রোববার সৌদি সরকারের সঙ্গে হজ চুক্তি
ঢাকা : রোববার সৌদি আরবের সঙ্গে হজ চুক্তি করবে বাংলাদেশ। সৌদি সরকারের সঙ্গে চুক্তি করতে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শুক্রবার সৌদি আরব গেছেন। এ চুক্তির মাধ্যমে নির্ধারিত হবে চলতি বছর কতজন বাংলাদেশি হজ পালন করতে পারবেন।
প্রতিনিধি দলে ধর্মমন্ত্রী ছাড়াও ধর্ম সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হাসান জাহাঙ্গীর আলম, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (হজ) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও ধর্মমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. আবু সাঈদ রয়েছেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার হজযাত্রী সৌদি আরবে পাঠানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। সফরকালে প্রতিনিধি দলটি চলতি বছর হজ পালনের জন্য সৌদি আরবের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কয়েকটি চুক্তি করবে।
এর মধ্যে হজযাত্রীর সংখ্যা, মোয়াল্লেম ফিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার বিষয় রয়েছে। তবে হজযাত্রীর সংখ্যা নির্ধারণের মূল চুক্তিটি হবে রোববার। এছাড়া হাজীদের জেদ্দা-মক্কা-মদিনায় যাওয়া-আসা নিয়ে জেনারেল কার সিন্ডিকেট ও মদিনা আদিল্লা অফিসের সঙ্গে চুক্তি, সৌদি বিমানবন্দরে হজযাত্রীদের ব্যবস্থাপনা নিয়ে ইউনাইটেড এয়ারের সঙ্গে চুক্তিগুলো ১৭-১৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্পন্ন হবে।
এ প্রসঙ্গে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (হজ) মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, বাংলাদেশের ও সৌদি সরকারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হবে। জনসংখ্যার অনুপাতে এ বছর ১ লাখ ৩০ হাজার হজযাত্রীর জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়ার আশা করছে সরকার। অন্যান্য দেশের জন্য যে নীতি বাংলাদেশের জন্যও তাই প্রযোজ্য হবে।
তিনি বলেন, চুক্তির পর আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে হজ প্যাকেজ মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।
এদিকে হজ এজেন্সিগুলোর ন্যূনতম ৫০ জন হজযাত্রী পাঠানোর কোটা রেখে এ বছরের হজ চুক্তি করতে সৌদি সরকার ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। অতিরিক্ত কোটা চাপিয়ে দিলে এ খাতে বিশৃঙ্খলা তৈরির আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছে সংগঠনটি।
গত বছর প্রত্যেক হজ এজেন্সির জন্য ন্যূনতম ১৫০ জন হাজি পাঠানোর শর্ত জুড়ে দিয়েছিল সৌদি সরকার। পরে বাংলাদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এ শর্ত তুলে নেয়।
এ বিষয়ে হাবের সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাহার জানান, ন্যূনতম ৫০ জন এবং সর্বোচ্চ ৪০০ জন হাজিকে হজে পাঠানোর বিধান রেখে হজ এজেন্সিগুলোকে লাইসেন্স দিয়েছে সরকার। বর্তমানে হাবের সদস্যভুক্ত প্রায় ১ হাজার ৩০০ এজেন্সি রয়েছে। কিন্তু গত বছর সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে হঠাৎ করেই একটি এজেন্সিকে ন্যূনতম ১৫০ হাজিকে হজে পাঠানোর শর্ত দেওয়ায় অধিকাংশ এজেন্সি সমস্যায় পড়েন।
তিনি বলেন, বিষয়টি সামনে রেখে চলতি বছরও যেন ন্যূনতম ৫০ হাজীকে একটি এজেন্সি হজে পাঠাতে পারে, সেজন্য হাবের পক্ষ থেকে সরাসরি সৌদির ধর্ম মন্ত্রণালয় উজরাতুল হজকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছর বেসরকারি হজ প্যাকেজ প্রসঙ্গে হাব সভাপতি বলেন, দুই দেশের সরকারের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী সৌদি আরবে হাজিদের পরিবহন খরচ, থাকা-খাওয়া ও কোরবানির ব্যয় নির্ধারণ করা হবে। এছাড়া বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় হাজীদের উড়োজাহাজ ভাড়া নির্ধারণ করবে। পরে ধর্ম মন্ত্রণালয় হজ প্যাকেজ ঘোষণা করবে।
তিনি বলেন, সরকারের হজ প্যাকেজ ঘোষণার পর হাবের পক্ষ থেকে আগামী ১৬ মার্চ বেসরকারি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে।