সংকট থেকে বাঁচতে রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন: দীপনের বাবা

মর্গ থেকে প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনের মৃতদেহ বুঝে নিয়ে তার বাবা অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক আবারো বলেছেন, কেবল আইনের বিচারে একের পর এক হামলা বা হত্যার সমাধান হবে না, এ সংকট থেকে বাঁচতে আদর্শগত, রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন।
রোববার সকালে দীপনের লাশের ময়নাতদন্তের পর দুপুরের আগে তার লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শনিবার শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে এর কর্ণধার ফয়সল আরেফিন দীপনের রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। এই প্রকাশনী থেকে বিজ্ঞানমনস্ক লেখক অভিজিৎ রায়ের ‘বিশ্বাসের ভাইরাস’ বইটি প্রকাশিত হয়েছিল।
ছেলের লাশ পাওয়ার পর দীপনের বাবা বলেন, আমি কোনো বিচার চাই না। আমি চাই শুভবুদ্ধির উদয় হোক। যারা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ নিয়ে রাজনীতি করছেন, যারা রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছেন, উভয় পক্ষ দেশের সর্বনাশ করছেন। উভয় পক্ষের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।… জেল-ফাঁসি দিয়ে কী হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার শিক্ষক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, দেশের ভেতর যদি শুভ বুদ্ধির উদয় হয় তাহলে সমস্যার সমাধান হতে পারে। বিচার দিয়ে আইন আদালত দিয়ে আমরা শাস্তি দিতে পারি একজনকে। কিন্তু জাতীয় উন্নতি দরকার। সেজন্য গতকাল (শনিবার) যে কথা বলেছি যৌক্তিক বিবেচনা করেই বলেছি। সেটা কোনো আবেগের উত্তেজনার কথা নয়। তিনি বলেন, আমি শুভ বুদ্ধির জাগরণ চাই। সমাজে, রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে।
মামলা করবেন কিনা এব্যাপারে তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী মামলা করব। আমি আইন মেনে চলি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অথরিটি বলেছে একটা দরখাস্ত লিখে দিতে। আজ না পারলে আগামীকাল লিখে দেব।
চলতি বছর চার লেখক-ব্লগার হত্যার ঘটনায় দৃষ্টি আকর্ষণ করলে অধ্যাপক আবুল কাসেম বলেন, ঘটনা ঘটছে। এজন্য সরকার চেষ্টা করছে রীতি অনুযায়ী। আমার কাছে মনে হয় এটা আদর্শগতভাবে, রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে। তারপরে আইনগতভাবে। তা না হলে এটা সমাধান হবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, দীপনের শ্বশুর ডা. জালালুর রহমান ও বন্ধু আজিজুল ইসলাম ওয়ালি এ সময় মর্গে উপস্থিত ছিলেন।
ময়নাতদন্ত ও বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শেষে জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক-মালিক ফয়সাল আরেফিন দীপনের মরদেহ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।