সাকার রায় উপলক্ষে ট্রাইব্যুনালে আজ তিন স্তরের নিরাপত্তা
মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী বিএনপির সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর যুদ্ধাপরাধের রায় উপলক্ষে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়ার পরিকল্পনাভুক্ত করা হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল। আন্তর্জাতিক আদালত এলাকায় তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয়ের আয়োজন করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। নজিরবিহীন নিরাপত্তায় নিয়োজিত করা হচ্ছে বিজিবি, র্যাব, সোয়াত, পুলিশ, গোয়েন্দা, দাঙ্গা পুলিশ, বোম ডিসপোজাল ইউনিটসহ পুলিশের নিñিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে। জলকামান, এপিসি, পিপার স্প্রে, টিয়ারগ্যাসসহ সব ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের পুলিশকে রাখা হচ্ছে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায়। নাশকতা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকা-ের রণসজ্জায় সজ্জিত হওয়ার মতো নিরাপত্তার আয়োজন করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এই প্রথমবারের মতো যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বিএনপির কোন নেতার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকাসহ এ ধরনের নিñিদ্র নিরাপত্তার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশের উচ্চ পর্যায় সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
পুলিশের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের হটিয়ে দেয়ার জন্য পরিচালিত ‘অপারেশন শাপলা’ অভিযানের আদলে সাকা চৌধুরীর রায় উপলক্ষে নিরাপত্তার প্রস্তুতি নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রায় ঘোষণার আগে ও পরে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের মধ্যে চট্টগ্রামকে নিরাপত্তার ব্যাপারে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চতুর্দিকে শত শত র্যাব, সোয়াত, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা, দাঙ্গা পুলিশ সদস্যরা ঘিরে রাখবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাজারসংলগ্ন পশ্চিম দিকের গেট সকাল নয়টার আগেই আটকিয়ে দেয়া হবে। বন্ধ করে দেয়া হবে শিশু একাডেমীসংলগ্ন পূর্ব দিকের গেটটি। দুই দিকেই থাকবে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা অবস্থায়। মোতায়েন করা থাকবে বোম ডিসপোজাল ইউনিট। কেবল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাই প্রবেশ করতে পারবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের প্রবেশাধিকার থাকবে নিষিদ্ধ।
সোমবার থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চতুর্দিকের নিরাপত্তার ব্যবস্থা রেকি করা হয়েছে। তিন স্তরের নিরাপত্তার জন্য দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালের মূল প্রবেশ পথ সুপ্রীমকোর্টের প্রধান ফটকে নেয়া হচ্ছে নিরাপত্তার বিশেষ ব্যবস্থা। এখানে র্যাব, সোয়াত, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মোতায়েন থাকবে। শিশু একাডেমীর সামনের গেট দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দ্বিতীয় গেটসহ আশপাশের এলাকায় শিক্ষাভবন, কদম ফোয়ারা, পুরনো হাইকোর্ট ভবন, দোয়েল চত্বরসহ গোটা এলাকায় র্যাব, পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আনা হয়েছে। এ ছাড়াও রাজধানী ঢাকার মোড়ে মোড়ে তল্লাশি, চেকপোস্ট বসানো, সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টসহ রাস্তায় রাস্তায় টহল দেবে বিজিবি সদস্যরা।
নিরাপত্তার পরিকল্পনা অনুযায়ী রাজধানীর পল্টন, বিজয়নগর, কাকরাইল, মগবাজার, ফার্মগেট, মহাখালী, তেজগাঁও, সাতরাস্তা, শাহবাগ, আরামবাগ, মালিবাগ, শাহজাহানপুর, প্রেসক্লাব, দৈনিক বাংলার মোড়, শাপলা চত্বর, কমলাপুর, বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেট, উত্তর গেটসহ বিভিন্নস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টহল দেবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থায় নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ঢাকা মহানগরীর ৪৯ থানাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পুলিশের কন্ট্রোল রুম থেকে নিরাপত্তার বিষয়টি মনিটর করা হবে বলে জানা গেছে