রিজার্ভের অর্থ উদ্ধারে টাস্কফোর্স
হ্যাকিংয়ে লোপাট বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ উদ্ধারে সাত সদস্যের আন্তঃসংস্থা টাস্কফোর্স গঠন করেছে সরকার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বুধবার এই টাস্কফোর্স গঠনের আদেশ জারি করেছে। বিভাগের সচিব মো. ইউনুসুর রহমানকে এর আহ্বায়ক করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন করে প্রতিনিধিকে টাস্কফোর্সের সদস্য করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্সি ইউনিট’ এর মহাব্যবস্থাপক এর সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নামে সুইফট (সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাংক ফিন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন) মেসেজিং সিস্টেমে ‘ভুয়া’ বার্তা পাঠিয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি ১০ কোটি ডলার ফিলিপিন্স ও শ্রীলঙ্কার দুটি ব্যাংকে সরানো হয়। বানান ভুলের কারণে শ্রীলঙ্কার ২ কোটি ডলার আটকানো গেলেও ফিলিপিন্সে যাওয়া আট কোটি ১০ লাখ ডলারের অধিকাংশ ক্যাসিনোয় যাওয়ার পর দেশটি থেকে পাচার হয়ে যায় গণমাধ্যমে খবর এসেছে। বিশ্বজুড়ে আলোচিত এই ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে ফিলিপিন্সের সিনেট কমিটি।
এরই মধ্যে এক-পঞ্চমাংশ অর্থ উদ্ধার হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সরকারকে জানিয়েছেন। তবে বাকি অর্থ উদ্ধারে অনিশ্চয়তা রয়েছে। টাস্কফোর্সকে চুরি হওয়া রিজার্ভের অর্থ দেশে ফেরত আনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও সংশ্লিষ্ট অন্য দেশগুলোর আইনগত অবস্থা পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে। যেসব দেশে চুরিকৃত অর্থ স্থানান্তর হয়েছে সেসব দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে পারস্পরিক আইনগত সহায়তা নেয়ার বিষয়েও পদক্ষেপ নেবে এই টাস্কফোর্স।
এছাড়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সমন্বয় নিশ্চিতের উদ্যোগ ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা এবং চুরিকৃত/পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার কার্যক্রমে সম্পৃক্ত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা ও প্রয়োজনে এসব সংস্থার সহায়তা নিতেও টাস্কফোর্সকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আদেশ অনুযায়ী, রিভার্ভ থেকে চুরিকৃত অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে সরকার বা বাংলাদেশ ব্যাংক প্রদত্ত নির্দেশনা বা পরামর্শ পর্যলোচনা করে টাস্কফোর্স প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে। টাস্কফোর্স প্রয়োজনে সব সদস্যের সম্মতিতে এক বা একাধিক সদস্য টাস্কফোর্সে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে বলেও আদেশে বলা হয়েছে।
সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরিকৃত অর্থ দেশে ফেরত আনতে উপযুক্ত কার্যপরিধির আওতায় টাস্কফোর্সের সব কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবে।