হাত ভেঙে দেব: ড. ইউনূস
ডেস্ক: নোবেলজয়ী ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নারীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আপনাদের ব্যাংক রক্ষায় আপনাদেরই সোচ্চার হতে হবে। আপনাদের চেঁচিয়ে বলতে হবে, “খবরদার! গ্রামীণ ব্যাংকে হাত দেবেন না। যে হাত দেবেন, তাঁর হাত ভেঙে দেব।” তিনি নারীদের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘আমি দেখতে চাই, আপনাদের গলায় জোর বেশি, নাকি একজনের গলার জোর বেশি।’ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম শহরের লেডিস ক্লাবে এক নারী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ কথা বলেন।
ড. ইউনূস নারীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ চাই। সব দল অংশগ্রহণ না করলে সেই নির্বাচন আমরা মানব না। নোবেলজয়ী ইউনূস সুহৃদ-চট্টগ্রাম নামের একটি সংগঠন ‘শিক্ষা, শিল্প-সাহিত্য ও সমাজকর্মে উদ্যোগী নারী সমাবেশ’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস উপস্থিত নারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের বলতে হবে। আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ চাই। সব দল অংশগ্রহণ না করলে সেই নির্বাচন আমরা মানব না।’ মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, দেশের অবস্থা খারাপ। সবাই আতঙ্কিত। ঘর থেকে বের হতে পারবে কি না, নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তিত সবাই। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘স্বাধীন দেশে এত অনিশ্চয়তা, আতঙ্ক কেন ?’
সরকারকে উদ্দেশ করে ইউনূস বলেন, ‘আমরা কোনো দুর্যোগের মধ্যে পড়তে চাই না। এখনো সময় আছে, অশান্তির দরজা যেন আর না খোলে।’
গ্রামীণ ব্যাংকের ওপর সরকারি হস্তক্ষেপের সমালোচনা করে ড. ইউনূস বলেন, ‘তিলে তিলে মহিলারা গ্রামীণ ব্যাংকের মালিকানা পেয়েছে। তাদের জীবন পরিবর্তন করেছে। শুধু তা-ই নয়, গ্রামীণ ব্যাংক দেশকে নোবেল পুরস্কার এনে দিয়েছে।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘সরকার বলছে আমি নাকি রক্তচোষা, সুদখোর, ঘুষখোর। আমি তো গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক নই, তাহলে আমি কীভাবে সুদখোর হলাম? ইচ্ছে করলে তো আমি গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক হতে পারতাম।’ তিনি বলেন, ‘সরকার কখনো বলে, গ্রামীণ ব্যাংকে নাকি সুদের হার বেশি। সরকার নির্ধারিত সুদের হার ২৭ শতাংশ আর গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের হার ২০ শতাংশ। আর এখন বলছে আমি নাকি কর ফাঁকি দিয়েছি।’
২০১৫ সালের আগে (চলতি বছরে) দারিদ্র্য অর্ধেকে নেমে এসেছে উল্লেখ করে ইউনূস বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের দেশে দারিদ্র্য শূন্যে নামিয়ে আনব।’
নারী উদ্যোক্তা ও চিটাগং উইম্যান চেম্বারের সভাপতি কামরুন মালেকের সভাপতিত্বে নারী সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মু. সিকান্দার খান, স্থপতি জেরিনহোসাইন, আনোয়ারা আলম, ডিজাইনার আইভি হাসান, লেখিকা রুনু সিদ্দিকী প্রমুখ।