নড়াইলের লোহাগড়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মল্লিকপুর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম মৃধাকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যার চারদিন পার হলেও এখনো পর্যন্ত থানায় মামলা দায়ের করা হয়নি। বরং খুনের ঘটনার পর বাদী পক্ষের দলীয় সমর্থকরা সম্ভাব্য আসামিসহ অন্তত ৭০টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, নিহত নূর ইসলাম মৃধার পরিবার দ্রুত মামলা দিতে চাইলেও গ্রামের কয়েকজন কথিত মাতব্বরদের পারিপার্শ্বিকতার কারণে চাইলেই কিছু একটা করতে পারছেন না। পুলিশ বলছে, থানায় মামলা দিতে আসছে, আর চলে যাচ্ছে, আমরা কি করবো।
গত ১৬ আগস্ট সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার পারমল্লিকপুর গ্রামে মৃত মকসেদ মৃধার ছেলে নূর ইসলামকে গ্রাম্য দলীয় প্রতিপক্ষরা কুপিয়ে হত্যা করে। ওই সময় অন্তত ১৫ জন আহত হয়। ঘটনার পর পুলিশ ছয়জনকে আটক করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১২ রাউন্ড শর্ট গানের এবং গ্যাস গানের ৩ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে।
হত্যাকাণ্ডের পর হেমায়েত হোসেন হিমুর লোকজন সম্ভাব্য আসামিসহ বিরোধীপক্ষ আবির ঠাকুর, জাকির ঠাকুর, আলী আহম্মদ ঠাকুর, রহমত ঠাকুর, রণি মুছল্লি, মিহির মুছল্লি, তজিবর মুছল্লি, আরিফ মুছল্লি, রাজু শেখ, সোহাগ শেখ, মোস্ত শেখ, মিজান গাজী, ইলিয়াস গাজী, তকিবর গাজী, ওকি মুন্সী, সোহেল মোল্যা, সাইফুল মৃধা, রফা মৃধা, ভুলু মৃধা, তরিকুল মৃধা, খায়ের মৃধা, পিকা শেখ, সিরাজ শেখ, দুলাল ঠাকুর, মান্নান ঠাকুর, শহিদুল ঠাকুর, মোস্ত ঠাকুর, আলিম কাজী, মুক্তার মোল্যা, রেনু কাজী, হালিম কাজী, মিরাজ শেখ, হায়দার গাজী, তারা গাজী, সকু গাজী, মিকাইল মোল্যা, আবিদ ঠাকুর, উজ্বল ঠাকুর, তারেক মুছল্লি, ইয়াকুব,আরিফুল মোল্যা এর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট চালিয়েছে বলে অভিযোগ।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই গ্রামের একাধিক লোক জানায়, খুনের পর কয়েকজন মাতুব্বর ব্যবসা শুরু করেছে। টাকা দিলে মামলায় আসামী করা হবে না এবং তার বাড়িতে ভাংচুর, লুটপাট করা হবে না। সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত অন্তত ৮০টি গরু, ৬০ টি ফ্রিজ, ৩৫ টি গ্যাসের সিলিন্ডার ও চূলা, টেলিভিশন, বিদেশী কম্বল, খাট-পালং, ড্রেসিং ডেবিল,সিলিং ফ্যান, টেবিল ফ্যান লুটপাট করা হয়েছে। লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার সাহা শুক্রবার দুপুরে জানান, ওই এলাকার শান্তি রক্ষায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ।