সেই ধারা এখন পাল্টে গেছে এই এফবিআইকান্ডে। ডনাল্ড ট্রাম্পের ২০০৫ সালের একটি অডিও-ভিডিও প্রকাশ পায় গত ৭ই অক্টোবর। এতে তিনি নারীদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন। বলেন, তিনি একবার বিবাহিত এক নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বেপরোয়াভাবে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এ ছাড়া সুন্দরী মেয়েদের দেখলে তিনি স্থির থাকতে পারেন না। তাদেরকে জড়িয়ে ধরে চুমু খান। আরও আপত্তিকর কথা বলেন। এর পর তার জনপ্রিয়তায় পতন আসে দ্রুতগতিতে। সমানতালে এগিয়ে যান হিলারি। বেশির ভাগ জরিপে তিনি অনেকটা ব্যবধানে এগিয়ে থাকেন। কিন্তু হিলারি এখন নিজের পক্ষ অবলম্বন করছেন। তিনি নিজেকে নিরপরাধী হিসেবেও প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন। তার ওই ইমেইলে কি আছে বা না আছে তা না জেনেই গুজবে মাথা নষ্ট করছেন অনেক মার্কিনি। ফলে হিলারির দিক থেকে মুখ সরিয়ে নেয়ার আশঙ্কা অনেক ভোটারের। তাই এ সময়টাকে মোক্ষম হিসেবে ব্যবহার করছেন ট্রাম্প। তিনি ভোটারদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে, হিলারি যদি নির্বাচিত হন তাহলে দেশে সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টি হবে, যা যুক্তরাষ্ট্র বহন করতে পারে না। কারণ, হিলারির ইমেইল বিতর্ক বছরে পর বছর চলতেই থাকবে। ওদিকে সোমবার ট্রাম্পকে আক্রমণ করে বক্তব্য রেখেছেন হিলারি। পারমাণবিক অস্ত্রের ওপর ট্রাম্পের নিয়ন্ত্রণ সক্ষমতা নিয়ে হিলারি সিনসিনাত্তিতে বলেন, আমি এমন একজনের বিরুদ্ধে নির্বাচনে লড়াই করছি যিনি বলেন, আমরা কেন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করছি না তা তিনি বুঝতে পারেন না। তিনি চান আরও অনেক দেশের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র থাকুক। আমি বিস্মিত। কারণ, একটিমাত্র পারমাণবিক অস্ত্র কত লাখ মানুষকে হত্যা করতে পারে এ বিষয়টি তিনি জানেন কিনা! অন্যদিকে হিলারি ক্লিনটনকে বার বারই ট্রাম্প ‘দুর্নীতিবাজ হিলারি; বলে আখ্যায়িত করে থাকেন। তিনি সোমবার বলেছেন, ইমেইল নিয়ে তদন্ত প্রমাণ করে হিলারি কত দুর্বল মানের একজন রোল মডেল। মিশিগানের ওয়ারেনে তিনি বলেন, আমার ছেলে ও এই দেশের ছেলেমেয়েদের জন্য হিলারি কত ভয়াবহ এক উদাহরণÑ এ বিষয়টি আপনাদের বলতে চাই। তিনি আরও বলেন, হিলারি হলেন সেই নারী, যিনি বার বার আইন ভঙ্গ করেন।