সন্তানকে চরিত্রবান বানাবেন যেভাবে

25/12/2020 12:03 amViews: 122

pic

আমিন ইকবাল : প্রতিটি মা-বাবা-ই চান নিজের সন্তানকে সু-চরিত্রবান, আদর্শবান ও নীতিবান করে গড়ে তুলতে। এজন্যে প্রচেষ্টার কমতিও থাকে না। শিক্ষা-দীক্ষা ও নীতিকথা শুনিয়ে মানুষের মতো মানুষ করতে চান সবাই। তারপরও অসৎ পথে পা বাড়ায় আমাদের সন্তানেরা। কিছুটা বুঝে, কিছুটা না বুঝেই। নিচে বিশটি পয়েন্টে সন্তানকে আদর্শবান ও চরিত্রবান হিসেবে গড়ে তোলার বিষয়ে আলোচনা করা হলো। মেনে চলতে পারলে সফলতা পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।

সু-সন্তানের জন্য একজন সৎ ও ভালো মেয়েকে বিয়ে করতে হবে। ভালো নারীর গর্ভেই ভালো সন্তানের আশা বেশি করা যায়।
পিতা-মাতা উভয়কেই হালাল খাবার গ্রহণ করতে হবে। কেননা হারাম খদ্য থেকে সৃষ্ট বীর্যের মধ্যে খারাপ প্রভাব হতে পারে। আর তা থেকে সৃষ্ট সন্তানের মধ্যেও সেই প্রভাব থেকে যাওয়া স্বাভাবিক।
সহবাসের সময় সহবাসের আদব তথা নীরব স্থানে করা, দোয়া করা ইত্যাদির প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে।
বেশি বেশি এ দোয়া পড়তে হবেÑ ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে নিজ অনুগ্রহে পবিত্র বংশধর দান কর, অব্যশই তুমি দোয়া শ্রবণকারী।’
সন্তান গর্ভে আসার পর মায়ের চিন্তা-ভাবনা, মায়ের মন-মানসিকতা ও মায়ের আচার-আচরণ সবকিছুর প্রভাব পড়ে গর্ভস্থ সন্তানের ওপর। তাই সন্তান গর্ভে আসার পর মাকে সব ধরনের কু-চিন্তা পরিহার করতে হবে এবং নেক ও ভালো চিন্তা-ভাবনা রাখতে হবে।
সন্তান জন্ম নেয়ার পর তাকে গোসল করিয়ে তার ডান কানে আজানের শব্দগুলো এবং বাম কানে ইকামতের শব্দগুলো শুনাবে। এতেকরে শুরু থেকেই তার মনে আল্লাহ, আল্লাহর রাসুলের নাম ও কালিমা-ইবাদতের সুপ্রভাব পড়বে।
নবাগত শিশুর সুন্দর অর্থবোধক একটি নাম রাখতে হবে।
শিশুকে সুশিক্ষা প্রদান করতে হবে।
শিশুকে প্রয়োজনীয় শাসন করতে হবে।
কিছুটা বুঝমান হওয়ার পর থেকেই পদে পদে শিশুকে আদব-কায়দা শিক্ষা দিতে হবে। অন্যায়মূলক কিছু করলে সংশোধন করে দিতে হবে।
সাত বছর বয়স থেকেই শিশুকে নামাজের হুকুম দিতে হবে এবং পুরুষ ছেলে হলে জামায়াতের সাথে নামাজ পড়তে অভ্যস্ত করাতে হবে। দশ বছর বয়সে প্রয়োজনে মারপিট করে হলেও নামাজ পড়াতে হবে। উল্লেখ্য, শিশুর নামাজ-রোজা ইত্যাদি ইবাদত ও আখলাক-চরিত্র গঠনের ব্যাপারে মা’কেই বেশি খেয়াল রাখতে হয়। কেননা, তার কাছেই সন্তানরা বেশি সময় কাটায়।
প্রতিদিন একটি নির্ধারিত সময়ে বাসায় ইসলামী কথা-বার্তা আলোচনা বা ধর্মীয় কিতাব তালিমের নিয়ম জারি করতে হবে। এতে সন্তানের সাথে সাথে পরিবারের অন্য সদস্যদেরও উপকার হবে।
শুরু থেকেই সতর্ক থাকতে হবেÑ খারপ ছেলেমেয়েদের সঙ্গে যেন সন্তানের সম্পর্ক গড়ে না ওঠে।
সান্তানদের মুসলমানদের সাথে, বিশষ করে গরিব সৎ মুসলমানদের সাথে উঠা-বসা করতে অভ্যস্ত করাতে হবে।
সন্তানরা যেন গোপনে খারাপ কিছু না করেÑ সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কেননা পোগনে তারা এমন কাজই করবে, যেটাকে সে অন্যায় বেল মনে করে। এভাবে গোপনে কাজ রকতে অভ্যস্ত হওয়ার অর্থ অন্যায় কাজে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া।
হালাল সম্পদ দ্বারা সন্তানের ভরণ-পোষণ করতে হবে। হারাম সম্পদের কু-প্রভাব সন্তানের মানসিকতায় পড়ে থাকে। পক্ষান্তরে হালাল সম্পদের দ্বারা সৎ স্বভাব ও নেক চরিত্রের বুনিয়াদ গঠিত হয়।
সন্তানকে যৌন ও প্রচলিত প্রেম-ভালোবাসা বিষয়ক বইপত্র ও নভেল নাটক পড়তে বা দেখতে দেয়া যাবে না।
মনে রাখতে হবেÑ সন্তানের শিশুকালই তার পরিশোধনের উপযুক্ত সময়। শুরুতে একবার নষ্ট হয়ে গেলে পরে তার সংশোধন অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ে। তাই অবুঝ সন্তান বলে অবহেলা করে ছেড়ে দিলে পরবর্তীতে অনুতপ্ত হতে হয়।
প্রথম সন্তানকে অধিক গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। কেননা পরবর্তী সন্তানরা প্রায়ই প্রথম সন্তানের অনুকরণ করে থাকে।
সন্তান সৎ ও চরিত্রবান হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে। সন্তান জন্মের পূর্ব থেকেই সন্তানকে চরিত্রবান বানানোর ফিকির ও প্রচেষ্টা করতে হবে। সেই ফিকির ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে মৃত্যু পর্যন্ত।

Leave a Reply