শেষ মুহূর্তে নির্বাচন পেছানোর চেষ্টায় কূটনীতিকরা

02/01/2014 8:29 amViews: 8

শেষ মুহূর্তে নির্বাচন পেছানোর চেষ্টায় কূটনীতিকরাবিরোধী ১৮ দলীয় জোটকে নির্বাচনে আনার জন্য শেষ মুহূর্তেও তত্‍পরতা চালাচ্ছেন মার্কিন এবং ব্রিটিশ কূটনীতিকরা। তাঁরা চাইছেন, নির্বাচন পিছিয়ে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে। এ জন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে বৈঠকও করছেন তাঁরা।

শুরুটা করেন ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট গিবসন। এরপর যুক্ত হন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজেনা। রবার্ট গিবসন বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন গণতন্ত্রের অভিযাত্রা কর্মসূচির শেষ দিন, সোমবার বিকেলে। তিনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন। তবে ব্রিটিশ হাই কমিশনার বৈঠকের বিষয় নিয়ে মুখ খোলেননি। এর একদিন পর, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করেন গিবসন৷ সেই বৈঠকের বিষয় নিয়েও কেউ মুখ খোলেননি।

মঙ্গলবার মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজেনা বৈঠক করেন বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে। বৈঠকের পর তিনি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন৷ তিনি সহিংসা বন্ধে সংলাপ এবং সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের ওপর গুরুত্ব দেন৷ গুরুত্ব দেন গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ওপর। বলেন, বিরোধী দলকে মত প্রকাশ করতে দেয়া উচিত।

এরপর মার্কিন দূত বুধবার আবারো বৈঠক করেন বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট শমসের মুবিন চৌধুরীর সঙ্গে। শমসের মুবিন অবশ্য বলেন যে, মার্কিন দূত নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাতেই তাঁর বাসায় এসেছিলেন।

তবে কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে ভিন্ন কথা। জানা গেছে, এই দুই কূটনীতিক মোট তিনটি বিষয় নিয়ে কাজ করছেন।সহিংসতা বন্ধ, নির্বাচন পিছানো এবং বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে আসা। এ জন্য তাঁরা প্রকাশ্য বৈঠকের পাশাপাশি গোপনেও কথা বলছেন দুই দলের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে। তাঁরা মনে করেন, এখনই যদি দুই দলের মধ্যে একটি সংলাপ শুরু করা যায় তাহলেও পরিস্থিতি ইতিবাচক দিকে মোড় নিতে পারে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত হয়ত এ নিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই সরকারের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলবেন। জানা গেছে, এ জন্য কয়েকদিন আগে সুশীল সমাজের প্রস্তাবটি আলোচনায় রাখা হচ্ছে৷ আর তা হলো, সংসদের মেয়াদ শেষে ২৪শে জানুয়ারি সংসদ ভেঙে দিয়ে পরবর্তী তিন মাসে নির্বাচন করা। সেটা হলে আলোচনার জন্য ২৪শে জানুয়ারি পর্যন্ত সময় পাওয়া যাবে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং রাজনীতির বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, শেষ মুহূর্তে এই দুই প্রভাবশালী কূটনীতিকের তত্‍পরতা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে তাঁদের এই তত্‍পরতা ৫ই জানুয়ারি নির্বাচন, না এই নির্বাচনের পর কত দ্রুত সব দলের অংশগ্রহণে আরেকটি নির্বাচন করা যায়, তা নিয়ে – সেটা এখনো স্পষ্ট নয়। কারণ কোনো দিক থেকেই সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য দেয়া হয়নি। তবে ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন যে গ্রহণযোগ্য হবে না, তা তাঁরা স্পষ্ট করেছেন।

অধ্যাপক আহমেদ বলেন, নির্বাচনের আগে বা পরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অবশ্যই সমঝোতা হবে। আর এই দুই কূটনীতিক চেষ্টা করছেন যাতে দ্রুত সেই সমঝোতা সম্ভব হয়। তিনি বলেন, ভারতীয় পত্র-পত্রিকার খবর অনুযায়ী ভারতের অবস্থানের কিছুটা হলেও পরিবর্তন হয়েছে। তারা এখন চাইছে জনগণের অংশগ্রহণে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। এটা আলোচনার মাধ্যমে নিশ্চিত করার কথা বলছে তারা। স্বাভাবিকভাবেই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত বাংলাদেশ নিয়ে তাদের অবস্থানের দূরত্ব কমাতে চাইছে।

মার্কিন এবং ব্রিটিশ দূতের এই প্রচেষ্টার সঙ্গে দ্রুতই আরো অনেক দেশের কূটনীতিক যুক্ত হবেন বলে মনে করেন অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।

সূত্র : ডিডব্লিউ

– See more at: http://www.sheershanews.com/2014/01/01/19944#sthash.G37N458E.dpuf

Leave a Reply