শুভ হোক নতুন বছর

01/01/2016 4:57 pmViews: 10
শুভ হোক নতুন বছর
শুভ হোক নতুন বছর
প্রতিদিনের মত আজো সূর্য উঠেছে। শীতের কুয়াশা সরিয়ে উঁকি দিয়েছে উজ্জ্বল রোদ। কিন্তু অন্য যে কোনো দিনের চাইতে আজকের ভোরের আলোতে যেন বেশি মায়া মাখানো। যেন নতুন স্বপ্নের কথা বলছে। বলছে, সামনের দিনগুলোতে অনিশ্চয়তা কেটে গিয়ে শুভময়তা ছড়িয়ে যাবে দেশে, পৃথিবীতে। আশাজাগানিয়া সূর্যকিরণ যেন সে দ্যুতিই ছড়িয়ে দিচ্ছে প্রত্যেকের প্রাণে, মনে।
আজ ২০১৬ সালের প্রথম দিন। সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা। সারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের মত আমরাও আমাদের অগণিত পাঠকদের জানাই ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’। নতুন বছরটি আনন্দে, শান্তিতে ভরে উঠুক–এই প্রত্যাশা।
আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে/তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের এ কথার মতই দুঃখ, কষ্ট সবকিছু কাটিয়ে নতুন জীবনের দিকে যাত্রার প্রেরণা নেবে মানুষ। নতুন বছরটি যেন প্রতিটি মানুষের মন থেকে সকল গ্লানি, অনিশ্চয়তা, হিংসা, লোভ ও পাপ দূর করে। রাজনৈতিক হানাহানি থেমে গিয়ে যেন আমাদের প্রিয় স্বদেশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যেতে পারে।
গত বছরের প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির হিসাব খুঁজতে খুঁজতে নতুন বছরকে সামনে রেখে আবর্তিত হবে নতুন নতুন স্বপ্নের। বাংলাদেশে ইংরেজি নববর্ষ পালনের ধরন বাংলা নববর্ষ পালনের মত ব্যাপক না হলেও এ উত্সবের আন্তর্জাতিকতার ছোঁয়া থেকে বাংলাদেশের মানুষও বিচ্ছিন্ন নয়।
রাজনৈতিক সহিংসতা, নানা দুর্যোগ-দুর্ঘটনা আর ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ইংরেজি ২০১৫ সাল। মহাকালে মিলিয়ে গেল আরেকটি ঘটনাবহুল বছর। সেইন্ট গ্রেগরি প্রবর্তিত ক্যালেন্ডারের হিসাবে ২০১৫ সাল শেষ হয়ে গত রাত বারোটার পর শুরু হয়েছে ২০১৬ সাল। সারা বিশ্বের মানুষ আনন্দ-উল্লাস করে পালন করছে এই নতুন বছরের শুরুর ক্ষণটিকে। বাংলাদেশেও ২০১৬ সালকে স্বাগত জানিয়েছে সব বয়সের মানুষ। দেশ-বিদেশে অবস্থানরত বন্ধু-বান্ধব ও প্রিয়জনদের আগামী বছরের মঙ্গল কামনা করে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানো শুরু হয়ে গেছে ফেসবুক, টুইটার ও মোবাইলের এসএমএস’এর মাধ্যমে। নববর্ষকে ঘিরে বিক্রির জন্য রঙ বেরঙ-এর নতুন ক্যালেন্ডার ও ডায়েরিতে ছেয়ে গেছে বিভিন্ন বিপণি বিতানের প্রাঙ্গণ। প্রিয়জনকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে কার্ডের শো-রুমগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়।
ইংরেজি বর্ষপঞ্জি
যিশু খ্রিস্টের জন্ম তারিখ থেকে যে সাল গণনা শুরু হয়েছিল তাই আজ বিশ্ব জুড়ে ইংরেজি বর্ষ হিসাবে পরিচিত। তবে ১৫৮২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগোরির আদেশে এ বর্ষপঞ্জির প্রচলন হয়। সেজন্য একে গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি বলা হয়। সে বছর অল্প কয়েকটি রোমান ক্যাথলিক দেশ এ বর্ষপঞ্জি গ্রহণ করে। পরবর্তীকালে তা প্রায় সারা বিশ্বে প্রচলিত হয়। সেইন্ট গ্রেগোরির সংশোধনের আগে জুলিয়ান বর্ষপঞ্জির গণনা অনুযায়ী একটি মহাবিষুব থেকে আরেকটি মহাবিষুব পর্যন্ত সময়কাল ধরা হয়েছিল ৩৬৫.২৫ দিন। যা প্রকৃত সময়কাল থেকে ১১ মিনিট কম ছিল। এই ১১ মিনিটের পার্থক্যের ফলে প্রতি ৪০০ বছর অন্তর মূল ঋতু থেকে জুলিয়ান বর্ষপঞ্জির প্রায় তিন দিনের ব্যবধান ঘটতো। সেইন্ট গ্রেগোরির সময়ে এই ব্যবধান বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১০ দিনের। ফলে মহাবিষুব ২১ মার্চের পরিবর্তে ১১ মার্চ পড়েছিল। যেহেতু খ্রিস্টিয় উত্সব ‘ইস্টার’ এর দিন ঠিক করার সঙ্গে মহাবিষুব জড়িত তাই সময়ের এই ব্যবধান দূর করা ক্যাথলিক গির্জার কাছে প্রয়োজনীয় ছিল।
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও
বিরোধী দলীয় নেত্রীর বাণী
নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে দেশবাসীকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে প্রত্যাশা পূরণে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বিগত বছরের সকল অকল্যাণ ও ব্যর্থতার গ্লানি মুছে নতুন বছর সবার জন্য বয়ে আনুক সমৃদ্ধি ও বিজয়ের বাণী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইংরেজি নতুন বছর উপলক্ষে দেশবাসী, প্রবাসী বাঙালিসহ বিশ্ববাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন, সংবিধান ও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে ২০১৫ সাল ছিল বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল বছর।

Leave a Reply