ঢাকা: নির্বাচন বর্জনে বিরোধীজোটের ডাকা হরতাল ও অবরোধের মধ্যেই সারাদেশে একযোগে শুরু হয়েছে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সকাল ৮টায় শুরু হওয়া এ ভোটগ্রহণ বিরতিহীনভাবে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
সারাদেশে ৫৯ জেলায় ১৪৭টি আসনে ভোটগ্রহণের কথা থাকলেও, বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের হামলায় নির্বাচনী সরঞ্জাম নষ্ট হওয়ায়, শনিবার রাত ১১টার দিকে কুমিল্লা উপজেলার সরসপুর ইউনিয়নের বাতাবাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, বড় চাঁদপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাউপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাইশগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৪ কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে ইসি।
এদিকে, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও সাদুল্লাপুর উপজেলার ৩১টি ভোটকেন্দ্র, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, নীলফামারী, দিনাজপুর, লক্ষীপুর, হবিগঞ্জ, যশোরের মোট ১৪টি এবং লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসনের একটিসহ ৪৬টি কেন্দ্রের ব্যালট পেপার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ায় এসব কেন্দ্রে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার থেকে সারাদেশে ১৪৭ আসনে ভোটের জন্য প্রস্তুত ১৮ হাজার ২০৮ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৮৮টি কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ভোটকেন্দ্রের হিসেবে এ কৌশলে তাদের নাশকতার সফলতা কিছুতেই দশমিক ৪৯ শতাংশের বেশি নয়।
উল্লেখ্য, গত ২৫ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী, ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয় ৫ ও ৬ ডিসেম্বর।
এছাড়া প্রত্যাহারের শেষ দিন ধার্য করা হয় ১৩ ডিসেম্বর। তফসিল অনুযায়ী এবারের নির্বাচনে ১,১০৭ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। যাচাই-বাছাই শেষে স্থানীয় রিটার্নিং কর্মকর্তারা ২০৩ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিনে ৩০৪ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। ফলে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩ জন প্রার্থী জয়ী হন।
ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট হচ্ছে কিনা, তা পর্যবেক্ষণের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন কমিশনে কন্ট্রোলরুম তৈরি করা হয়েছে। এ কন্ট্রোলরুম থেকে সারাদেশে ভোট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং তাৎক্ষণিকভাবে নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানে তদারকির জন্য ২৯৪ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ২২টি নিবন্ধিত দেশিয় সংস্থার প্রতিনিধিরা এবারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন বলে জানা গেছে। পাশাপাশি খাগড়াছড়ি জেলায় চারটি, বান্দরবান জেলায় ১৩টি এবং রাঙামাটি জেলায় ১৬টি ভোটকেন্দ্রে হেলিকপ্টারের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।