সালাহ উদ্দিন ভারতে
সব ধরনের সংশয় কাটিয়ে নিখোঁজের ৬২ দিন পর শিলংয়ে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার বেলা এগারোটা থেকে বারোটার মধ্যে নিখোঁজ স্বামীর সঙ্গে কথা বলেন স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। পরে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি। হাসিনা আহমেদ বলেন, বর্তমানে সালাহ উদ্দিন আহমেদ ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে ‘মেঘালয় ইন্সটিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরোসায়েন্স (মিমহান্স) হসপিটালে’ ভর্তি আছেন। সালাহ উদ্দিনের বরাত দিয়ে হাসিনা জানান, সেখানে চোখ বেঁধে কেউ তাকে ফেলে রেখে গেছে। আল্লাহর রহমতে তিনি বেঁচে আছেন। তিনি সুস্থ আছেন। তাকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। সালাহ উদ্দিনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন হাসিনা আহমেদ। শিলং টাইমসের এক খবরে বলা হয়, সোমবার সকালে শিলংয়ের গলফ লিংক এলাকা থেকে সালাহ উদ্দিন আহমেদ (৫৪) নামে এক বাংলাদেশীকে গ্রেফতার করে স্থানীয় পুলিশ। বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছেন।
এদিকে শিলংয়ের স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে বলেন, মেঘালয়ের গলফ গ্রিন এলাকায় অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় ঘোরাফেরা করতে দেখে সালাহ উদ্দিন নামের একজনকে রাস্তা থেকে আটক করে পুলিশ। এরপর পুলিশ তাকে স্থানীয় একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসার পর তিনি কিছুটা সুস্থবোধ করলে নিজের পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশে পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে এগারোটার কিছু আগে-পরে সালাহ উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। তারা বলেন, সালাহ উদ্দিন তাদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের টেলিফোনেই হাসিনা আহমেদ কথা বলে নিশ্চিত হন তার স্বামী সালাহ উদ্দিন আহমেদ জীবিত আছেন। ৬২ দিন আগে নিখোঁজ হওয়ার পর গতকালই প্রথম সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলেন তার স্ত্রী। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী গণমাধ্যমকে জানান, ‘সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলার পর থেকে শান্ত বোধ করছি। বারবার তাকে ফেরত পেতে আল্লাহকে ডেকেছি। আল্লাহ আমার ডাক কবুল করেছে।’
স্থানীয় অধিবাসী হেনরীলাসীন সালাহ উদ্দিনের প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, সালাহ উদ্দিন চিকিৎসকদের জানিয়েছেন, তার হার্টের সমস্যা আছে। এরপর মানসিক হাসপাতাল থেকে তাকে (সালাহ উদ্দিন) সিভিল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে মামলার প্রস্তুতি নেয়া
হচ্ছে বলে পুলিশের বরাদ দিয়ে হেনরী জানান। এদিকে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দুই মাস আগে তাকে উত্তরা থেকে অপহরণ করা হয়েছিল। অপহরণের পর থেকে আর কিছু মনে করতে পারছেন না বলে তিনি দাবি করেন।
পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক বলেছেন, সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান মেলায় বিএনপির এই নেতাকে আইনশৃংখলা বাহিনী যে তাকে অপহরণ করেনি দেশবাসী সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন। নিখোঁজ হওয়ার আগে থেকেই পুলিশ বিএনপির ওই নেতাকে খুঁজছিল জানিয়ে আইজিপি বলেন, নাশকতার কয়েকটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি আছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তিনি কিভাবে ভারতে গেলেন সে বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।
‘সালাহ উদ্দিন আহমেদকে র্যাবই গুম করেছে’ বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া র্যাব কাউকেই গ্রেফতার করে না। র্যাব যাদের গ্রেফতার করে তাদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে নিকটস্থ থানায় জমা দেয়া হয়। বিএনপির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে যে অভিযোগ করা হয়েছিল তা যে ভিত্তিহীন এ ঘটনার মধ্য দিয়ে তা প্রমাণিত হল।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অবরোধ কর্মসূচির সময় অজ্ঞাতস্থান থেকে দলের পক্ষে বিবৃতি দেয়ার একপর্যায়ে সালাহ উদ্দিন আহমেদ নিখোঁজ হন। উত্তরার একটি বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে গেছে বলে তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ অভিযোগ করেন। ১০ মার্চ গভীর রাতে নিখোঁজের পরদিন থানা, গোয়েন্দা পুলিশ ও র্যাবের কাছে ছুটে যান হাসিনা আহমেদ। কিন্তু আইনশৃংখলা বাহিনীর কোনো সংস্থাই সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আটকের বিষয়টি স্বীকার করেনি। স্বামীর সন্ধান না পেয়ে তিনি প্রথমে উত্তরা ও পরে গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে যান। কিন্তু পুলিশ তাকে ফিরিয়ে দেয়। এ অবস্থায় ১২ মার্চ সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আদালতে হাজিরের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন হাসিনা আহমেদ। এ পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ মার্চ সালাহ উদ্দিন আহমেদকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে একটি রুল জারি করেন আদালত। ওই রুলের পর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে একজন যুগ্ম কমিশনারের নেতৃত্বে ‘সার্চ কমিটি’ গঠন করা হয়। পরবর্তী ধার্য তারিখে ওই কমিটি আদালতে রিপোর্ট দাখিল করে জানায়, আইনশৃংখলা বাহিনীর কোনো সংস্থা বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিনকে আটক করেনি।
নিখোঁজের ৬২ দিন পর ভারতের মেঘালয়ে সালাহ উদ্দিনের সন্ধান পাওয়ার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তার গুম নিয়ে সৃষ্টি হওয়া নানা আলোচনা-সমালোচনারও অবসান হল। স্বস্তি ফিরে এসেছে সালাহ উদ্দিনের পরিবারসহ বিএনপির সব স্তরের নেতাকর্মীদের মাঝে। স্বস্তি ফিরে আসে সাধারণ মানুষের মধ্যেও। পরিবারের সদস্যসহ বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এখন অধীর আগ্রহে প্রহর গুনছেন সশরীরে সালাহ উদ্দিন আহমেদের দেখা পেতে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আজ ভারতের মেঘালয়ে সালাহ উদ্দিনের উদ্দেশ্য রওনা হবেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ ও তার দু’জন নিকট আত্মীয়। আজ সকালে ভারতের ভিসার জন্য হাইকমিশনে হাসিনা আহমেদসহ সংশ্লিষ্টদের পাসপোর্ট জমা দেয়া হবে। ভিসা পাওয়ার পরপরই তিনি সিলংয়ের উদ্দেশে রওয়ানা দিবেন বলে জানা গেছে। বিনএপি নেতা সালাহ উদ্দিনকে ভারতের শিলংয়ে পাওয়া গেলেও তার পাসর্পোটটি গুলশানের বাসাতেই আছে বলে জানিয়েছেন তার এক আত্মীয়।
এদিকে সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলার পরপরই হাসিনা আহমেদ ছুটে যান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসায়। সেখানে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা অবস্থান করে তিনি বাসায় ফিরে আসেন। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমকে বিষয়টি অবহিত করেন। সালাহ উদ্দিন ভারতে আছেন বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর খালেদা জিয়া তাকে ফিরিয়ে আনতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান ও উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার দায়িত্ব দেন। চেয়ারপারসনের নির্দেশের পরপরই তারা কাজ শুরু করেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলও ভারতে যেতে পারেন বলে জানা গেছে। দু’জন নিকট আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে ভারতের মেঘালয়ে সালাহ উদ্দিন আহমেদের কাছে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান হাসিনা।
১০ মার্চ গভীর রাতে রাজধানীর উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ১৩/বি নম্বর সড়কে ৪৯/বি নম্বর বাড়ির ২/বি নম্বর ফ্ল্যাট থেকে র্যাব ও আইনশৃংখলা বাহিনীর পরিচয়ে সালাহ উদ্দিনকে তুলে নিয়ে যায় বলে বারবারই অভিযোগ করে আসছে পরিবার ও তার দল বিএনপি। শনিবার এক অনুষ্ঠানে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও বলেছেন, দলের যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে র্যাবের লোকজনই তুলে নিয়ে গেছে। সে র্যাবের কাছেই আছে। দুপুর আড়াইটায় গুলশানের বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হাসিনা আহমেদ। তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ আমার স্বামী বেঁচে আছেন। তিনি মেঘালয়ের একটি মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে তার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, মেঘালয়ের শিলংয়ের মিমহান্স মেন্টাল হসপিটাল কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে ইংরেজি ভাষায় একজন আমাকে বলেন, আপনার স্বামী আপনার সঙ্গে কথা বলতে চান। হাসিনা এ সময় বলেন, ‘আমি উনার মিসেস বলছি। এরপরই ওই পাশের টেলিফোনে অসুস্থ সালাহ উদ্দিন আহমেদের কণ্ঠ ভেসে আসে। ‘কেমন আছো হাসিনা। আমি সালাহ উদ্দিন বলছি। আমি বেঁচে আছি। আমাকে এখানে ফেলে গেছে। দ্রুত বিষয়টি পার্টিকে জানাও, ম্যাডামকে জানাও, গণমাধ্যমকে জানাও। এখানে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। আমার তেমন কোনো পোশাকও নেই। এখান থেকে দ্রুত নেয়ার ব্যবস্থা করো।’
