শিশুর জন্য কার্যকর খাবার
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল
প্রায় সব শিশুই মা-বাবা যেমন চান তেমন পরিমাণ কিংবা তেমন করে খাবার খায় না। আপনি যদি আপনার শিশুর প্রতি যত্নশীল হন তবে নিচের গাইড লাইনগুলো শিশুকে খাদ্যগ্রহণে সাহায্য করতে পারে :
# শিশুরা শিডিউল মেনে চলতে পারে। সুতরাং প্রতিদিন একই সময়ে খাবার ও নাশতা খেতে দিন।
# তাই শিশুকে প্রতি দুই-তিন ঘণ্টা অন্তর কিছু না কিছু খেতে দিন। অর্থাত্ দিনে তিনবার খাবার এবং দুই-তিনবার হাল্কা কিছু খেতে দিন।
# আপনি নিশ্চিত করুন যেন আপনার শিশু খুব সহজেই খেতে চায়।
# আপনার শিশুকে নিজের হাতেই খেতে দিন। প্রথমে অল্প পরিমাণ খেতে দিন। একটু পর আবার দিন। যদি আপনি নিশ্চিত হন যে আপনার শিশু কম পরিমাণ খাচ্ছে সেক্ষেত্রে দুটি চামচ ব্যবহার করুন। একটি চামচ শিশুর নিজ হাতে খাওয়ার জন্য, অপরটি আপনি তাকে সাহায্য করার জন্য ব্যবহার করুন।
# শিশুকে জোর করে খাওয়াবেন না। এতে আরও খারাপ হবে।
# আপনার শিশু যদি প্রতিদিন একই খাবার খেতে চায় তাতে চিন্তার কিছু নেই এবং অনেক শিশুই এই রকম। ছোট বাচ্চার জন্য বিচিত্র খাবার খুব জরুরি নয়, জরুরি বিষয় হলো ক্যালরি এবং প্রোটিন।
# খাবারের সময় প্রথমে শক্ত খাবার খেতে দিন। তরল খাবার মূলত পেট ভরার জন্য এবং কম ক্যালরিযুক্ত।
# জুস, তরল কিংবা যে কোনো পানীয় নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি খেতে দেবেন না। বরং তার পরিবর্তে দুধ কিংবা ফর্মুলাযুক্ত খাবার খেতে দেবেন।
# যেসব খাদ্য আপনার শিশু সহজে নাড়াচাড়া করতে পারে সেসব খাদ্যই তাকে খেতে দিন।
# বেশি ক্যালরির জন্য প্রতিবারই খাবারের সঙ্গে বাটার, ঘি কিংবা চিজ যুক্ত করতে পারেন।
# সোডাযুক্ত খাবার, আইসক্রিম কিংবা চকোলেট নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি খেতে দেবেন না। এসব খাবারে কম পরিমাণ প্রোটিন এবং অল্প ক্যালরি থাকে। এসব খাবার পেটের মূল্যবান জায়গা দখল করে থাকে এবং শিশুদের বাড়তে খুব বেশি সহায়তা করে না।
# আপনার শিশুকে অন্য সবার সঙ্গে খেতে দিন। তাতে খাবারটা তার কাছে আনন্দের হবে।
# শিশুর বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতার জন্য অন্যতম কয়েকটি কারণ হলো— দেরিতে খাদ্যগ্রহণে অভ্যাস, বেশি পাতলা ফর্মুলা খাবার, সিরিয়ালযুক্ত খাবার, যত্রতত্র এবং যখন-তখন খাওয়ানো, পাকস্থলীর ইনফেকশন, যেমন জিয়ারডিয়াসিস, মুখনালির ইনফেকশন, সাইনোসাইটিস, আয়রনের ঘাটতি, শক্ত পায়খানা ইত্যাদি।
আপনার চিকিত্সকের শরণাপন্ন হোন
বুকের দুধ খাওয়ানোর ব্যাপারে ফর্মুলা খাবার তৈরি করতে যে কোনো প্রদাহ বা ইনফেকশন দূর করতে, বিপাকে কিংবা ক্রোমোজোমাল কোনো অসামঞ্জস্যতা আছে কিনা তা জানতে, কিংবা যখন পর্যাপ্ত ক্যালরিযুক্ত খাবার দেয়ার পরও বৃদ্ধি হচ্ছে না, তখনই আপনার চিকিত্সকের শরণাপন্ন হোন।