সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে ঢাকায় সম্মিলিত ইসলামী দলসমূহের প্রতিবাদ মিছিল।
সুইডেনে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। সুইডিস সরকারের পক্ষ থেকে নিঃশর্ত ক্ষমার দাবি তোলা হয় মিছিল থেকে। অন্যথায় কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের দাবি জানানো হয় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি।৪৬টি ইসলামী দলের সমন্বয়ে গঠিত ‘সম্মিলিত ইসলামী দলসমূহ’র উদ্যোগে আজ শুক্রবার বাদ জুমা রাজধানীতে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।বিক্ষোভ মিছিলটি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেট থেকে শুরু হয়ে পল্টন, বিজয়নগর, কাকরাইল হয়ে কালভার্ট রোডে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে সভাপতিত্ব করেন মাজলিসে সাদরাতের সদস্য আল্লামা আবু তাহের জিহাদী। আরো উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আব্দুল হামিদ পীরসাহেব মধুপুর, ইসলামী কানুন বাস্তবায়ন পরিষদের মহাসচিব মাওলানা মুফতি ফয়জুল্লাহ আশরাফী, সম্মিলিত ইসলামী দলসমূহের সমন্বয়ক মুফতি ড. খলিলুর রহমান মাদানী, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, আহকামে শরিয়া হেফাজত কমিটির সহ-সভাপতি ড. মুফতি আবুল ইউছুফ খান, মাওলানা আজীজুর রহমান আজীজ, খেলাফতে রব্বানির মহাসচিব মাওলানা লুৎফর রহমান, ছারছিনার পীর শাহ আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী, অধ্যক্ষ মাওলানা মোশাররফ হোসাইন, কওমী মুভমেন্টের মহাসচিব মাওলানা হাফেজ শফিকুল ইসলাম নরসিংদী, মাওলানা ড. আব্দুল মান্নান, মাওলানা আব্দুস সবুর মাতুব্বর প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
তিনি আরো বলেন, ‘মুসলিম বিশ্বকে সুইডেনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে অবরোধ আরোপ করতে আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারকে সুইডেনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নসহ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। শুধু ইসলাম ধর্ম নয় যেকোনো ধর্মের প্রতি অবমাননাকর কোনো বক্তব্য অথবা কোনো ধরনের ধর্মীয় কিতাবকে যেকেউ অবমাননা করলে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান নিশ্চিত করতে হবে।’
সমাবেশে আলেম-ওলামা নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ২৮ জুন সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে পবিত্র কোরআন পোড়ানো হয়। এ ঘটনা বাংলাদেশসহ বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের হৃদয়ে আঘাত হেনেছে। কোরআনের অবমাননা যারা করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আমরা দাবি করি। আমরা মনে করি সুইডেনে কোরআন পোড়ানো হয়নি, বিশ্বের মুসলমানদের হৃদয় পোড়ানো হয়েছে। এই ঘটনায় গোটা বিশ্বের মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা এটা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছি না। কোরআনের অবমাননা কোনো মুসলমানদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব না। তাই আমরা এর প্রতিবাদে রাজপথে নেমে এসেছি।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সুইডেনে এর আগেও এমন নিন্দনীয় অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। আমরা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে পবিত্র কোরআনে আগুন দেয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। একইসাথে এই অপরাধে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের অপরাধে বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের কাছে সুইডেনকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ, ফলে বাংলাদেশের সরকারের প্রতি আজকের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে আহ্বান জানাই, অবিলম্বে জাতীয় সংসদে বিল উত্থাপন করে রাষ্ট্রীয়ভাবে সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে হবে এবং সুইডেন নিঃশর্ত ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত তাদের সাথে সকল প্রকার কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের এটা নৈতিক দায়িত্ব।
সমাবেশের শেষে মোনাজাত পরিচালনা করেন ড. আবু ইউসুফ খান।বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অংশগ্রহণকারী সম্মিলিত ইসলামী দলসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- খেলাফত আন্দোলন, ইসলামী কানুন বাস্তবায়ন পরিষদ, সম্মিলিত উলামা মাশায়েখ পরিষদ, জাতীয় ইমাম সমিতি, জাতীয় খতিব পরিষদ, আইম্মা পরিষদ, খেলাফতে রাব্বানী, নাস্তিক মুরতাদ প্রতিরোধ কমিটি, ইসলামী জনতা বাংলাদেশ, ইসলামী সংগ্রাম পরিষদ, আহকামে শরিয়াহ হেফাজত কমিটি, জাতীয় সিরাত সা: কমিটি, কুরআন- সুন্নাহ পরিষদ, বাংলাদেশ কুরআন গবেষণা কেন্দ্র, খতমে নবুওয়াত বাংলাদেশ, তালিমুল কুরআন সংস্থা, উলামায়ে দেওবন্দ পরিষদ, প্রগতিশীল ইসলামিক পার্টি, বাংলাদেশ ভাসানী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ইমাম সমিতি। প্রেস বিজ্ঞপ্তি