সালাহউদ্দিন গ্রেফতার
এর অাগে বিএনপির ‘নিখোঁজ’ যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে একটি মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে সাংবাদিকদের হাসিনা আহমেদ বলেন, ‘সালাহউদ্দিন আহমেদ শিলংয়ের মিমহ্যানজ মেন্টাল হসপিটালে চিকিৎসাধীন আছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই প্রথমে আমাকে ফোন করে বলে আপনার স্বামী আপনার সাথে কথা বলবেন। এরপর আমি তার সাথে কথা বলি।’ কণ্ঠ শুনেই বুঝতে পেরেছেন? – এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘একশ বছর পর হলেও আমি আমার স্বামীর কণ্ঠ চিনব।’
হাসিনা আহমেদ বলেন, ‘উনি বলেছেন, আমি বেঁচে আছি। মোটামুটি সুস্থ আছি।’ সেখানে দ্রুত পৌঁছে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান হাসিনা আহমেদ। ভিসা করতে সরকারের সাহায্য লাগবে বলে জানান হাসিনা আহমেদ।
এর আগে বিএনপির চেয়ারপারসনের গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তা শামসুদ্দীন দিদার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘সালাহউদ্দিন আহমেদের খোঁজ পাওয়া গেছে। ভাবীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, তিনি নিশ্চিত করেছেন।’
‘নিখোঁজ’ হওয়ার ৬৩ দিন পর তার খোঁজ পাওয়ার খবর পাওয়া গেল পরিবারের পক্ষ থেকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনো এ ব্যাপারে কিছু জানে না বলে দাবি করেছে।
সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ জানান, মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ভারতের কোনো একটি স্থান থেকে তাকে ফোন করেন সালাহ উদ্দিন আহমেদ।
পরে এ ব্যাপারে কথা বলতে দুপুরে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার গুলশানের বাসভবনে দেখা করেন হাসিনা আহমেদ। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠকের পর দুপুর দেড়টার কিছু পরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
ওই সময় হাসিনা আহমেদ বলেন, ‘আমি ১০ মিনিটের জন্য বাসায় যাচ্ছি। ফিরে এসে সংবাদ সম্মেলন করে এ নিয়ে কথা বলব।’ এরপর নিজের বাসার দিকে চলে যান তিনি।
এর আগে গত ১৯ মার্চ গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের দুর্গম চরাঞ্চলে সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান না পাওয়ার গুজব উঠেছিল। পরে ওই এলাকা অভিযান চালিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কারো সন্ধান পায়নি।
গত ১০ মার্চ থেকে ‘নিখোঁজ ছিলেন’ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে তাঁর পরিবার ও দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে।
তবে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আটক করা হয়নি বলে দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান চেয়ে ১১ মার্চ রাতে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গুলশান ও উত্তরা পশ্চিম থানায় যান তাঁর স্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ। তবে কোনো থানাই তাঁর জিডি গ্রহণ করেনি।
সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজে বের করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্মারকলিপি দেন তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমেদ।
রাজধানীর উত্তরার একটি বাড়ি থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ১০ মার্চ -এমন অভিযোগ করে থানা পুলিশের পাশাপাশি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন সালাহ উদ্দিনের পরিবার।
১২ মার্চ হাসিনা আহমেদের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে কেন খুঁজে বের করা হবে না এবং রোববার তাঁকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গত ২০ এপ্রিল হাইকোর্ট আগামী ছয় মাস সালাহ উদ্দিন আহমদের খোঁজ অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেন।