শর্ত সাপেক্ষে মসজিদ মন্দিরের জমি নিতে পারবে সরকার মন্ত্রিসভায় আইনের খসড়া অনুমোদন

04/04/2017 10:48 amViews: 7
শর্ত সাপেক্ষে মসজিদ মন্দিরের জমি নিতে পারবে সরকার
মন্ত্রিসভায় আইনের খসড়া অনুমোদন
 
শর্ত সাপেক্ষে মসজিদ মন্দিরের জমি নিতে পারবে সরকার
শর্ত সাপেক্ষে মসজিদ, মন্দিরসহ সব ধরনের ধর্মীয় উপাসনালয় ও জমি সরকার জনস্বার্থে নিয়ে নিতে পারবে। তবে যেসব স্থাপনা অধিগ্রহণ করা হবে সেসব স্থাপনা সরকারকে নিজ খরচে তৈরি করে দিতে হবে। এমন বিধান রেখে তৈরি করা ‘স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন, ২০১৭’- এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে মন্ত্রিসভার সদস্যগণ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। আইনের খসড়ায় ধর্মীয় উপাসনালয় বলতে মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডাকে বোঝানো হয়েছে। এ ছাড়া কবরস্থান, মঠ ও শ্মশানের জমি অধিগ্রহণ করার সুযোগও রয়েছে। জনস্বার্থে একান্ত অপরিহার্য হলে ব্যক্তি বা সংস্থার অর্থে স্থানান্তর ও পুনর্নির্মাণ করার শর্তে কেবল ওই সম্পত্তি অধিগ্রহণ করা যাবে।
প্রসঙ্গত, দেশের বিভিন্ন ধরনের জনস্বার্থমূলক স্থাপনা, রাস্তাঘাট ইত্যাদি তৈরি করার ক্ষেত্রে অনেক সময় এ ধরনের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান অন্তরায় হয়ে যায়। দেখা যায়, যেখানে বা যেখান থেকে উন্নয়ন করা হবে তার কোথাও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান অবস্থান করছে। ফলে অনেক সময় ওই উন্নয়ন আর করা সম্ভব হয় না বা আধাআধি করে রাখা হয়, যা জনগণের কোনো উপকারে আসে না। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতাদের মধ্যস্থতায় বিষয়গুলোর মীমাংসা করে উন্নয়ন অব্যাহত রাখার দৃষ্টান্তও আছে। কিন্তু এবারই প্রথম এটি আইনের অধীনে আনা হল।
উল্লেখ্য, এরশাদ সরকারের সামরিক শাসনামলে জারি করা ১৯৮২ সালের এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ বাংলায় রূপান্তর করে এই আইন করা হচ্ছে। তবে সামরিক সরকারের অধ্যাদেশে ধর্মীয় উপাসনালয়, কবর বা শ্মশানের জমি অধিগ্রহণের সুযোগ ছিল না। সরকারিভাবে জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ জমির দামের দেড়গুণ থেকে বাড়িয়ে তিনগুণ এবং বেসরকারিভাবে জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ চারগুণ বাড়ানোর বিধান রাখা হয়েছে এই আইনে।
জমির যে বাজারদর হবে তার উপর অতিরিক্ত ২০০ ভাগ যুক্ত করে অধিগ্রহণকৃত সম্পত্তির দাম দিতে হবে। যেমন কোনো জমির মূল্য যদি এক কোটি টাকা হয় তাহলে আরও দুই কোটি টাকা যুক্ত হয়ে তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ (সরকারি অধিগ্রহণে) দিতে হবে। বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানও জনস্বার্থে ‘কখনও কখনও’ ভূমি অধিগ্রহণ করতে পারবে। কোথাও স্কুল হবে, কোনো একটা প্রতিষ্ঠান হবে, সেজন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু ক্ষতিপূরণ বেশি দিতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সময় ১২ মাসের জমি কেনাবেচার দলিলের গড় বিবেচনায় নিয়ে জমির দাম নির্ধারণ করা হবে। তিনি বলেন, আগে অতিরিক্ত জেলা বা দায়রা জজ পর্যায়ের কর্মকর্তাকে আরবিট্রেটার নিয়োগ দেওয়া হতো। প্রস্তাবিত আইনে যুগ্ম- জেলা জজ বা সাব-জজ পর্যায়ের কর্মকর্তাকে ওই পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে আপিলে থাকবেন জেলা জজ পর্যায়ের কর্মকর্তা।

Leave a Reply