হাসিনা-খালেদা টেলিফোনে যা বলেছিলেন
— স্লামালাইকুম।
জি, এডিসি সাহেব
—শিমুল দা, আপনি তো ফোন দিলেন না।
না, না। আমরা তো অপেক্ষা করছি আপনার জন্য। ছয়টা থেকে ম্যাডাম বসে রয়েছেন।
— না, না আপনাদের তো ফোন করার কথা।
না, এ রকম কোনো কথা তো আপনার সাথে আমার হয়নি। আপনি ছয়টায় ফোন দেবেন। ম্যাডামকে আমি আধ ঘণ্টা ধরে বসিয়ে রেখেছি।
— আমি আপনাকে বলিনি যে আমি ফোন দেব। বিকজ আমরা এক্সপেক্ট করছি আপনারা ফোন দেবেন।
না, আপনি উল্টা কথা বলছেন। এ ধরনের কোনো কথা হয়নি। আমি ম্যাডামকে বলেছি…
—না, আমিও তো বলিনি যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ফোন দেবেন। আমি বলেছি…
আপনি টেলিফোন করে মিলিয়ে দেবেন। এটা আপনার ডিউটি।
—এটা তো আপনারও ডিউটি আছে যে আপনি টেলিফোন করিয়ে মিলিয়ে দেবেন।
ম্যাডাম এখন পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন।
— আমরা অপেক্ষা করছি আপনার কলের জন্য।
ম্যাডাম এখনো বসে আছেন। আপনি দেন, এখনই দেন। ম্যাডামকে দিচ্ছি আমি।— আছেন ওখানে আপনারা?
জি, জি। ম্যাডাম এখনো আছেন।
— আচ্ছা ওয়েইট করেন।
প্রধানমন্ত্রীর এডিসি ও বিরোধীদলীয় নেতার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের মধ্যে এই কথাবার্তার পরে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার মধ্যে কথোপকথন শুরু হয়। প্রথমে দুজনে কুশলবিনিময় করেন।
হাসিনা: আমি ফোন করেছিলাম আপনাকে দুপুরবেলা, পাইনি।
খালেদা: দেখেন, এই কথাটা যে বলছেন, তা সঠিক নয়।
হাসিনা: আমি আপনাকে জানিয়ে দিতে চাই…
খালেদা: আপনাকে প্রথমে আমার কথা শুনতে হবে। আপনি যে বলছেন দুপুরে ফোন করেছিলেন, দুপুরে কোনো ফোন আসেনি।
হাসিনা: আমি রেড ফোনে ফোন দিয়েছিলাম।
খালেদা: রেড ফোন তো দীর্ঘদিন ধরে, বছর ধরে ডেড পড়ে আছে। আপনারা গভর্নমেন্ট চালান, কী খবর রাখেন? গভর্নমেন্ট চালাচ্ছেন, এই খবর রাখেন না যে বিরোধীদলীয় নেতার ফোন ঠিক আছে কি না। আর আপনি যদি ফোন করবেনই, তাহলে গতকালই আপনার লোক এসে ফোন ঠিক করিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। দেখে যাওয়া উচিত ছিল যে বিরোধীদলীয় নেতার ফোন ঠিক আছে কি না।
হাসিনা: রেড ফোন সব সময় ঠিক থাকে।
খালেদা: আপনারা লোক পাঠান। এখনই লোক পাঠান। দেখে যান ফোন ঠিক আছে কি না।
হাসিনা: আপনি তো প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আপনি জানেন, রেড ফোন সব সময় ভালো থাকে।
খালেদা: ভালো থাকে তো, তবে আমারটা ভালো নেই। আমারটা তো ভালো নেই।
হাসিনা: ভালো আছে, আমি যখন ফোন করেছিলাম, সেটা ভালো ছিল।
খালেদা: না, সেদিনও চেক করেছি। আপনারা যদি সত্যি কথা না বলেন, তাহলে চলবে না।
হাসিনা: আমার সত্যি কথা না বলার তো কিছু নেই। আমি কয়েকবার ফোন দিয়েছি।
খালেদা: হঠাত্ করে কি মৃত ফোন জেগে উঠবে? আপনার টেলিফোন এত পাওয়ারফুল যে ডেড ফোন জেগে উঠবে!
হাসিনা: ঠিক আছে, কোনো কারণে আপনি ফোনটা ধরতে পারেন নাই।
খালেদা: না, ধরতে পারি নাই না। আমি এখানে বসা। আমি এর মধ্যেই ঘুরি। ছোট্ট জায়গা, ছোট্ট জায়গার মধ্যেই আমি ঘুরি। ফোন বাজলে আমি না ধরার কোনো কারণ থাকতে পারে না। ডেড ফোন বাজতে পারে না। বুঝছেন? এটাই হলো সত্যি কথা।
হাসিনা: দেখুন, ফোন ডেড ছিল, না ডেড করে রাখা হয়েছে…
খালেদা: ডেড ছিল। বহু কমপ্লেইন আপনাদের কাছে গেছে। কিন্তু আপনারা তো… রেড ফোনে আমার সঙ্গে কথা বলার লোক নেই। কাজেই আমি কার সাথে কথা বলব?
হাসিনা: আমি আগামীকাল দেখব, কেন আপনার ফোন ডেড ছিল।
খালেদা: সেটা দেখবেন ভালো কথা।
হাসিনা: আমি আপনাকে ফোন করলাম। আগামী ২৮ তারিখ সন্ধ্যায় গণভবনে আপনাকে দাওয়াত করছি। আপনি জানেন যে আমি ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করছি আগামী নির্বাচন সম্পর্কে। আপনাকে দাওয়াত দিচ্ছি।
খালেদা: আপনার যদি সত্যিকারের আন্তরিকতা থাকে আলোচনা করার জন্য, আমার যেতে কোনো আপত্তি নেই। আমি একা যাব না। আমার সঙ্গে নিশ্চয়ই আরও কেউ থাকবে।
হাসিনা: আপনি যতজন খুশি নিয়ে আসতে পারেন। সমস্যা নেই।
খালেদা: আমি দলবলসুদ্ধ নিয়ে যেতে চাই না। যাদেরকে প্রয়োজন মনে করব, তাদেরকে নিয়ে যাব। সেটা হতে হবে ২৮ তারিখের পরে। ২৯ তারিখ সন্ধ্যা ছয়টায় আমার হরতাল শেষ হবে।
হাসিনা: আমি অনুরোধ করব জাতির স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে হরতাল প্রত্যাহার করে নেন।
খালেদা: না, আমি ২৮ তারিখ যেতে পারব না।
হাসিনা: মানুষ খুন করা, আগুন মারা এসব বন্ধ করুন।
খালেদা: মানুষ খুন করা আপনাদের কাজ। আমাদের সে সব অভ্যাস নাই। আপনারা মানুষ জ্বালান, মানুষ মারেন, লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ মারেন। এসব রেকর্ডেড। আপনার মুখ দিয়েই শব্দ বেরিয়েছে। কাজেই এসব আপনি অস্বীকার করতে পারবেন না। আমি বলছি, হরতাল চলবে। ২৯ তারিখ সন্ধ্যায় শেষ হবে, এরপর আলোচনা।
হাসিনা: আমি বলছি, দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে দয়া করে এই হরতাল প্রত্যাহার করুন।
খালেদা: না, দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থেই আমি এই হরতাল দিয়েছি। যেহেতু আপনারা কোনো আলোচনায় আসতে রাজি নন। আপনার মন্ত্রীরা বলছেন, কোনো আলোচনা হবে না। আপনি নিজে বলেছেন, আমাদের প্রস্তাব রিজেক্ট করে দিয়েছেন। কোনো আলোচনার দরকার নেই, এটা আপনারা বলছেন। এখন আবার আলোচনার কথা বলছেন। সেই আলোচনা হতে পারে, আমাদের কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর।
হাসিনা: আমি আপনাকে অনুরোধ করছি…
খালেদা: না, সেটা সম্ভব না। উদ্যোগটা যদি একদিন আগে নিতেন, সেটা সম্ভব ছিল।
হাসিনা: এটা একদিন আগের বিষয় না। আপনি জানেন, আমি বিভিন্ন দলের সঙ্গে বসছি…
খালেদা: আমি জানি, আপনি ব্যস্ত মানুষ। আপনার মতো ব্যস্ত না হলেও আমাদেরও ব্যস্ততা আছে। ইচ্ছা করলে উপায় বের করা যায়। কিন্তু আপনারা সেটা করেননি। কালকে যে আমাদের সমাবেশের পারমিশন দিলেন, এত দেরিতে দিলেন কেন? কত দিন আগে পারমিশন চেয়েছি? মাইক পর্যন্ত লাগাতে দেন না। মানুষ এসে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা শুনতে পারে না। এটা কোন দেশের গণতন্ত্রের নমুনা দেখছেন আপনি?
হাসিনা: আমি যে সবার সঙ্গে আলোচনা করব, তা কিন্তু বহুদিন আগেই সবাইকে…
খালেদা: আমরা যে সমাবেশ করলাম, সেখানে মাইকের পারমিশন দেওয়া কেন হলো না?
হাসিনা: না, মাইক তো দেওয়া হয়েছে। কয়েকটা মাইক ছিল।
খালেদা: না, আমরা যতদূর ইচ্ছা মাইক দেব। লোক বেশি, শুনবে। লোক আসবে এ জন্য গাড়ি বন্ধ করে দেন, ১৪৪ ধারা জারি করেন। দেশে কি ইমার্জেন্সি চলছে নাকি? দেশে কি যুদ্ধাবস্থা চলছে যে এমন শুরু করে দিলেন আপনারা?
হাসিনা: আমি এ ব্যাপারে এখন আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাচ্ছি না।
খালেদা: কথা বলতে না চাইলে তো কথাই নেই।
হাসিনা: কথাগুলো সত্য না। আপনারা তো মিটিং করছেন।
খালেদা: আপনারা মিটিং করতে দেবেন মাইক দেবেন না। এমন সময়ে পারমিশন দেবেন, যখন মঞ্চও বানাতে পারব না। আপনারা কি আগে মিটিং করেন নাই?
হাসিনা: সব মনে আছে। একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার কথা মনে আছে…
খালেদা: গ্রেনেড হামলা আমরা করিনি, আপনারাই করেছেন।
হাসিনা: রাত ১১টায় পারমিশন দিয়েছেন, সেটাও মনে আছে। এসব কথা আপনাদের মুখে মানায় না।
খালেদা: মুক্তাঙ্গনে সমাবেশ ছিল। সেখান থেকে যে ভেন্যু পরিবর্তন করে আপনাদের অফিসে নিয়ে গেছেন, সেটা পর্যন্ত আমাদের জানাননি। এসব পুরোনো কথা বাদ দেন। এখন আপনাকে আমি বলছি, যদি সত্যিকারের আলোচনা করতে আন্তরিক হন, তাহলে আমাদের কর্মসূচির পরে…
হাসিনা: আমরা নিশ্চয় ঝগড়া করতে চাই না।
খালেদা জিয়া: আপনি তো ঝগড়া করছেনই।
হাসিনা: একরতফা বলে যাচ্ছেন। আমাকে তো কথা বলারই সুযোগ দিচ্ছেন না।
খালেদা: আমি একতরফা বলব কেন। আপনি কথা বলছেন আমি জবাব দিচ্ছি শুধু।
হাসিনা: আমি তো আপনার সঙ্গে কথা বলারই সুযোগ পাচ্ছি না।
খালেদা: আপনি বারবার বলছেন হরতাল হরতাল। হরতাল এখন প্রত্যাহার হবে না। আমাদের কর্মসূচি শেষ হলে তারপর যদি…আপনি জানেন। আপনি যদি…
হাসিনা: হরতালের নামে মানুষ খুন করা অব্যাহত রাখবেন?
খালেদা: আমি মানুষ খুন করতে চাই না। আপনারা মানুষ খুন করেছেন। কালকেও নয়জন মানুষ আমার খুন করেছেন আপনারা।…আপনার ছাত্রলীগ যুবলীগ করে না।
হাসিনা: না।
খালেদা: আপনার ছাত্রলীগ-যুবলীগের আমরা অস্ত্রসহ ছবি দেখাতে পারব। আপনার ছাত্রলীগ-যুবলীগ কীভাবে খুন করে নিরীহ মানুষকে।
হাসিনা: বললাম তো খুনের রাজনীতি আমরা করি না; বরং আমি দেখি…
খালেদা:…আপনাদের তো পুরানা অভ্যাস। আপনারা সেই স্বাধীনতার পর থেকে ৭১-এ যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখনও এই হত্যা করেছেন। এত মানুষ হত্যা করেছেন। এগুলো ভুলে গেছেন আপনি?
হাসিনা: একাত্তরে আমরা মানুষ হত্যা করেছি?
খালেদা: হ্যাঁ অবশ্যই। একাত্তরের পরে
হাসিনা: যুদ্ধপরাধীদের রক্ষার জন্য …
খালেদা: যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য নয়…। আপনারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যদি ঠিকমতো করতেন তাহলে আমরা পূর্ণ সমর্থন দিতাম। কিন্তু আপনারা সেই ট্রাইব্যুনাল করেননি। না করে, একতরফা করেছেন এবং আপনার দলে যে অনেক যুদ্ধাপরাধী আছে, সেগুলো একটাও ধরেননি। সেগুলোকে একটাও কেন ধরেননি?
আপনি তো প্রধানমন্ত্রী নন। দলের প্রধানমন্ত্রী। আপনি তো দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি। নিরপেক্ষতার ঊর্ধ্বে আপনি যেতে পারেননি। তবে …
না হলে, আমার সঙ্গে এই আচরণ তো আপনারা করতেন না, যা করেছেন আপনারা। আমার সঙ্গে যেই আচরণ করেছেন, সেদিন আমার পার্টি অফিসে আপনারা যে আচরণ করলেন, এরপর আর বলতে হবে? বিরোধীদলীয় নেতাকে আপনারা সম্মান দিতে জানেন না। কিসের গণতন্ত্রের কথা বলেন আপনি।
হাসিনা: আপনার কথার জবাব দিতে গেলে আমাকে তো সেই ২০০১ থেকে অনেক কথা বলতে হবে।
খালেদা: সেটার জবাব আমিও দিতে পারি। আপনি দিবেন আমিও দিতে পারি…
হাসিনা:…এরশাদ বা তার দলের সঙ্গে কী কী করেছিলেন। আর ২০০১ সালে…
খালেদা: একাত্তর সালে আমরা কিছু করিনি। এরশাদের সময় যত করেছেন আপনারা। এরশাদ যখন একটি নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা নিল, তারপর আপনি বললেন আই এম নট আনহ্যাপি। আপনি যখন বিবিসিকে বললেন। …ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন কোন সংবিধানের অধীনে ক্ষমতা নিল…
হাসিনা: ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন আপনার চয়েজ ছিল।
খালেদা: ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন আমার চয়েজ ছিল না। আপনার চয়েজ ছিল। আপনি নিজে বলেছেন আপনার আন্দোলনের ফসল। এগুলো ভুলে যান কেন? মানুষ তো ভুলে না সেগুলো।
হাসিনা: নয়জন অফিসার ডিঙ্গিয়ে মইনুদ্দিনকে আপনি আর্মি চিফ বানিয়েছিলেন।
খালেদা: আপনি এমন অনেক অফিসারকে বাড়ি পাঠিয়েছেন। সেটা নয়জন না সাতজন, সেটা কথা নয়। আপনি অনেককে ডিঙ্গিয়ে বাড়ি পাঠিয়েছেন। মইনুদ্দিন যেই থাকুক না কেন যখন এটা করল, সেখানে আপনারা…সেই ইয়েতে গেলেন কেন আপনি। সেটা সংবিধানসম্মত হয়নি। সংবিধানসম্মত ছিল না। সেটাতে কেন গেলেন আপনি? সেদিন তো আপনি মনে করেননি। আমরা দুই দলই তখন ক্ষমতার বাইরে…
তখন তো একবার মনে করলেন না আমরা আলোচনা করি। ফখরুদিন-মইনুদ্দিনের এখানে যাওয়া ঠিক হবে না। এরা সংবিধানসম্মত নয়। আপনি তো সেটা মনে করলেন না। চলে গেলেন সেখানে হাসিমুখে।
শেখ হাসিনা: …আমি আগুনে বসেও হাসিখুশি থাকি। আবার বাবা, মা, ভাই…
খালেদা: …অতীত ছেড়ে দিয়ে আমি বলতে চাই এখন সামনের দিকে কী করে আগাবেন…আপনার যদি সত্যি সত্ উদ্দেশ্য থাকে তাহলে আমরা সামনের দিকে কী করে এগুবো…সামনের দিকে এগুতে চাই।
হাসিনা: আপনি তো অনেক অভিযোগ করলেন। আমি তো এত অভিযোগ করতে চাই না। ছোট্ট রাসেল…, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছেন।
খালেদা: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা আপনারা করিয়েছেন। আপনাকে হত্যা করতে কেউ চায়নি।…আপনি যত থাকবেন, তত আমাদের জন্য ভালো।…
হাসিনা: ১৫ আগস্ট আপনি যখন কেক কাটেন…
খালেদা: ১৫ আগস্ট আমার জন্মদিন। আমি কেক কাটবই।
হাসিনা: খুনিদের উত্সাহিত করার জন্য যখন আপনি কেক কাটেন।…
খালেদা:…এটা বলেন না। ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে কোনো মানুষের জন্ম হবে না? কোনো মানুষ পালন করবে না। এগুলো বাদ দেন। কথায় কথায় আপনরা বলেন। অনেক কথা বলেন জিয়াউর রহমানকে। আরে জিয়াউর রহমান তো আপনাদের নতুন জীবন দান করেছে। এগুলো কথা বইলেন না। বুঝেছেন। আপনারা তো বাকশাল ছিলেন।… আপনারা জিয়াউর রহমানের বদলৌতে আওয়ামী লীগ হতে পেরেছেন। আদার ওয়াইজ আওয়ামী লীগ হতে পারতেন না।
হাসিনা:.. রাসেলকে তো এই বাসায় ঘুরতেও দেখেছেন।…
খালেদা: নতুন করে শুরু করি। সেটাতে আপনি রাজি থাকেন, আসেন আমরা সুন্দর আলোচনা করি। আমার আলোচনা করতে আপত্তি নাই। কিন্তু সেই ডেট হতে হবে আমার হরতাল শেষ হওয়ার পর।
হাসিনা: আপনার হরতাল প্রত্যাহার করবেন না?
খালেদা: না, আমি হরতাল প্রত্যাহার করতে পারব না। এটা তো আমার ডিসিশন না। এটা ১৮ দলের ডিসিশন। আমি এটা কী করে একলা করব।
হাসিনা: আপনি ১৮ দলকে ডেকে নিয়ে বলেন…
খালেদা: এখন সময় নাই। আপনি যে তাড়া করতেছেন। এখন তো খুঁজে পাওয়া যাবে না লোকজনকে। আপনি তো সবার পেছনে পুলিশ লাগিয়ে রেখেছেন। কী করে মানুষ পাওয়া যাবে, বলেন?
