লতিফের বিরুদ্ধে আরো মামলা : পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ
বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির ঘটনায় চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম এ লতিফের বিরুদ্ধে এবার ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ও তথ্য-প্রযুক্তি আইনে দুটি মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার মহানগর হাকিম আদালতে করা মামলা দুটি গ্রহণ করে তথ্য-প্রযুক্তি আইনের অভিযোগ তদন্ত এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগের বিষয়ে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক ফরিদুল আলম।
এর মধ্যে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১২৪ ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগটি করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কে এম বেলায়েত হোসেন। বঙ্গবন্ধুর ছবি ‘বিকৃত করে’সংসদ সদস্য এম এ লতিফ ‘সংবিধানবিরোধী’কাজ করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করেছেন বাদী। তার অভিযোগ শুনে বিচারক সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
লতিফের বিরুদ্ধে অন্য মামলাটি করেছেন যুবলীগের সাবেক নেতা সাইফুদ্দিন আহমেদ রবি, যিনি একই ঘটনায় এর আগে হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছিলেন। তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় করা এবারের মামলায় লতিফসহ মোট চারজনকে আসামি করেছেন তিনি। আদালত তার অভিযোগ শুনে পাঁচলাইশ থানার ওসিকে তদন্ত করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।
গত ৩০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চট্টগ্রাম সফরের আগে নিজের নির্বাচনী এলাকায় সড়কের পাশে বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত কয়েক ডজন বিলবোর্ড লাগান লতিফ। কিন্তু ওই ছবি নিয়ে ফেইসবুকে শুরু হয় তুমুল আলোচনা। বলা হয়, ছবির দেহাবয়ব, পাজামা ও জুতা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের একটি অংশের বিক্ষোভের মধ্যে লতিফ গত রবিবার বিলবোর্ডের প্রচারের দায়িত্বে থাকা বিজ্ঞাপনী সংস্থার এক ডিজাইনারকে সংবাদ সম্মেলনে হাজির করেন। সেই ডিজাইনার স্বীকার করেন, ছবিতে লতিফের দেহাবয়বে বঙ্গবন্ধুর মাথা ব্যবহার করা হয়েছে।
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাদীর আইনজীবী রনি কুমার দে বলেন, একজন গ্রাফিক ডিজাইনারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে তিনি (লতিফ) এর দায় স্বীকার করিয়েছেন। অথচ ওই ডিজাইনার এর একদিন আগেও গণমাধ্যমে বলেছিলেন, লতিফ সাহেবের তত্ত্বাবধানে এ কাজ হয়েছে।
তিনি বলেন, লতিফ সাহেব বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি বিকৃত করায় চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ তথা জনগণ বিভ্রান্ত হয়েছেন। ফলে রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে জনরোষ সৃষ্টি হয়েছে বলে বাদী মনে করছেন।
তথ্য-প্রযুক্তি আইনের মামলায় এম এ লতিফের পাশাপাশি এই সংসদ সদস্যের সহযোগী মো. আমজাদ, চট্টগ্রাম চেম্বারের কর্মচারী রাজীব দাশ এবং বিজ্ঞাপনী সংস্থা হায়দার প্রিন্টার্সের চিফ ডিজাইনার কবির হোসেন বাবুসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ মামলার বাদী সাইফুদ্দিন আহমেদ রবি বলেন, ওই ব্যানার-ফেস্টুন তৈরিতে যারা জড়িত তারা জামায়াত ও বিএনপির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
বাদীর আইনজীবী মোসলেহ উদ্দিন চৌধুরী শাহীন জানান, তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।