স্ট্রোক যেভাবে বুঝবেন

একটি সত্য ঘটনা : এক অনুষ্ঠানে গিয়ে একজন ভদ্রমহিলা হঠাৎ হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলেন। উঠে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, সবকিছু ঠিক আছে, মেঝের টাইলসে তার নতুন জুতোর হিল বেঁধে যাওয়ায় তিনি পড়ে গিয়েছিলেন। কেউ একজন এম্বুলেন্স ডাকার কথা বললেও তিনি তাতে রাজি হলেন না। সবকিছু ঠিকঠাক করে, পরিষ্কার করে তিনি নতুন করে প্লেটে খাবার নিলেন। যদিও মনে হচ্ছিল যেন তিনি একটু কেঁপে কেঁপে উঠছেন। অনুষ্ঠানের সম্পূর্ণ সময় জুড়েই তিনি উপস্থিত থাকলেন। পরদিন দুপুরে ভদ্রমহিলাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সন্ধ্যা ছয়টার সময় তিনি মারা যায়।
মূল যে ঘটনা ঘটেছিল, তা হলো, তিনি অনুষ্ঠান চলাকালে স্ট্রোক করেছিলেন।
সেখানকার কেউ যদি জানতেন, কীভাবে স্ট্রোক সনাক্ত করা সম্ভব, তাহলে হয়তো ভদ্রমহিলা বেঁচে থাকতেন। সবাই যে মারা যায়, তা নয়। অনেকের ঠাঁই হয় বিছানায়, সাহায্যহীন, ভরসাহীন মুমূর্ষু অবস্থায়।
একজন মস্তিষ্ক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, যদি একজন স্ট্রোকের শিকার রোগীকে স্ট্রোক হওয়ার তিন ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে নেওয়া যায়, তবে তাকে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ অবস্থায় ফেরত পাওয়া সম্ভব। শুধু আমাদের জানতে হবে কীভাবে স্ট্রোক চেনা যায় এবং কীভাবে রোগীকে উল্লেখ্য সময়ের মধ্যে দেওয়া যায় চিকিৎসা সেবা।
স্ট্রোককে চিনুন
সহজ তিনটি ধাপ :- S T ও R…পড়ুন এবং জানুন! S– Smile রোগীকে হাসতে বলুন। T– Talk রোগীকে আপনার সাথে সাথে একটি বাক্য বলতে বলুন। উদাহরণ : আজকের দিনটা অনেক সুন্দর। R– Raise hands. রোগীকে একসাথে দুই হাত উপরে তুলতে বলুন। যদি এর কোনো একটিতে রোগীর সমস্যা বা কষ্ট হয়, তৎক্ষণাৎ দেরি না করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং চিকিৎসককে সমস্যাটি খুলে বলুন।
সনাক্তকরণের আরেকটি উপায় হচ্ছে, রোগীকে বলুন তার জিহ্বা বের করতে। যদি তা ভাঁজ হয়ে থাকে, বা অথবা যদি তা বেঁকে যেকোনো একদিকে চলে যায়, সেটাও স্ট্রোকের লক্ষণ।
তৎক্ষণাৎ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি আমরা সবাই এই সহজ ব্যাপারগুলো জেনে রাখি, তবে আমরা একজনের হলেও জীবন বাঁচাতে পারবো।