ওই সময় স্কলাস্টিকা স্কুল থেকে মেয়েকে নিয়ে হাসিনা আহমেদ বাসায় ফিরছিলেন। স্বামীর কণ্ঠ শুনে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। বাসায় মেয়েকে রেখেই চলে যান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসায়। দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে প্রবেশ করেন খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজায়। বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে কথা বলে যখন বের হন হাসিনা আহমেদ, তখন ঘড়ির কাঁটায় ১টা ১৫। এখান থেকে হাসিনা আহমেদ তার গুলশানের ৭২নং সড়কের ৭নং বাসায় যান। নিজের ফ্ল্যাটে স্বজনদের সঙ্গে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাংবাদিকদের কাছে টেলিফোনের কথোপকথন উল্লেখ করে হাসিনা আহমেদ বলেন, বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। উনি বেঁচে আছেন। সুস্থ আছেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। উনি মেঘালয়ের শিলংয়ের মিমহান্স মেন্টাল হসপিটালে ভর্তি আছেন বলে তিনি আমাকে জানিয়েছেন।
হাসিনা আহমেদ আরও বলেন, আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি জানাচ্ছি, ইনশাআল্লাহ, আমার স্বামী বেঁচে আছেন। আমার স্বামীর সন্ধান পাওয়ায় আমি দেশবাসী, বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট, সব রাজনৈতিক দল ও গণমাধ্যমের কাছে কতৃজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
সালাহ উদ্দিন সাহেব নিজেই টেলিফোন করেছিলেন কি- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মিমহান্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রথমে টেলিফোন করেন। তারা পরে টেলিফোনটি আমার স্বামীকে দেন। তিনি আমাকে বলেছেন, আমি সুস্থ আছি, ভালো আছি। তুমি সবাইকে খবরটি জানিয়ে দাও। সবাই যেন আমার জন্য দোয়া করে।
আপনি কি সালাহ উদ্দিন আহমেদের কণ্ঠ নিশ্চিত হয়েছেন- প্রশ্ন করা হলে হাসিনা বলেন, আমি আমার স্বামীর কণ্ঠ চিনি। ১০০ বছর পর হলেও তার কণ্ঠ আমি চিনবই।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দলের সহ-দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি ও ডা. ফরহাদ শুভ উপস্থিত ছিলেন। পরে দলের সহ-দফতর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীমসহ তার আত্মীয়স্বজনরা গুলশানের বাসায় হাসিনা আহমেদের সঙ্গে দেখা করেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে আপনার কী কথা হয়েছে জানতে চাইলে হাসিনা আহমেদ বলেন, ম্যাডামকে ঘটনা বলার সঙ্গে সঙ্গে তিনি শুকরিয়া আদায় করেছেন। তিনি আমাকে বলেছেন সালাহ উদ্দিনের কাছে যতদ্রুত সম্ভব যাওয়া যায়, সে উদ্যোগ নিতে হবে। তিনিও সংশ্লিষ্টদের ভিসাসহ প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সুপারিশ করবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, হাসিনা আহমেদের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও বিশেষ শাখার প্রতিবেদনেও বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী এবং বিচারপতি গোবিন্দচন্দ্র ঠাকুরের হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ২০ এপ্রিল সালাহ উদ্দিন আহমেদকে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে স্ত্রী হাসিনা আহমেদের ফৌজদারি আবেদনের নিষ্পত্তি করেন বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি গোবিন্দচন্দ্র ঠাকুরের বেঞ্চ। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজে বের করতে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়মিত অনুসন্ধান কার্যক্রম অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আগামী ছয় মাস বা সালাহ উদ্দিন আহমেদ উদ্ধার হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতি মাসের এক তারিখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে এ অনুসন্ধানের অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ কাজ করছে বলে বারবার বলে আসছেন পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
সালাহ উদ্দিন আহমেদের দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে গুলশানের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে এ বছর ও-লেভেল পরীক্ষা দিচ্ছে মেয়ে রাইবা। ছোট ছেলে ইউসুফ আহমেদ নবম শ্রেণীর ছাত্র। পড়াশোনার জন্য বর্তমানে বড় ছেলে ইব্রাহিম আহমেদ কানাডা এবং আরেক মেয়ে ফার্মিচ আহমেদ মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছে।