রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে নতুন শর্ত
বৈঠকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের সর্বশেষ অবস্থা অবহিত করা হয়। সংসদীয় কমিটিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউএনএইচসিআর এর উপস্থিতিতে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর গ্রহণ সাপেক্ষে প্রতিদিন ৩০০ জন করে (১৫০ জলপথে, ১৫০ স্থলপথে) রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করা হবে। রোহিঙ্গারা রাখাইনের ক্যাম্পে অনধিক দুই মাস অবস্থান করবেন। রোহিঙ্গাদের প্রারম্ভে খাদ্যসহ সকল সহায়তা করা হবে। পরবর্তীতে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। রোহিঙ্গাদের নিজ গ্রাম কিংবা পার্শ্ববর্তী গ্রামে চাষাবাদের জন্য জমি বরাদ্দ দেয়া হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য নির্ধারিত ১৫টি গ্রামের মধ্যে দুইটিতে পাইলট প্রজেক্টভুক্ত রোহিঙ্গারা বসবাস করবেন। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গাদের শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সকল মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
রোহিঙ্গাদের এনভিসি (ন্যাশনালিটি ভেরিফিকেশন কার্ড) কার্ডে কোনো জাতি বা ধর্ম উল্লেখ থাকবে না এবং প্রত্যাবাসনের পরে উক্ত কার্ডের ভিত্তিতে মিয়ানমারের রাগরিকত্ব আইন ১৯৮২ অনুযায়ী নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবে। এর আগে প্রতিবেদনের শুরুতে বলা হয়েছে-কূটনৈতিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পাশাপাশি চীন-এর মধ্যস্থতায় মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ একটি পাইলট প্রকল্পভুক্ত (প্রত্যাবাসনের প্রথম ব্যাচ) ১১৭৬ জন রোহিঙ্গাকে রাখাইনে প্রত্যাবাসনের আগ্রহ দেখায়। ভেরিফিকেশনে জটিলতা নিরসনে বাংলাদেশের দাবির প্রেক্ষিতে মিয়ানমারের ১৭ সদস্যের একটি টেকনিক্যাল টিম গত ১৫ থেকে ২২শে মার্চ টেকনাফ সফর করেন। তারা পাইলট প্রজেক্টভুক্ত রোহিঙ্গা পরিবারের ৪৮০ জন সদস্যের সরাসরি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। এ সাক্ষাৎকারের ফলে পূর্বে বাদ পড়া পরিবারের সদস্য ছাড়াও বেশ কয়েকজন নবজাতক ও বিবাহসূত্রে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত ১১০ জন নতুন সদস্যকে পাইলট প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। অতঃপর ৬-৮ই এপ্রিল চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত ডেন জি জুং বাংলাদেশ সফর করেন। এর আগে তিনি মিয়ানমার সফর করেন।