হাসিনা: আমরা পুলিশ লাগিয়ে রাখব কেন?
খালেদা: আপনি লাগিয়ে রাখবেন না তো কে রাখবে? পুলিশ…কার কথায়… কি আমার কথায় চলে? আপনি তো সবার বাসায় বাসায় রেড করছেন। বস্তি থেকে পর্যন্ত আপনি লোক ধরে নিয়ে যাচ্ছেন।
হাসিনা: যেখানে বোমা ব্লাস্ট হয়ে যাবে…
খালেদা: বোমা ব্লাস্ট হয়ে যাবে। বোমা ব্লাস্ট তো আপনারা করেন আর নাম দেন আমাদের। এগুলো তো আপনাদের পুরাতন ঐতিহ্য।
আমি বলতে চাই, যদি আপনারা ২৯ তারিখের পরে করেন আমি রাজি আছি। আমি নিশ্চয় কথা বলতে রাজি আছি।
হাসিনা: আপনি আলটিমেটাম দিলেন দুই দিনের। এখন আমি দুই দিনের মধ্যেই ফোন করলাম। অথচ এখন হরতাল ও করবেন আবার বলছেন ২৯ তারিখের পরে। আপনি কী বক্তৃতা দিলেন আর আজকে এখন কী বলছেন, আপনি একটু ভেবে দেখেন।
খালেদা: আমি বলেছি আলোচনা চলুক, কর্মসূচিও চলবে।
হাসিনা: আপনি নিজেই বলছেন দুই দিনের মধ্যে আলোচনা…হরতাল দিবেন না।…শুনেন আমার কথা…আমার এখানে ক্যামেরা নাই…
খালেদা: আমার এখানে ক্যামেরা টেমেরা নাই। আমি নিজেই কথা বলছি। আমি বাসায় বসে কথা বলছি। অফিসে হলে আমার জন্য সুবিধা হতো। ক্যামেরা টেমেরা থাকত। টেলিভিশনে দেখব আপনারাই ক্যামেরা দেখাচ্ছেন।…যে বলেছে…টেলিভিশনে স্ক্রল দিয়েছে যে ওনার রেড টেলিফোন ঠিক আছে। আমি এটা দেখতে চাই।
হাসিনা: আাামি খবর নিলাম। ফোন ঠিক আছে। ১০-১২ বার ফোন করেছি।
খালেদা: ফোন ঠিক নাই। তাহলে বলতে চান আমরা কেউ ফোনে শুনছি না। ফোন বাজে আমরা কেউ শুনি না।
হাসিনা: আমি কানে শুনব কি করে। গ্রেনেড হামলায় তো আমার এক কান এমনিতেই নষ্ট। …ফোন আমি নিজে করেছি।
খালেদা: আপনি নিজে করলে কী হবে। আপনি একটা ডেড ফোনকে… আপনি বলেছেন আপনি ফোন করেছেন।
হাসিনা: ফোন রিং হচ্ছিল
খালেদা: রিং হবে কী করে। যে ফোন ডেড, সেটা রিং হবে কী করে। এটাই তো মন-মানসিকতার পরিচয়। আপনি কি সত্যি কথা বলছেন কি না।
হাসিনা: আমি সত্যি কথা বলছি। মিথ্যা বলার কিছু নেই…
খালেদা: আমি কাল পর্যন্ত চেক করেছি। আপনি করতে পারেন।…ফোন চেক করে রিপোর্ট করেছি। আপনারা…লোকজন…কেউ আসেন। তারা তো আমাদের মানুষ বলে মনে করে না। কাজেই আসেও না, টেলিফোন ঠিক করা গরজও বোধ করে না। রেড টেলিফোন কেন? আজকাল তো মোবাইল ফোন আছে, টিঅ্যান্ডটি
f