সরিষা ফসলের আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি

04/05/2015 3:44 pmViews: 72

সরিষা ফসলের আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি

সরিষা ফসলের আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি

।। মোঃ মাহমুদুল হাসান খান ।। বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (উদ্ভিদ প্রজনন)।।

মাটি ও আবহাওয়াঃ
সরিষা বেলে দোআঁশ মাটিতে ভাল জন্মে। মাঝারি ও মাঝারি উঁচু জমি এ সরিষার জাতের জন্য নির্বাচন করা উচিত। জলাবদ্ধতা অত্যন্ত ক্ষতিকর। সরিষা চাষের জন্য পর্যাপ্ত সূর্যকিরণ, কম তাপমাত্রা (২৫০ সেঃ এ কম) এবং জমিতে পর্যপ্ত রস থাকা প্রয়োজন । তাপমাত্রা বেশি হলে ও খরা হলে বীজের আকার ছোট হয় ও বীজে তেলের ভাগ কমে যায়।

জমি তৈরীঃ
সরিষার বীজ ছোট বিধায় ৪-৬ টি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে জমি তৈরি করতে হয়। জমিতে যাতে বড় বড় টিলা ও আগাছা না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

সারের পরিমাণঃ
জাত মাটি এবং মাটিতে রসের তারতম্য অনুসারে সরিষার জন্য বিভিন্ন পরিমাণ সার দিতে হয়।
সরিষার বিভিন্ন জাতের জন্য সারের পরিমাণ
উপরোক্ত সারের মাত্রা বিভিন্ন কৃষি পরিবেশ অঞ্চল ও জমির উর্বরতা ভেদে কম বেশি হতে পারে।

সার প্রয়োগ পদ্ধতিঃ
অর্ধেক ইউরিয়া এবং অন্য সারগুলোর সব টুকু শেষ চাষের আগে জমিতে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। বাকি অর্ধেক ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ হিসেবে চারা গজানোর ২২-২৫ দিন পর অর্থাৎ ফুল আসার আগে প্রয়োগ করতে হরে।

বপনের সময় ও বীজের হারঃ
সাধারণত আশ্বিন মাসের শেষ থেকে কার্তিক মাসের শেষ পর্যন্ত (মধ্য অক্টোবর থেকে মধ্য নভেম্বর) এ জাত দু’টি বপন করার উপযুক্ত সময়। দেরীতে বপন করলে ফলন কমে যায়। দেশের উত্তর অঞ্চলে আগাম শীত আসার কারণে সেখানে আগাম বপন করা সম্ভব। আমন ধান কাটার পর বেশি দেরি না করে সরিষা বপন করা উচিত।
বিভিন্ন অঞ্চলের তারতম্য ও জমির জো অবস্থা অনুসারে টরি-৭, টি এস-৭২ এবং এস এস-৭৫, বারি সরিষা-৬ (ধলি), বারি সরিষা-৭ ও বারি সরিষা-৮ আশ্বিনের মাঝামাঝি থেকে কার্তিক পর্যন্ত বোনা যায়। রাই -৫ দৌলত ও বারি সরিষা-১০ কার্তিক থেকে অগ্রহায়ণের মাঝামাঝি পর্যন্ত বপন করা যেতে পারে। টরি-৭ ও টি এস -৭২ এর জন্য প্রতি হেক্টরে বীজের হার হচ্ছে ৮ কেজি (প্রতি একরে ৩.৫ কেজি)। সোনালী, ধলি নেপাস সরিষার বীজ আকারে বড় বিধায় প্রতি হেক্টরে ৯ কেজি (প্রতি একরে ৪.৫ কেজি) বীজ লাগে। রাই -৫ ও দৌলত সরিষার বীজ ছোট বলে কম লাগে, তাই প্রতি হেক্টরে ৭.৫ কেজি (প্রতি একরে ৩ কেজি ) বীজ লাগে।

বীজের হারঃ
হেক্টর প্রতি (কেজি)– ৬.০০-৭.০০, একর প্রতি (কেজি)– ২.১-২.৪০, বিঘা প্রতি (কেজি)– ০.৭০-০.৮০
বপন পদ্ধতিঃ
সারিতে এবং ছিটিয়ে উভয় পদ্ধতিতেই সরিষা বীজ বপন করা যায়। সারিতে বুনলে সারির দুরত্ব ৩০ সেঃ মিঃ এবং সারিতে বীজ লাগাতার বপন করতে হয়। সারিতে বুনলে পরবর্তীতে আগাছা দমন ও অন্যান্য অন্তর্বতী পরিচর্যা করা সহজ হয়। সারি তৈরির জন্য লোহার তৈরি টাইন অথবা কাঠের ছোট লাঙ্গল ব্যবহার করা যেতে পারে। আড়াই থেকে তিন সেঃমিঃ গভীরে বুনলে শেষ চাষের পর বীজ বপন করতে হবে এবং মই দিয়ে জমি সমান করে দিতে হবে। সরিষার বীজ ছোট বিধায় বপনের সুবিধায় জন্য বীজের সঙ্গে ঝুরঝুর মাটি অথবা ছাই মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে।

চিত্র: সারিতে সরিষা বীজ বপন

সেচ পদ্ধতিঃ
সরিষা চাষের জন্য জমিতে পর্যাপ্ত রস থাকা প্রয়োজন সেজন্য জমিতে রসের অভার দেখা দিলে সেচ প্রয়োগ করতে হয়। কখনো কখনো বপনের সময় জমিতে রসের অভাব থাকে সেক্ষেত্রে বপনের আগেই সেচ দিয়ে রসের ব্যবস্থা করতে হবে। ফুল আসার আগে অর্থাৎ ২২-২৪ দিনে, শুজি হওয়ার সময় অথাৎ ৫০-৫৫ দিনে এবং শুটিতে বীজ পরিপুষ্ট হওয়ার সময় অর্থাৎ ৭০-৭৫ দিনে জমিতে রস থাকা প্রয়োজন। কাজেই এ সময়ে রসের অভাব দেখা দিলে সেচ দেয়া বাঞ্চনীয়। সরিষার জমিতে সাধারণত প্লাবন পদ্ধতিতে সেচ দেওয়া হয়। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে সেচের পানি জমিতে আটকে না থাকে। ফোয়ারা পদ্ধতিতে সরিষার জমিতে সেচ দেওয়া উত্তম।

পরিচর্যাঃ
চারা গজানোর ১০-১২ দিনে প্রথমবার এবং ১৮-২০ দিনে দ্বিতীয়বার নিড়ানি দিয়ে অতিরিক্ত চারা এবং আগাছা উঠিয়ে ফেলতে হবে। প্রতি বর্গমিটার জমিতে ৫০-৬০ টি সরিষার গাছ থাকা বাঞ্চনীয়। সেচের পর জমিতে জো আসার সাথে সাথে কোদাল অথবা নিড়ানি দিয়ে মাটি আলগা করে দিলে জমিতে রস বেশি দিন থাকবে।
পোকামাকড় ও রোগবালাই দমনঃ
সরিষার প্রধান ক্ষতিকারক পোকা জাব পোকা। এ পোকার আক্রমণ বেশি হলে ম্যলাথিয়ন ৫৭ ইসি অথবা মার্শাল ২০ ইসি অথবা জুলন ৩৫ ইসি অথবা সেবিয়ন ৬০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ২ মিঃ লিঃ অথবা বেনিক্রন ১০০ ডাবু ইসি প্রতি লিটার পানিতে ১ মিঃলিঃ হিসেবে মিশিয়ে সম্পূর্ণ গাছ ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে।

রোগবালাই দমনঃ
১। পাতা ঝলসানো রোগঃ
আমাদের দেশে সরিষার রোগসমূহের মধ্যে পাতা ঝলসানো রোগ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর । এ রোগের আক্রমণে ফসল ২৫-৩০% কমে যেতে পারে বলে গবেষণা ফলাফলে দেখা যায়।
রোগের কারণঃ
অলটারনেরিয়া ব্রাসিসী, অলটারনেরিয়া ব্রাসিসীকোলা নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ সৃষ্টি হয়।
রোগের লক্ষণঃ
সরিষা গাছের এক মাস বয়স থেকে শুরু করে বৃদ্ধির যে কোন পর্যায়ে এ রোগ হতে পারে। প্রাথমিক অবস্থায় সরিষা গাছের নিচের বয়স্ক পাতায় এ রোগের লক্ষণ পরিলক্ষতি হয়।পরবর্তীতে গাছের পাতা এবং শুঁটিতে গোলাকার, গাঢ় বাদামী দাগের সৃষ্টি হয়। দাগগুলো ধূসর, গোলাকার সীমারেখা দ্বারা আবদ্ধ থাকে। অনেকগুলো দাগ একত্রিত হয়ে বড় দাগের সৃষ্টি করে। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে পাতা ঝলসে যায়। পরবর্তীতে সরিষার শুঁটিতে আক্রমণ করে এবং শুঁটি ও বীজ হতে খাদ্য গ্রহণ করার ফলন মারাক্তকভাবে হ্রাস পায়।

চিত্রঃ পাতা ঝলসানো রোগ
রোগের উৎপত্তি ও বিস্তারঃ
আক্রান্ত বীজ, বিকল্প পোষক ও বায়ুর মাধ্যমে এ রোগ বিস্তার লাভ করে। বৃষ্টি ও ঠান্ডা আবহাওয়অ এ রোগ বৃদ্ধির সহায়ক।
রোগের প্রতিকারঃ
ক) সুস্থ, সবল, জীবাণুমুক্ত বীজ বপন করতে হবে।
খ) আগাম বীজ বপনঃ আগাম সরিষা চাষ অর্থাৎ অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বরের ১ম সপ্তাহের মধ্যে সরিষার বীজ বপন করলে এ রোগের আক্রমণ কম হয়।
গ) বীজ শোধনঃ বপনের পূর্বে বীজ প্রভেক্র-২০০ দ্বারা শতকরা ০.২৫ ভাগ হারে (২.৫ গ্রাম ছত্রাকনাশক/ কেজি বীজ) শোধন করে বপন করতে হবে।
ঘ) ছত্রাকনাশক প্রয়োগঃ এ রেগ দেখা দেয়ার সাথে সাথে রোভরাল-৫০ ডব্লিউপি শতকরা ০.২ ভাগ হারে (প্রতি লিটার পানির সাথে ২ গ্রাম ছত্রাকনাশক) পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন অন্তর ৩ বার সিঞ্চন যন্ত্রের সাহায্যে সমস্ত গাছে ছিটিয়ে এ রোগের আক্রমণ থেকে ফসলকে অনেকাংশে রক্ষা করা সম্ভব।
ঙ) ফসল কর্তনের পর আক্রান্ত গাছের পাতা জমি থেকে সরিয় অথবা পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
চ) জমিতে শস্য পর্যায় অনুসরণ করলে রোগের প্রাদুর্ভাব কম হয়।
২। ডাউনি মিলডিউ রোগঃ
পেরোনোসপোরা ব্রাসিসি নামক এক প্রকার ছত্রাম দ্বারা এ রোগ হয়।
লক্ষণঃ
গাছের চারা অবস্থায় পর থেকে যে কোন সময এ রোগ গাছ আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত পাতার নিম্নপৃষ্ঠে সাদা পাউডারের মত ছত্রাক দেখা যায় এবং পাতার উপরের পৃষ্ঠে হলদে হয়ে যায়। অনুকুল আবহাওয়ায় এ ছত্রাকের বংশ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ফলে পাতা আকারে ছোট হয়ে যায়। এ রোগ পরবর্তীতে সরিষার শুটি আক্রমণ করে বীজ হতে খাদ্য গ্রহণ করার ফলে উৎপাদন বহুলাংশে কমে যায়।আক্রান্ত বীজ ও বিকল্প পোষকের মাধ্যমে এ রোগ বিস্তার লাভ করে। গাছ ঘন করে লাগালে ও বাতাসের আর্দ্রতা কম হলে এ রোগ দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

চিত্রঃ ডাউনি মিলডিউ রোগের লক্ষন
প্রতিকারঃ
ক) বীজ শোধনঃ রিডোমিল এম জেড-৭২ নামক ছত্রাকনাশক দিয়ে শতকরা ০.২৫ ভাগ হারে (২.৫ গ্রাম ছত্রাকনাশক / কেজি বীজ ) বীজ শোধন করে লাগতে হবে।
খ) ছত্রাকনাশক প্রয়োগঃ রোগ দেখা দেয়া মাত্র রিডেমিল এম জেড -৭২ বা ডাইথেন এম -৪৫ শতকরা ০.২ ভাগ
হারে (প্রতি লিটার পানির সাথে ২ গ্রাম ছত্রাকনাশক) ১০ দিন পর পর তিন বার সমস্ম গাছে ছিটিয়ে দিতে হবে।
গ) সুষম সার ও সেচ প্রদান: সুষম সার ব্যবহার ও সেচের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৩। সপুষ্পক পরজীবী উদ্ভিদ (অরোবাংকি প্রজাতি):
দেশের উত্তরাঞ্চলে সরিষা ফসলে পরজীবী উদ্ভিদ- এর আক্রমণ দেখা যায়।
লক্ষণঃ
অরোবাংকি এক প্রকার সপুষ্পক শিকড় পরজীবী উদ্ভিদ যার বংশ বৃদ্ধি সরিষার উপর নির্ভরশীল। এর বীজ মাটিতেই অবস্থান করে। সরিষা গাছের শিকড়ের সাথে এ পরজীবী উদ্ভিদ সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে খাদ্য সংগ্রহ করে বেঁচে থাকে। ফলে আক্রান্ত সরিষার গাছ দুর্বল হয় বৃদ্ধি কমে যায় এবং ফলন হ্রাস পায়। প্রতি বছর একই জমিতে সরিষা পরিবারের কোন ফসলের চাষ করলে এ পরজীবী উদ্ভিদের বিস্তার ঘটে।

চিত্রঃ সপুষ্পক পরজীবী উদ্ভিদ (অরোবাংকি প্রজাতি)
প্রতিকারঃ
ক) ফুল আসার পূর্বেই এ পরজীবী উদ্ভিদ জমি হতে উঠিয়ে ফেলতে হবে
খ) বীজ বপনের পূর্বে জমি লাঙ্গল দিয়ে গভীরভাবে চাষ করতে হবে। এত পরজীবী উদ্ভিদের বীজ মাটির গভীরে চলে যায় এবং সরিষার শিকড়ের সংস্পর্শে না আসার বীজ গজাতে পারে না।
গ) একই জমিতে প্রতি বছর সরিষা চাষ না করে অন্যান্য ফসল (যাতে অরোবাংকি না হয়)। পর্যায়ক্রমিকভাবে চাষ করতে হবে।
ঘ) আগাছা নাশক যেমন ২,৪-ডি ছিটিয়ে পরজীবী উদ্ভিদকে মেরে ফেলতে হবে।
পোকা মাকড় দমনঃ
৪। সাধারণ কাটুই পোকাঃ
সম্প্রতি চলনবিল এলাকায় এ পোকার কীড়া সরিষা গাছ পেটুকের মত খেয়ে মহামারী আকারে ক্ষতি করে। এদের কীড়া দিনের বেলায় মাটির গর্তে গাছের গোড়ায় লুকিয়ে থাকে। রাতে সক্রিয় হয়ে ক্ষতি করে।

চিত্রঃ লার্ভা, পিউপা এবং বয়স্ক কাটুই পোকা
সমন্বিত ব্যবস্থাপনাঃ
* ৫০ গ্রাম আধা ভাঙ্গা নিমবীজ ১ লিটার পানিতে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে ছেকে ১ চা চামচ গুড়া সাবান মিশিয়ে ১০ দিন অন্তর ২ বার ছিটিয়ে পোকা দমন করা যায়।
* সেক্র ফেরোসন ফাঁদ ব্যবহার করা ।
* Trap Crop ভেরেন্ডা বা সূর্যমুখী গাছ ।
* বিঘা প্রতি ১০-১২ টি গাছের গাল পুতে দেওয়া।
* মাঠের চতুর্দিকে ডালপালা ছিটিয়ে আশ্রয় গ্রহনকারী লার্ভাগুলি সংগ্রহ
* হেক্টর প্রতি ১২০০ টি এক (বাংকার) প্ররজীবী ব্রাকন ৭ দিন অন্তর ২ বা ছেড়ে দেয়া।
* ডারসবান কীটনাশক ২ মি.লি/লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭ দিন অন্তর ২ বার ছিটাতে হবে।
৫। সরিষার জাব পোকাঃ
ক্ষতির প্রকৃতি:
জাবপোকা দলদ্ধভাবে সরিষার পাতা, কান্ড, পুষ্পমঞ্জুরী, ফুল ও ফল থেকে রস চুষে খেয়ে ক্ষতি করে। সাধারণত:জানুয়ারী থেকে ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত গাছে ফুল ও ফল আসার সময় আক্রমণ বেশি হয়ে থাকে। এদের আক্রমণে শতকরা ৩০-৫০ ভাগ ফসল ক্ষতি হয়ে থাকে।

চিত্রঃ সরিষার জাব পোকা এবং আক্রন্ত সরিষা গাছ

সমন্বিত ব্যবস্থাপনাঃ
* স¦ল্প মেয়াদী জাত (বারি সরিষা-৯, ১৪ ও ১৫) নভে¤¦রের প্রথম সপ্তাহে বপন করলে জাবপোকার আক্রমন শতকরা ৫০-৭০ ভাগ কম হয়।
* মাঠ এবং চারপাশের আগাছা দমন
* প্রাকৃতিক শত্রুর আধিক্য বাড়ানো
* ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানি (১০ লিটার পানিতে ২০ গ্রাম)
* অক্টোবরের ১৫ থেকে ৭ নভেম্বরের মধ্যে স্বল্পমেয়াদূ সরিষার আবাদ করা
* ৫০ গ্রাম আধা ভাংগা নিমবীজ ১ লিঃ পানিতে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে সাথে ২-৩ গ্রাম ডিটারজেন্ট সাবান মিশিয়ে ৭ দিন অন্তর ২ বার ছিটাতে হবে।
* শতকরা ২০-৩০ ভাগ গাছে জাবপোকা দেখা গেলে ম্যালটাফ ৫৭ ইসি ২ মিঃলি মিশিয়ে বিকাল ৩ টার পর ৭ দিন অন্তর ২ বার ছিটাতে হবে।
ফসল কর্তন, বীজ শুকানো ও সংরক্ষন
যখন সরিষা গাছের শুটি শতকরা ৭০-৮০ ভাগ পাকে তখন ফসল কর্তনের উপযোগী সময়। সকালে শুটিসহ গাছ কেটে বা উপড়িয়ে মাড়াই করার স্থানে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে যে শুটি যাতে, মাঠে অতিরিক্ত শুকিয়ে না যায়। সেজন্য শুটি যখন খড়ের রং ধারণ করবে তখনই ফসল কাটতে হবে এবং মাড়ানোর স্থানে নিয়ে গাদা দিতে হবে।

চিত্রঃ কর্তন উপযোগী সরিষা

৪-৫ দিন গাদা দিয়ে রাখার পর দু’তিন দিন রোদে গাছ শুকিয়ে গরু দিয়ে মাড়াই করা হয়। লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও মাড়াই করা যায়। বীজ কুলা দিয়ে ঝেড়ে রোদে ভালভাবে তিন-চার দিন শুকিয়ে নেবার পর শুষ্ক পাত্রে সংরক্ষণ করা উত্তম। সরিষার শুকনো বীজ ৮-১০% আর্দ্রতাসহ পরিস্কার শুকনো পাত্রে আদ্রতা কম এমন শীতল স্থানে রাখলে এক বছর এমনকি দু‘বছর পর্যন্ত অনায়াসে সংরক্ষণ করা যায়।

# তৈলবীজ গবেষনা কেন্দ্র, বি.এ.আর.আই, গাজীপুর #

Leave a Reply