শেখ হাসিনার সরকার কখনো তরুণদের যৌক্তিক দাবি উপেক্ষা করেনি প্রেস ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তরুণরা সরকারি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি সংস্কারে আন্দোলন করছেন। এই তরুণরাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির অপরিহার্য অংশ। আমরা এই পরবর্তী প্রজন্মের জন্যই রাজনীতি করি। তাই শেখ হাসিনার সরকার কখনও তরুণদের যৌক্তিক দাবিকে উপেক্ষা করেনি। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন।
গতকাল সোমবার বিকালে সচিবালয়ে আন্দোলনকারী বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতৃত্বের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে পরিষদের আহবায়ক হাসান আল মামুন আগামী ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন। সোমবার সড়ক পরিবহণ মন্ত্রণালয়ে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বৈঠক শুরু হয়। ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলনকারীদের বক্তব্য আমরা শুনেছি। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বক্তব্য তাদের জানিয়েছি। সব কিছুর পর সিদ্ধান্ত হয়েছে, সরকারি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতির সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলন আগামী ৭ মে পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। তাদের দাবির যৌক্তিকতা আমরা ইতি-বাচকভাবে দেখবো।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার মে মাসের ৭ তারিখের মধ্যে কোটা পদ্ধতি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। এর ফল কী হবে, সেটা আমরা জানাবো। রবিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে বড় ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটেছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি ব্রাইট অ্যান্ড ব্রিলিয়ান্ট তরুণদের কাছে জানতে চেয়েছি, কোটা সংস্কারের সঙ্গে ভিসি কীভাবে জড়িত? তিনি আর তার পরিবার কেন আক্রান্ত হবে? তারা বলেছে, এর মধ্যে অনুপ্রবেশকারী বহিরাগত সন্ত্রাসী থাকতে পারে। আমি পুলিশ কমিশনারকে বলেছি, নিরীহ কাউকে যেন ধরা না হয়।’ তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের বাসভবনে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। তাণ্ডবের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি পেতে হবে। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমার যে সকল ভাই-বোনেরা গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের সকলকে নিঃশর্তভাবে মুক্তি দেওয়া হবে এবং পাশাপাশি যারা আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিত্সার ব্যবস্থা করবে সরকার।
এর আগে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের একজন প্রতিনিধি সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের প্রতিটি দাবি পূরণ করার চেষ্টা করছেন। আমরা আশা করছি, তিনি আমাদের দাবি মেনে নেবেন। বৈঠকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, মুক্তযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপ দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া উপস্থিত ছিলেন। আর মামুনের নেতৃত্বে বৈঠকে পরিষদের ১৯ সদস্যের মধ্যে কানিজ ফাতেমা, আফসানা সাফা, একরামুল হক, আল ইমরান হোসাইন, লীনা মিত্র, আরজিনা হাসান, লুবনা জাহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আন্দোলনকারীরা বৈঠকে ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন। তাদের পাঁচ দফা দাবি হলো-কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ না দেওয়া, চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহারের সুযোগ না দেওয়া, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সবার জন্য অভিন্ন কাট মার্কস ও বয়সসীমা নির্ধারণ করা ও কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধায় নিয়োগ প্রদান করা।