র‌্যাবের অভিযানে ভেজাল ওষুধ উদ্ধার, জরিমানা ১ কোটি ২৪ লাখ

28/09/2013 6:22 pmViews: 9

২০ জনকে ১ বছর করে জেল

jaaaaa-3-copy-45স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর মিটফোর্ড মেডিসিন মার্কেটে ভেজাল ওষুধের ছড়াছড়ি। শনিবারও ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে ধরা পড়ে ওই মার্কেটের ৫ কোটি টাকার বিপুল পরিমাণ ভেজাল ওষুধ। এ সময় জরিমানা করা হয় মোট ১ কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অভিযান চলাকালে র‌্যাবের সঙ্গে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ১ র‌্যাব সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দায়ের করা হয়েছে ৭৭টি মামলা। আটক করা হয়েছে ৯৩ জনকে। সিলগালা করা হয়েছে ২৮টি ওষুধের দোকান। আর ২০ জনকে এক বছর করে কারাদ- দেয়া হয়েছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে র‌্যাব ও বিএসটিআইএ কর্মকর্তারা ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেন। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত ভেজাল ওষুধ রাখা ও বিক্রির দায়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেন। পরে ওই মার্কেটের দোকানদাররা সংগঠিত হয়ে র‌্যাবের ওপর হামলা চালান। পরে র‌্যাব পাল্টা হামলা চালায়। এলাকায় অতিরিক্ত র‌্যাব মোতায়েন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফরহাদ হোসেন ও মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিক। সংঘর্ষের ঘটনায় পুরো মিটফোর্ড এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেক ওষুধ দোকান বন্ধ করে অন্যত্র কিছুটা দূরে অবস্থান করেন দোকানের মালিক ও কর্মচারীরা। তাদের কেউ কেউ নানাভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন। জরিমানা ও কয়েকজনকে আটক করার পর পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মার্কেটের দোকানদাররা দলবদ্ধভাবে র‌্যাবের মুখোমুখি হওয়ার চেষ্টা করেন। শুরু হয় উভয়পক্ষের মধ্যে হামলা ও পাল্টাহামলা। কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ হয়ে যায় অভিযান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসর পর বিকেল পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকে। অভিযানকারী দল জানায়, যারা ভেজাল ওষুধ বিক্রি করবেন এবং যেসব ডাক্তার এসব ওষুধ প্রেসক্রিপশনে লিখবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযোগ উঠেছে, অনেক ওষুধ কোম্পানির ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ অবাধে বাজারে প্রবেশ করছে। বিক্রি হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের সর্বত্র। অনুমোদনহীন ও অপরীক্ষিত ওই সব অবৈধ ওষুধ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বছরের পর বছর পরীক্ষা-নিরীক্ষার বাইরে রয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানির হাজার হাজার প্রকারের ওষুধ। লাইসেন্স দেয়ার পর অধিকাংশ ওষুধের নমুনার মনিটরিং করা হয় না। বছরে সর্বোচ্চ তিন হাজার প্রকার ওষুধের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর ক্যাপাসিটি রাখে সরকারী দু’টি ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরি। আর দেশে রয়েছে বিভিন্ন কোম্পানির প্রায় সাড়ে আট হাজার প্রকারের ওষুধ। এই সাড়ে আট হাজার প্রকার ওষুধের একবার পরীক্ষা শেষ করতে সময় লাগে আড়াই বছরের ওপরে। তার মানে আড়াই বছর পর পর প্রতিটি প্রকার ওষুধ পরীক্ষা-নিরীক্ষার আওতায় আসে। আর পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজ নিয়মিত না হলে হলে তো কোন কথাই নেই। পরীক্ষাবিহীন এই মধ্যবর্তী সময়ে অনেক অসাধু কোম্পানি সাজিয়ে বসে ভেজাল ওষুধের পসরা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের ডিন অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ  জানান, যেকোন ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ গ্রহণ করাই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। মান ঠিক না থাকলে গ্রহণকারীর মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এ ধরনের ওষুধ ব্যবহারকারীরা নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এমনকি তাদের কেউ কেউ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে পারেন। মান বহির্ভূত ওষুধ এড়িয়ে চলার জন্য জনসাধারণকে পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ।

Leave a Reply