শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় বিচারিক তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় বিচারিক তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
নারায়ণগঞ্জে শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে লাঞ্ছনার ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে বিচারিক তদন্ত করে ৩ নভেম্বর প্রতিবেদন দাখিল করতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ৬ নভেম্বর পরবর্তী আদেশের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ বুধবার বিকেলে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদেশে আদালত বলেছেন, শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তার দেওয়া প্রতিবেদনটি অসম্পূর্ণ। তদন্ত কর্মকর্তা জড়িতদের চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনা নিয়ে করা রুলে আইন ও সালিশ কেন্দ্র ব্যাখ্যাদানকারী হিসেবে পক্ষভুক্ত হয়। এর ধারাবাহিকতায় ৯ আগস্ট তারা একটি হলফনামা দেয়। ওই হলফনামায় তারা বলে, সাধারণ ডায়েরির (জিডি) সূত্র ধরে করা তদন্তে শিক্ষক শ্যামল কান্তির কোনো বক্তব্য নেওয়া হয়নি।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী জেড আই খান পান্না প্রথম আলোকে বলেন, নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশের দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনকে আদালত অগ্রহণযোগ্য ও অসম্পূর্ণ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এই প্রতিবেদন আমলে নেওয়ার বিচারক ‘জুডিশিয়াল মাইন্ড অ্যাপ্লাই’ করেননি বলে আদালত বলেছেন। পুলিশ এ বিষয়ে শ্যামল কান্তির সঙ্গে কোনোরূপ যোগাযোগ করেনি। আমরা আদালতের কাছে অ্যাফিডেভিট আকারে জমা দিয়েছি। তিনি দায়রা জজকে দিয়ে ঘটনা তদন্তের আরজি জানান।
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরে ওঠ-বস করানোর ঘটনাটিকে আকস্মিক বলে উল্লেখ করা হয়েছে পুলিশের প্রতিবেদনে। এতে শিক্ষক শ্যামল কান্তির জবানবন্দি উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, জাতীয় পার্টির স্থানীয় সাংসদ এ কে এম সেলিম ওসমান ও তিনি—দুজনেই পরিস্থিতির শিকার। শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনার ঘটনায় বন্দর থানায় করা সাধারণ ডায়েরির (জিডি) তদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য রয়েছে।
বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ৭ আগস্ট রোববার জিডির এই প্রতিবেদন দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি নিয়ে আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য ১০ আগস্ট দিন ধার্য করেন।
ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত ১৩ মে শ্যামল কান্তিকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে লাঞ্ছিত করা হয়। এ ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সাংসদ সেলিম ওসমানের কঠোর সমালোচনা করেন। তবে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।