শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ, টার্মিনাল স্থাপনের আশ্বাস দিয়ে এলাকা ছাড়লেন মেয়র
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ট্রাক স্ট্যান্ড উচ্ছেদ অভিযানে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় চার ঘণ্টা শ্রমিক সংগঠনের কার্যালয়ে অবরুদ্ধ ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক।
পরে বিকাল ৫টার দিকে টার্মিনাল নির্মাণ এবং শ্রমিকদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে এলাকা ছাড়েন তিনি।
উপস্থিত শ্রমিকদের উদ্দেশে মেয়র বলেন, ওই এলাকায় রাস্তায় ট্রাক পার্কিং বন্ধ করে ভেতরে নির্ধারিত ট্রাক স্ট্যান্ডে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এটি সিটি করপোরেশনের নাগরিকদের স্বার্থে করা হচ্ছে। এখানে মেয়রের কোনো স্বার্থ নেই।
তিনি বলেন, ‘নাগরিকদের ভোটেই আমি মেয়র হয়েছি। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে মেয়র হয়েছি। ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’
শ্রমিকদের উদ্দেশে আনিসুল হক বলেন, ‘আপনারা আমাকে সহযোগিতা করুন, আমিও আপনাদের সহযোগিতা করবো।’
এ সময় একজন শ্রমিকের আহত হওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে সহায়তার আশ্বাস দিলে উপস্থিত শ্রমিকরা স্লোগান দিতে থাকেন।
পরে আধুনিক ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে মেয়র বলেন, রাস্তায় কোনো ট্রাক থাকবে না। ট্রাক থাকবে স্ট্যান্ডে।
এরআগে দুপুর একটার দিকে ট্রাক স্ট্যান্ড এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। এ সময় মারমুখী হয়ে ওঠেন ট্রাকচালকসহ সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য মেয়র আনিসুল হক বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়নের কার্যালয়ে যান। এ সময় বাইরে থেকে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ওই কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রাখেন।
সেখানে মেয়র সাংবাদিকদের বলেন, যারা মাস্তানি করছেন, তাদের বলছি- মাস্তানি চলবে না। আমার পেছনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মানুষের সমর্থন আছে। ঢাকা শহরে এসব অবৈধ কাজ হবে না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে সিটি করপোরেশনের লোকজন ট্রাকস্ট্যান্ড উচ্ছেদের অভিযান শুরু করেন। এ সময় সেখানে ছিলেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক ও ডিএনসিসি মেয়র আনিসুল হক।
উচ্ছেদ অভিযান শুরুর কিছুক্ষণ পরই চালক ও স্থানীয় লোকজন উচ্ছেদকারীদের ওপর ইট-পাটকেল ছুঁড়তে শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং মন্ত্রী- মেয়রকে রক্ষা করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতা শুরু করে।
এতে এক ট্রাকচালক আহত হন। আহত ট্রাক চালকের নাম জসিমউদ্দিন। তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় ভাঙচুরের শিকার হয়েছে চ্যানেল আই’র একটি গাড়ি। ওই গাড়ির চালক আজহারও আহত হয়েছেন। এ ছাড়া একজন সাংবাদিকের মাথায় ইটের আঘাত লেগেছে। তার ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়েছে।
সন্ধ্যায় মেয়র এলাকা ত্যাগের পর শ্রমিকরা ধীরে ধীরে এলাকা ছাড়তে শুরু করেন। এরপর পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে। তবে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।