রোজায় ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয়
রোজায় ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয়
রোজায় ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয়
বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীদের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। যার মধ্যে বিশ্বজুড়ে প্রায় ১ বিলিয়ন মুসলমান এই পবিত্র রমজান মাসে ডায়াবেটিস মোকাবেলা করে রোজা রাখছেন। খাবার যেহেতু শরীরে সরাসরি প্রভাব রাখে সেহেতু ডায়াবেটিস (টাইপ-১, টাইপ-২) এর ক্ষেত্রে রয়েছে উভয় সংকট। দীর্ঘ সময় না খাওয়ার কারণে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা একদিকে যেমন কমতে পারে অন্যদিকে হাইপোগ্লুকোমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। আসুন জেনে নেই রোজায় ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয় সম্পর্কে।
রোজায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু নির্দেশিকা:
নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা চেক করুন।
রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা খুব বেশি বৃদ্ধি পেলে বা কমে গেলে তার চিকিৎসা করাটা জরুরি।
যদি আপনি দ্বিধান্বিত, বিচলিত বা অসুস্থ বোধ করেন তাহলে দ্রুত রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা পরিমাপ করে দেখুন।
এই লক্ষণগুলো হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কারণে হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে যদি রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা ৭০ mg/dL এর নীচে নেমে যায় তাহলে রোজা ভেঙে ফেলাই ভালো।
রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা ৩০০ mg/dL হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টি-ডায়াবেটিক ঔষধ বা ইনসুলিন গ্রহণ করুন। রোজার সময়ের জন্য চিকিৎসক ঔষধ গ্রহণের সময় পরিবর্তন করে দেবেন।
ইফতারের সময় যে ধরনের খাবার খাবেন :
সঠিক এবং স্বাস্থ্যকর খাবার নির্বাচন করুন। ভুল এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার রক্তের গ্লুকোজের মাত্রার ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
রোজা ভাঙার সময় স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন, অল্প করে গ্রহণ করুন।
খাবারের আকারের বিষয়ে বুদ্ধিমান হোন।
খুব বেশি খাবেন না।
চিনি সমৃদ্ধ ও ডিপ ফ্রাই করা খাবার গ্রহণ করবেন না।
অনেক বেশি ও ভারী খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ এগুলো পেটফাঁপা ও এসিডিটির সমস্যা তৈরি করতে পারে।
রোজা ভাঙার পর স্বাস্থ্যকর তরল গ্রহণ করুন। পানি সবচেয়ে ভালো পানীয়। এছাড়াও লেবু পানি, ঘোল, মিষ্টি ছাড়া লস্যি এবং প্লেইন মিল্ক পান করতে পারেন। শরবত, ফলের জুস, প্যাকেটজাত মিষ্টি পানীয় গ্রহণ এড়িয়ে চলুন।
ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় যেমন- কফি, সোডা বা ফ্রিজি ড্রিংক পান করতে বারণ করা হয়। কারণ, এই পানীয়গুলো ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি করতে পারে।
সেহরির সময় যে ধরনের খাবার খাবেন :
পর্যাপ্ত পানি পান করুন সেহরিতে
কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের এবং উচ্চমাত্রার ফাইবারযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। এ ধরনের খাবার দীর্ঘক্ষণ পাকস্থলীতে থাকে এবং ক্ষুধা কম লাগে। কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবারগুলো হচ্ছে – বাদামী চাল, গম, ওটস বা বার্লি। লিগিউম জাতীয় খাবার যেমন – মটরশুঁটি খেতে পারেন, লো ফ্যাটের দুধ ও পনির খেতে পারেন। এছাড়া একটি আস্ত ফল খান। আপনার ডায়েটে ডাল ও সবজি যোগ করুন।
ডায়েট প্ল্যান:
সেহরি – ২ টুকরো মধ্যম আকারের গ্রিল/ বেকড/ ষ্টীম চিকেন ও ১ টি রুটি অথবা ১ টি আস্ত গমের চিকেল রোল।
ইফতার – ২ টি ডিমের সাদা অংশ ও আস্ত গমের ১ টি রুটি অথবা ২ টি ওটমিল এর প্যানকেক ও ১ গ্লাস দুধ।
রাতের খাবার – ১ বাটি সালাদ, ২ টি মাছ ও ১ টি রুটি অথবা ১ বাটি মোরগ-পোলাও ও ১ বাটি সবজি।