হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসের লকার থেকে অন্তত ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে ঢাকা শুল্ক বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। যে কোনো মূল্যে চুরির সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করা হবে বলে জানিয়েছেন কাস্টমসের একাধিক কর্মকর্তা। চুরি হওয়া স্বর্ণের মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। এই ঘটনায় শুল্ক বিভাগ একজন যুগ্ম কমিশনারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। পুলিশ জানায়, রোববার দুপুরের দিকে ভল্ট থেকে স্বর্ণ চুরির বিষয়টি জানাজানি হয়। ওই এলাকাটি সংরক্ষিত। পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে।

অবৈধ উপায়ে আনা যাত্রীদের কাছ থেকে জব্দ স্বর্ণের বার, অলংকারসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র কাস্টম হাউসের গুদামে রাখা হয়। উধাও হওয়া স্বর্ণের মধ্যে অলংকার ও স্বর্ণের বার রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, কোনো চক্র সুকৌশলে কাস্টম হাউস থেকে জব্দ স্বর্ণ সরিয়ে ফেলেছে। দীর্ঘদিন ধরে অল্প অল্প করে সরানো হয়েছে, নাকি একবারেই গায়েব করা– তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

কাস্টম হাউসের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জব্দ মালপত্র গুদামে ঠিকঠাক রয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত হতে কয়েক দিন ধরেই নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছিল কাস্টম হাউস। আলাদা একাধিক দল গুদামের মালপত্রের তালিকা প্রস্তুত করছিল। এ সময় তারা দেখতে পায়, গুদামের একটি তালা বাইরে থেকে অক্ষত থাকলেও ভেতরের লকার ভাঙা। এর পরই স্বর্ণ চুরির বিষয়টি ধরা পড়ে।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বিমানবন্দরের কাস্টমস কর্মকর্তারা চার শিফটে কাজ করেন। সব শিফটে জব্দ করা স্বর্ণ একটি গুদামে রাখা হয়েছিল। স্বচ্ছতার জন্য ঢাকা কাস্টম হাউসের কমিশনার একেএম নুরুল হুদা আজাদ সম্প্রতি জব্দ করা স্বর্ণ শিফটের ভিত্তিতে আলাদা লকারে রাখার নির্দেশ দেন। বিভিন্ন শিফটে জব্দ হওয়া স্বর্ণ ওই শিফটের নির্ধারিত লকারে রাখতে বলেন তিনি। পরে গুদামে থাকা স্বর্ণের হিসাব করার জন্য একটি কমিটি করা হয়। ওই কমিটি প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। কাস্টম হাউস ছাড়াও সিআইডি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকটি দল দোষীদের শনাক্ত করতে কাজ করছে।

বিমানবন্দরের ভেতরে হারিয়ে যাওয়া ও খুঁজে পাওয়া পণ্য রাখার স্থানের পাশেই কাস্টমসের গুদাম। গুদামটিতে বিমানবন্দরে কর্তব্যরত ঢাকা কাস্টম হাউস, শুল্ক গোয়েন্দা, তদন্ত অধিদপ্তরসহ অন্য সংস্থাগুলোর জব্দ করা মালপত্র রাখা হয়।