রিয়াজ উদ্দিন ছিলেন সাংবাদিক সমাজের অভিভাবক
‘রিয়াজ উদ্দিন ছিলেন সাংবাদিক সমাজের অভিভাবক’
মঙ্গলবার তার স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে যৌথভাবে এই স্মরণসভার আয়োজন করে সম্পাদক পরিষদ ও নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। স্মরণসভার শুরুতে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সম্পাদক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও বণিকবার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় দ্য ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, পাকিস্তান অবজারভার পত্রিকায় রিয়াজ ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করেছি। তিনি ছিলেন ইকোনোমিক রিপোর্টার। আমি ছিলাম ডিপ্লোমেটিক ও পলিটিক্যাল রিপোর্টার। আজ অর্থনৈতিক সংবাদ খবরের কাগজগুলোতে গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়।
আমাদের সময়ে এমনটি ছিল না।
ইংরেজি খবরের কাগজে অর্থনীতির সংবাদকে চমৎকারভাবে তুলে ধরতেন রিয়াজ ভাই। ছাত্রজীবনে আমরা দু্’জন ছাত্রলীগ করেছি। পরবর্তীকালে মতাদর্শের ভিন্নতা থাকলেও ব্যক্তিগত সম্পর্কে আমাদের মধ্যে কখনো বৈরিতা আসেনি। রিয়াজ ভাই ছিলেন অবিভক্ত সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা। দুঃখজনক হলেও সত্য যে পূর্বসূরিরা সাংবাদিক ইউনিয়নের যে ঐক্যবদ্ধ পতাকা আমাদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন আমরা তা ধরে রাখতে পারিনি।
নোয়াব সভাপতি এ. কে. আজাদ বলেন, রিয়াজ ভাইকে আমরা একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে পেয়েছি। তার জীবনের শেষ সভাটি ছিল নোয়াবের। নিজে সততা ও ইন্ট্রিগ্রিটি বজায় রেখেছেন বলেই সন্তানদেরও ইন্টিগ্রিটি, অনেস্টি ও হার্ড ওয়ার্ক করার পরামর্শ দিয়ে যেতে পেরেছেন। যেকোনো সংকট সমাধানে তিনি সঠিক পরামর্শ দিতেন। তার আদর্শ চিরকাল বেঁচে থাকবে।
নোয়াবের সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ খান বাদল বলেন, তার মতো সজ্জন মানুষ আমার বাহাত্তর বছরের জীবনে দেখিনি। তিনি ছিলেন সাংবাদিকতার অকৃত্রিম বন্ধু।
যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, আজীবন পেশাদারিত্ব বজায় রেখে কাজ করেছেন রিয়াজ ভাই। আজকের সাংবাদিকতা নানা মতে, নানা ভাগে বিভক্ত। রিয়াজ ভাই ছিলেন বিভক্ত সাংবাদিক ইউনিয়নের অবিভক্ত গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব।
সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, রিয়াজ ভাই আমাদের অভিভাবক ছিলেন। তিনি ছিলেন সাংবাদিকতার সংকট সমাধানের সারথি। বর্তমান যুগে সংকট বাড়ানোর অনেক নেতা পাওয়া যায়। সমাধানের নেতা নাই। রিয়াজ ভাই সমাধানের নেতা ছিলেন।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, রিয়াজ ভাই আপাদমস্তক সাংবাদিক ছিলেন। সাংবাদিকদের বন্ধু ছিলেন। দলমত নির্বিশেষে সকলের সম্মানের পাত্র ছিলেন। সাংবাদিকতা পেশা আজকের এই অবস্থানে আসার পেছনে অনেক নেতার অবদান আছে। তিনি তাদের অন্যতম।
স্মরণসভায় রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের ছেলে মাশরুর রিয়াজ প্রয়াত পিতাকে স্মরণ করে বলেন, আমার বাবার দুইটা পরিবার। একটা ছিলাম আমরা। আরেকটা হচ্ছে বাংলাদেশের গণমাধ্যম। অনেক বেশি সময় তিনি এই পরিবারকে দিয়েছেন। বাবা খুব সরল মানুষ ছিলেন, সহজভাবে চিন্তা করতেন। সম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন চাইতেন। আমাদের দুই ভাই-বোনকে তিনি সবসময় বলতেন, ইন্টিগ্রিটি, অনেস্ট ও হার্ড ওয়ার্ক করতে হবে।