সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব

18/10/2013 3:31 pmViews: 8

PM--breifing--Hasina4441প্রতিবেদক : বিরোধী দলের প্রতি সর্বদলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকেও আপনারা নাম দিতে পারেন যাদের আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে মন্ত্রিসভায় সদস্য করে সর্বদলীয় সরকার গঠন করতে পারি এবং নির্বাচনে যাতে কারো কোনো সন্দেহ না থাকে, সকল সন্দেহ দূর করে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারি যে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ ভোট দিয়ে তাদের মনমতো সরকার গঠন করতে পারবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি বিরোধী দলের নেতাকে অনুরোধ করছি যে, তিনি আমার এই ডাকে সাড়া দেবেন। আমার এ অনুরোধ তিনি রক্ষা করবেন এবং আমাদের যে সদিচ্ছা সেই সদিচ্ছার মূল্য তিনি দেবেন।’

শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণ সমপ্রচার করা হয়।

ভাষণের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে ঈদ ও পূজা ও প্রবারণা পূর্ণিমার শুভেচ্ছা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণতন্ত্র তখনই শক্তিশালী হবে যখন তা সাংবিধানিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিরা রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন।’

২০০৭-এর ১/১১-এর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন জগদ্দল পাথরের মতো জনগণের বুকের ওপর চেপে বসে তখন রাজনৈতিক নেতারা, শিক্ষক-ছাত্র-পেশাজীবী, ব্যবসায়ীসহ সবার ওপর নেমে আসে নির্মম নির্যাতন। এ ধরনের অসাংবিধানিক শাসনের পুনরাবৃত্তি আর কখনই হবে না- এটাই সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা।’

বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বোমা মেরে, আগুন জ্বালিয়ে জনগণের জানমালের ক্ষতি করবেন না। কুরআন শরিফ পুড়িয়ে, মসজিদে আগুন দিয়ে ইসলাম ধর্মের অবমাননা করা বন্ধ করুন। মাদ্রাসায় বোমা তৈরির কাজে ব্যবহার করতে এতিম বাচ্চাদের লাশ বানানো বন্ধ করুন। নিরীহ পথচারী আর গরিব বাস ড্রাইভারকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা বন্ধ করুন। মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিন।’

ছুরি, দা, খুন্তা, কুড়াল নিয়ে মানুষ মারার নির্দেশ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শান্তি ও ঐক্যের পথই দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। জনতার ওপর আস্থা রাখুন, সন্ত্রাসের পথ পরিহার করুন। আপনারা কি চান তা সংসদে এসে বলুন। আলোচনা করুন। আলোচনার দরজা সব সময় আমাদের পক্ষ থেকে উন্মুক্ত আছে।’

২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার দেশকে অন্ধকারের পথে ঠেলে দিয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই দুঃসহ দহন-জ্বালার আতঙ্ক মানুষকে এখনও তাড়া করে ফেরে। হাওয়া ভবন নামে সরকারের ভিতরে আরেকটি সরকার এ দেশের মানুষ ভুলে যায়নি। বিএনপির এ অপকর্মের কারণেই দেশে নেমে এসেছিল ১/১১-এর আরেক যন্ত্রণাময় অধ্যায়।’

সংবিধান অনুযায়ী ২৫ অক্টোবর থেকে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নব্বই দিনের মধ্যে যাতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সেজন্য আমি সব দলের সঙ্গে, বিশেষ করে মহাজোটের সঙ্গে পরামর্শ করে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে যথাসময়ে লিখিত পরামর্শ দেব। এক্ষেত্রে আমি বিরোধী দলের কাছেও পরামর্শ আশা করি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সারাবিশ্বে স্বীকৃতি পেয়েছে। আমরা সুশাসন প্রতিষ্ঠা করেছি। কঠোর হাতে জঙ্গিবাদ দমন করেছি। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করেছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন করেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে আগামীতে সরকার গঠনের জন্য জনগণের সমর্থন কামনা করেন।

Leave a Reply