লন্ডনে বসে অপমান করবে, সেটা হবে না

16/06/2015 10:34 amViews: 4

লন্ডনে বসে অপমান করবে, সেটা হবে না

 

যুক্তরাজ্য সফরকালে স্থানীয় বিএনপির বিক্ষোভে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে ডেমোনস্ট্রেশন কিসের জন্য? স্থলসীমানা চুক্তি বাস্তবায়ন করেছি তার প্রতিবাদে? সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি তার প্রতিবাদে? লন্ডনে বসে অপমান করবে, সেটা হবে না। রোববার লন্ডনের পার্কলেন হোটেলে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দেয়া সংবর্ধনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য শেখ হাসিনাকে এ নাগরিক সংবর্ধনা দেয়া হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকসহ নির্বাচিত বাংলাদেশী বৃটিশ পার্লামেন্ট সদস্যদের অভিনন্দন জানানো হয়।
প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেয়ার সময় ওই হোটেলের সামনে যুক্তরাজ্য বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী বিক্ষোভ করেন। মাথায় কালো কাপড় বেঁধে ব্যানার ও পোস্টার নিয়ে তারা বিক্ষোভ করেন। পুলিশ এ সময় বিক্ষোভকারীদের ঘিরে রাখে। নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। এর আগে শুক্রবার এবং শনিবার প্রধানমন্ত্রীর হোটেলের সামনে বিক্ষোভ করে স্থানীয় বিএনপি।
সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের যে ভৌগোলিক অবস্থার গুরুত্ব রয়েছে, সেটাকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নতি করাই সরকারের লক্ষ্য। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখেই বাংলাদেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে হবে। শুধু নিজেদের কথা নয়। বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও মিয়ানমার মিলে আমরা যৌথভাবে যোগাযোগের মাধ্যমে আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়েছি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে হাতজোড় করে বসে থেকে কী অর্জন করলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একদিকে আমাদের যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আছে তেমনি মানবসৃষ্ট দুর্যোগও আছে। দুটোই আমাদের মোকাবিলা করতে হয়। জ্বালাও, পোড়াও, খুন, হত্যার মূল হোতা তো এখানেই বসে আছে। তিনি বলেন, বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন করে দেশের দুশতাধিক মানুষকে হত্যা করে কী অর্জন করল? কী লাভ হলো দেশের। এতিমের অর্থ যারা চুরি করে খেয়েছে, বাসে আগুন দিয়ে যারা মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে এবং যারা হুকুম দিয়ে এগুলো করিয়েছে, তাদের বিচার বাংলাদেশের মাটিতে হবে। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে কয়টি চুক্তি হয়েছে, সেগুলো আওয়ামী লীগ ও তার সরকারের কূটনৈতিক সাফল্য। আজ সারা বিশ্বে বাংলাদেশ একটি মডেল। তিনি বলেন, দেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অনেক বাধা আসবে। সেই প্রতিকূলতা ঠেলেই এগিয়ে যেতে হবে। দারিদ্র্যকে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অভিন্ন শত্রু হিসেবে উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। ১৯৭৫ ও ২০০৭ সালে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় তার প্রতি যুক্তরাজ্যপ্রবাসীদের ভালবাসা ও অবদানের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য এখন তার কাছে আরও আপন। কারণ তার ভাগনি টিউলিপ যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তিন কন্যা যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে এমপি নির্বাচিত হওয়ায় একজন বাঙালি হিসেবে তিনি গর্বিত।
অনুষ্ঠানে শুরুতেই যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতারা শেখ হাসিনার হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন।  যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ক্রেস্ট উপহার দেয়া হয়। শেখ হাসিনা তার ভাগনি টিউলিপের হাতে ফুলের তোড়া ও বই তুলে দেয়ার পর নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে টিউলিপ বলেন, আসলে কখনও ভাবিনি, নিজের খালার হাত থেকে ফুল পাব।
সভায় সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান শরীফ। বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

Leave a Reply