সরকার আরও ক্ষমতায় থাকলে সামনের বছরে দেশের মানুষের দুর্ভোগ আরও ১০ গুণ বাড়বে: রেজা কিবরিয়া
গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া বলেছেন, এই সরকার আরও ক্ষমতায় থাকলে সামনের বছরে দেশের মানুষের দুর্ভোগ আরও ১০ গুণ বাড়বে। আমরা এমন একটা পদক্ষেপ নিতে চাই করে এই দুষ্কৃতিকারী সরকার আর এই দেশে ক্ষমতায় আসতে না পারে। তারা আগে ক্ষমতার বাইরে ছিল ২৫ বছর। এইবার ১২৫ বছরও তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদ। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করে দলটির নেতাকর্মীরা। মিছিলটি প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়ে পুরানা পল্টন, জিরো পয়েন্ট, মৎস্য ভবন মোড় হয়ে কাকরাইলে গিয়ে শেষ হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, এই সরকার সবখানে ষড়যন্ত্র দেখে। আমরা এই সরকারের পতনের জন্য কাজ করছি।
এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষ বিপদে পড়বে। আর হাতে সময় নেই। আপনারা যদি মনে করেন ছয় মাস বা এক বছর এই সরকার থাকলে অসুবিধা কি? আমি বলবো অনেক অসুবিধা।
এই সরকার গত ১৪ বছরে যে অদক্ষতা আর দুর্নীতির প্রমাণ দিয়েছে সেটা দেশের মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে। তিনি বলেন, দেশে একটা সর্বনাশ আসছে। দেশ শ্রীলঙ্কার মতো হতে আর বেশি দেরি নাই। দেশের যদি সেই অবস্থা হয় তাহলে ওই অবস্থা থেকে উঠে আসতে আমাদের ১৫-২০ বছর লাগবে। এসব কথা বলছি আমার অভিজ্ঞতা থেকে। আমি আইএমএফ-এ কাজ করেছি। সরকার আইএমএফ’র ঋণ নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে। আমি জানি, আইএমএফকে কেউ ভালো অবস্থায় ডাকে না। তাদেরকে ডাকা হয় যখন সব শেষ হয়ে যায়। ড. কিবরিয়া আরও বলেন, সরকার আগামী কয়েক মাসের মধ্যে পদত্যাগ না করলে আমরা এই বিপদ থেকে রক্ষা পাবো না। সরকার যে পরিসংখ্যান দিচ্ছে এটা কেউই বিশ্বাস করে না। তাদের ৪০ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক রিজার্ভ আছে বললো। আর একরাতের মধ্যেই তা হয়ে গেল ৩১ বিলিয়ন। এখন বলছে রিজার্ভ আছে ২২ বিলিয়ন। কয়েকদিন পর পর তারা নতুন তথ্য দিচ্ছে। সরকার দুই হাজার আলেমকে জেলখানায় রেখে এখনো নির্যাতন করছে। গণঅধিকার পরিষদ সব সময় মজলুমদের পক্ষে। আমরা ক্ষমতায় গেলেও মজলুমদের পাশে দাঁড়াবো। আমরা এমন একটি দেশ তৈরি করবো যে দেশ নিয়ে আমরা গর্বিত হবো। সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন, আজকে আমরা রাজপথে এসেছি।
সরকার যদি আমাদের ওপর আর মামলা দেয় তাহলে আমরা আইনগত নয়, রাজনৈতিকভাবেই প্রতিরোধ করবো। আমি প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে বলবো, এই সরকার মামলার ফাঁদে পড়ে আদালতের বারান্দায় ঘুরে আর জুতা ক্ষয় করা যাবে না। রাজপথে পতন ঘটিয়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেই আমরা দেশের মানুষের রাষ্ট্র ফিরিয়ে আনবো। আর সেদিনই আমরা আদালতে যাবো তার আগে নয়। তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন কীভাবে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। সরকার প্রায় ২০টি মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর জন্য সরকার সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। আর এই ঋণের কিস্তি শুরু হবে ২০২৪ সাল থেকে। এখন যদি এই সরকারের পতন হয় তাহলেতো এই ঋণের বোঝা টানতে হবে পরবর্তী সরকারকে। কাজেই এই সরকার জোড়াতালি দিয়ে এই দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখার যে ফন্দি করেছে তাতে বাংলাদেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। নুর বলেন, সরকার এখন সংক্রামকে পরিণত হয়েছে। এই সংক্রামকের যদি আপনারা প্রতিষেধক না আবিষ্কার করতে পারেন তাহলে এই দেশ একটা ব্যর্থ এবং অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হবে। এই সংক্রামকের প্রতিষেধক হচ্ছে রাজপথে গণআন্দোলন গড়ে তোলা। রাজপথের গণআন্দোলন গড়ে তুলেই এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন- গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, আবু হানিফ, ড. মালেক ফরাজী, কর্নেল মিয়া মশিউজ্জামান প্রমুখ।