শেখ হাসিনার অধীনেই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে :নাসিম

আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম শেখ হাসিনাকে সরিয়ে নির্বাচনের দাবিকে মামা বাড়ির আবদার হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। এক্ষেত্রে কোনো আন্দোলনে কাজ হবে না, কারো অযৌক্তিক আবদার মানা হবে না। গতকাল রবিবার বিকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত ‘জরুরি প্রসূতিসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় পুরস্কার প্রদান’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উদাহরণ ও ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের উদাহরণ টেনে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, তাদের অধীনে যদি নির্বাচন হতে পারে এবং বিরোধীরা ক্ষমতায় যেতে পারে, তাহলে সংবিধান অনুযায়ী কেন শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে না? বিএনপি নেত্রীকে নির্বাচনে এসে জনগণের মুখোমুখি হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণকে বিভ্রান্ত না করে আগামী নির্বাচনে এসে জনগণের ভোটের জন্য লড়াইয়ে নামুন। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে বর্তমান নির্বাচন ব্যবস্থাকে মজবুত করার উপর গুরুত্বারোপ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে তিন মাসে সরকারি কর্মকর্তা বিশেষ করে নির্বাচন তদারকি কাজে নিয়োজিত জেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বদলি পদায়ন নির্বাচন কমিশনের উপরই ন্যস্ত থাকে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক সরকারের হস্তক্ষেপের সুযোগ থাকে না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী আমরা চলছি, ভবিষ্যতেও চলবো। দেশে বর্তমানে উন্নতির যে ধারা বহমান আছে, তাকে ধরে রাখতে এখন শক্ত, সুদৃঢ় নির্দেশনা ও নেতৃত্ব প্রয়োজন। যা আমরা বঙ্গবন্ধুর কন্যার কাছ থেকে পেয়েছি। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, দেশের স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে বহু আগেই ছাড়িয়েছি আমরা। মুক্তামনির চিকিত্সা, সীতাকুন্ডের কুসংস্কারাচ্ছন্ন এলাকার মানুষদের চিকিত্সার ক্ষেত্রে সরকারের অবদানের কথা তুলে ধরেন মন্ত্রী।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি জটিলতা কাটাতে মন্ত্রী বলেন, পদোন্নতি জটিলতা দূর করার জন্য নিজেরা বসে আলোচনা করে একটি সমঝোতায় উপনীত হওয়া জরুরি। এজন্য আদালতের শরণাপন্ন হবার কোনো প্রয়োজন নাই। এধরনের পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য নিজেদের মধ্যে সমঝোতার পথ খুঁজে বের করাই সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ইউনিসেফ আয়োজিত অনুষ্ঠানে জরুরি প্রসূতিসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও কর্মীদের পুরস্কার দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সিরাজুল হক খান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের সচিব সিরাজুল ইসলাম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. কাজী মুস্তাফা সারোয়ার, ইউনিসেফের বাংলাদেশের প্রতিনিধি সারা বোর্ডাস এডি, ইউএনএফপিএ’র বাংলাদেশের প্রতিনিধি রনডি অ্যান্ডারসন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী গত বছর জরুরি প্রসূতি সেবায় সফল ভূমিকা রাখার জন্য ৫৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পুরস্কার তুলে দেন।