লালমোহনে স্কুল ভবনে পুলিশ ক্যাম্প ক্লাস চলছে গাদাগাদি করে
মোঃ জসিম জনি, লালমোহন, ২৮সেপ্টেম্বর , প্রথম বাংলা : লালমোহনে স্কুল ভবন দখল করে চালানো হচ্ছে পুলিশ ক্যাম্প। আর স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা গাদাগাদি করে ক্লাস করছে। ৬টি ক্লাসের জন্য রয়েছেমাত্র ৩টি কক্ষ। লালমোহন ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের জনতা বাজার পূর্ব চতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ অবস্থা চলছে গত ২ বছর ধরে। ওই স্কুলের নতুন দ্বিতল ভবন তৈরি হলেও সেই ভবনে থাকছে পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা। ক্যাম্পের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে ওই ভবনেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, লালমোহনের মেঘনা নদীতে জলদস্যু দমন ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মেঘনা নদীর তীরবর্তী ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের জনতা বাজারে একটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। ক্যাম্প ইনচার্জ, নায়েকসহ কনস্টেবলদের থাকার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান হেদায়েতুল ইসলাম মিন্টু জনতাবাজার পূর্ব চতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকতে দেন তাদের। ক্যাম্পের জন্য নির্ধারিত কোন স্থান ও পুলিশ সদস্যদের আবাসিক থাকার ব্যবস্থা না করেই পূর্ব চতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত দ্বিতল ভবনটিতে থাকতে দেওয়া হয়। স্কুল ভবনেই চলতে থাকে পুলিশ ক্যাম্পের কার্যক্রম। পুলিশ সদস্যদের থাকা, রান্না, এমনকি কাপড় চোপড় রোদ দেওয়াসহ সব কিছুই চলে ওই ভবনে। নতুন ভবনে ক্লাসের জন্য তৈরি বেঞ্চ টেবিলও পুলিশ সদস্যদের দখলে। আর অন্যদিকে বিদ্যালয়ের ক্লাস চলছে পুরণো ভবনেই। শিশু শ্রেণীসহ ৬টি ক্লাসের ২০২ জন ছাত্র-ছাত্রীর জন্য মাত্র ৩টি কক্ষ এবং ভাঙ্গা চোরা পুরণো ৪০টি বেঞ্চ রয়েছে। ক্লাসে স্থান সংকুলান না হওয়ায় গাদাগাদি করে বসতে হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মফিজুল ইসলাম জানান, নতুন ভবন নির্মাণ হয়েছে ২ বছর আগে। ভবন স্কুলকে বুঝিয়ে দেওয়ার আগেই এখানে পুলিশ ক্যাম্প চালানো শুরু হয়েছে। গত ২ বছর যাবৎ নতুন ওই ভবনে পুলিশ সদস্যরা থাকছেন। স্কুলের জন্য বেঞ্চ দেওয়া হলেও ওই বেঞ্চ জোড়া দিয়ে পুলিশ সদস্যরা রাতে ঘুমাচ্ছেন। এখানেই রান্না করছেন তারা। বিষয়টি আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসে বার বার জানালেও কোন সুরাহা পাইনি। তাই এতগুলো ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে পুরণো ভবনের ৩টি কক্ষে ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছি।
ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই দেলোয়ার হোসেন খান যুগান্তরকে জানান, মেঘনায় জলদস্যু দমন ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিআইজি, এসপি ও জেলা প্রশাসকের চেষ্টায় এখানে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। ক্যাম্পের কার্যক্রম চালানোর জন্য ইউপি চেয়ারম্যান সাহেব বর্তমান স্থানে পুলিশ সদস্যদের থাকতে দিয়েছে। আমি ১মাস আগে এই ক্যাম্পে যোগদান করেছি। এসেই এই স্কুলে ক্যাম্প পেয়েছি।
লালমোহন থানার ওসি (তদন্ত) গাজী শাহিদুর রহমান জানান, স্কুলে সাময়ীক ভাবে ক্যাম্পের সদস্যদের থাকতে দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকায় স্থায়ীভাবে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে। তখন তাদের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা করা হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার যোতীশ চন্দ্র শীল জানান, স্কুল থেকে পুলিশ সদস্যদের যেতে বলা হয়েছে। এখনো যায়নি কেন জানিনা। তবে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেবা।