সাকা চৌধুরী রিভিউ করবেন

মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী আপিল বিভাগের চুড়ান্ত রায়ের পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন তার পক্ষে আইনজীবী হুজ্জাতুল ইসলাম আলফেসানি।
এ আইনজীবী সাংবাদিকদের জানান, রিভিউয়ের বিষয়ে কথা বলতে কাশিমপুর কারাগারে সাকা চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করে তারা আজ আইনগত বিষয়ে কথা বলবেন। তিনি বলেন, রিভিউ আবেদন বিষয়ে ইতোমধ্যেই ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।সূত্র: বাসস।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাকা চৌধুরী ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যু পরোয়ানা কেন্দ্রীয় কারাগারে গত ১ অক্টোবর পৌছেঁ দেয়া হয়েছে। এর আগে ওইদিনই সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মুজাহিদও রিভিউ করবেন বলে তার সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাত করে জানিয়েছেন আইনজীবী শিশির মনির। এ দুই যুদ্ধাপরাধীর আপিল মামলার রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গত ৩০ সেপ্টেম্বর বুধবার প্রকাশের পর ট্রাইব্যুনালের তিন বিচারপতি ১ অক্টোবর তাদের মৃত্যু পরোয়ানায় সই করেন। পুনর্গঠিত একমাত্র ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসাবে রয়েছেন বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হক। অন্য দুই বিচারপতি হলেন- বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম, বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দী।
মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দন্ডিত দুই আসামির বিষয়ে লাল কাপড়ে মোড়ানো পরোয়ানা দু’টি পর্যায়ক্রমে কারা কর্তৃপক্ষ, জেলা ম্যাজিস্ট্র্যাট, স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিস্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ পরোয়ানার ভিত্তিতে রায় কার্যকর করতে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর রায়ে আপিলের পূর্নাঙ্গ রায়ে স্বাক্ষর করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ আপিল মামলার রায় প্রদানকারী চার বিচারপতি। অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিং-এ বলেন, গত ২৯ জুলাই সাকা চৌধুরীর এবং গত ১৬ জুন মুজাহিদের আপিল মামলায় ট্রাইব্যুনালে দেয়া মৃত্যুদন্ড বহাল রেখে সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষনা করে আপিল বিভাগ। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের দিন থেকেই ১৫ দিনের মধ্যে রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারবেন আসামি সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদ। তবে আসামিপক্ষে রিভিউ আবেদনের জন্য রাস্ট্র বসে থাকবে না। দন্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিবে রাস্ট্র। আসামিরা রিভিউ দায়ের করলে তখন দন্ড কার্যকর প্রক্রিয়া স্থগিত থাকবে।
২০১৩ সালের ১অক্টোবর ট্রাইব্যুনালÑ১এর তৎকালীন চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল সাকা চৌধুরীকে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদন্ড দিয়ে রায় দেয়। হরতালে গাড়ী পোড়ানো ও ভাংচুরের এক মামলায় সাকা চৌধুরীকে ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাতে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তের স্বার্থে এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৯ ডিসেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। সে থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।