সোনিয়ার লেখা চিরকুট : আমার মৃত্যুর জন্য লিটন দায়ি
প্রেমানন্দ ঘরামী, বরিশাল ॥ দীর্ঘ আড়াই বছর পর অবশেষে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার সুজনকাঠী গ্রামের যৌন নিপিড়ক ও স্কুল ছাত্রী সোনিয়ার আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী বখাটে লিটন হাওলাদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
থানার এস.আই মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, যৌণ নিপিড়নের অহস্য জ্বালা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার আগে স্কুল ছাত্রী সোনিয়া আক্তারের লেখা চিরকুটে উল্লেখ করা হয়েছিলো-“আমার মৃত্যুর জন্য লিটন দায়ি”। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর বখাটে লিটন দীর্ঘদিন পলাতক ছিলো। অবশেষে থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাতে সুজনকাঠি গ্রামের মোফাজ্জেল হাওলাদারের পুত্র বখাটে লিটন হাওলাদারকে নিজবাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে। তাকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরন করা হয়।
সূত্রমতে, আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরের শ্রীমতি মাতৃমঙ্গল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে সুজনকাঠী গ্রামের দিনমজুর শাহ আলম হাওলাদারের কন্যা সোনিয়া আক্তার ২০১১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে। স্কুলে আসা যাওয়ার পথে প্রতিবেশী প্রভাবশালী মোফাজ্জেল হাওলাদারের পুত্র লিটন হাওলাদার সোনিয়াকে বিভিন্ন ধরনের যৌণ হয়রানী করে আসছিলো। ওই বছরের ২৩ মার্চ বিষয়টি সোনিয়া তার পরিবারকে জানালে তারা যৌণ নিপিড়নের ঘটনায় লিটনকে শ্বাসাতে যায়। এসময় লিটনের সাথে তাদের বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে বখাটে লিটন দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে সোনিয়ার বোনকে কুপিয়ে জখম করে। বিষয়টি লিটনের বোনজামাতা আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খানের কাছে বিচার দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লিটন ২৪ মার্চ সকালে সোনিয়াদের বাড়িতে গিয়ে পরিবার সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। এ ঘটনায় লোকলজ্জায় সোনিয়া ওইদিন (২৪ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে পরিবারের সবার অজান্তে বাড়ির পাশ্ববর্তী পুকুর পাড়ে গিয়ে বিষপান করে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে ওইদিন রাতে আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ সোনিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে প্রেরন করেন। পুলিশ সোনিয়ার বাড়ি থেকে বিষপানের পূর্বে সোনিয়ার হাতের লেখা একটি চিরকুট উদ্ধার করে। ওই চিরকুটে লেখা ছিলো “আমার মৃত্যুর জন্য লিটন দায়ি”। এ ঘটনায় পুলিশ আত্মহত্যা প্ররোচনা হিসেবে থানায় একটি মামলা রেকর্ড করেন। ওই মামলার দীর্ঘদিন থেকে লিটন পলাতক ছিলো।