স্বৈরাচারের আমলেও এত অনিশ্চিত জীবন ছিলো না

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, আমরা প্রায়ই স্বৈরাচারের কথা বলি। কিন্তু স্বৈরাচারের আমলেও মানুষের জীবন আজকের মতো এরকম অনিশ্চিত ছিলো না। শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় নজরুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদের ২৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনার আয়োজন করে শহীদ জেহাদ স্মৃতি পরিষদ।
সারাদেশে নেতা-কর্মীদের ধড়পাকড় ও মিথ্যা মামলা নিয়ে হয়রানির সমালোচনা করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, এখন এমন কোনো ইউনিয়ন নেই যেখানে বিএনপি নেতা-কর্মীরা গ্রেফতার হয়নি। এমন কোনো গ্রাম নেই যেখানে কোনো না কোনো মানুষ ও বিরোধী দল করার কারণে মিথ্যা মামলার আসামী হয়ে পলাতক জীবন যাপন করছেন না। এটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ হতে পারে না।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে বসে বাংলাদেশে দুই বিদেশী নাগরিক হত্যার ষড়যন্ত্র করেছেন বলে সরকার প্রধানসহ মন্ত্রীরা যে অভিযোগ করেছেন তা প্রত্যাখান করেছেন নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, লন্ডনে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে। আজকের যুগে আমরা জানার আগে সরকার জানে তার কবে চোখের অপারেশন হয়েছে, আরেকটা কবে হবে। কখন পায়ের জন্য তাকে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়েছিলো- সবই জানে। এসব জানার পরও তারা (সরকার) বাজে কথা বলছে, অপপ্রচার করছে। সরকারের উদ্দ্শ্যে একটাই- যেকোনো প্রকারে বিএনপিকে হেয় করার চেষ্টা ।
তিনি বলেন- কথায় কথায় জঙ্গিবাদ, কথায় কথায় প্রতিপক্ষকে জঙ্গি বা জঙ্গির সমর্থক বা উস্কানিদাতা হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করতে করতে বাংলাদেশকে বিশ্বের সামনে প্রশ্নবোধক করে রাখা হয়েছে। ফলে দেশের ভাবর্মূতি নষ্ট হচ্ছে।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা অবিশ্বাস্য ও হাস্যকর সব কথা বলেন। খালেদা জিয়া গোপনে দেশ ত্যাগ করেননি। সাংবাদিকদের মাধ্যমে সারাদেশ জানে তিনি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গেছেন। ঈদের সময় তিনি পুত্র-পুত্রবধু-নাতনিসহ তার পরিবারের সঙ্গে ঈদ করেছেন। এখন চিকিৎসার জন্য তিনি সেখানে আছেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিদেশ থেকে ফিরে এসে কোনো খবর না নিয়েই প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশী হত্যার সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত জড়িত। ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা রিপোর্ট করেছে, এর সঙ্গে জামায়াত জড়িত থাকতে পারে। এখন প্রধানমন্ত্রী বলা যায় না, তার মতামত বদলাতেও পারেন। তারপরও হয়ত বিএনপির কথা বলতেই থাকবে।
দুই বিদেশী হত্যার প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আজ কেউ নিরাপদ নয়। মায়ের পেটের শিশুরাও নয়। যে বিদেশীদের আমাদের দেশে মেহমান, যাদের সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন, যারা উন্নয়ন প্রক্রিয়া অংশ নিতে আমাদের দেশে আসে, তাদেরও নিরাপত্তা আমরা বিধান করতে পারছি না। এটা জাতি হিসেবে লজ্জার। এটা দেশ হিসেবে আমাদের ক্ষতির কারণ।
আন্দোলন করতে গিয়ে ১৯৯০ সালের ১০ অক্টোবর স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ছাত্রদল নেতা জেহাদ। তারপর থেকে এ দিনটিকে বিএনপি জেহাদ দিবস হিসাবে পালন করে আসছে। শনিবার সকালে দৈনিক বাংলা মোড়ে জেহাদ স্কোয়ারে বিএনপিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃনন্দ পুস্পমাল্য অর্পন করে জেহাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।