রাষ্ট্র আমাকে হত্যা করতে চেষ্টা করেছে: ব্রেইভিক
নির্জন কারাবাসের মধ্যদিয়ে রাষ্ট্র তাকে হত্যা করার চেষ্টা করছে বলে দাবি করেছেন নরওয়ের নির্বিচার হত্যাকাণ্ড ঘটানো খুনি অ্যান্ডার্স বেরিং ব্রেইভিক। ডানপন্থি এই উগ্রবাদী সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘণের অভিযোগ করেছেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষ এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।
আদালতে ব্রেইভিক বলেন, গত পাঁচবছর ধরে তার সঙ্গে পশুর মতো ব্যবহার করা হচ্ছে। এরচে তাকে গুলি করারও অনেক বেশি মানবিক হতো। ৩৭ বছর বয়সী ব্রেইভিক স্কিয়েন কারাগারে স্থাপিত আদালতে বুধবার বলেন, তিনি ন্যাশনাল স্যোসালিজমের (নাৎসিবাদ) পক্ষে আমৃত্যু লড়ে যাবেন। মঙ্গলবার প্রথম আদালতে হাজির হয়ে ব্রেইভিক নাৎসি স্টাইলে স্যালুট দিয়েছিলেন। কিন্তু আদালতের বিচার তাকে এই কাজ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানালে বুধবার তিনি আর সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করেননি।
কারাগারের যেসব বিষয় নিয়ে ব্রেইভিক অভিযোগ জানিয়েছেন। এগুলো হলো:
১. প্লাস্টিকের কাপ এবং কাগজের প্লেট ব্যবহার
২. মাইক্রোওয়েভে রান্না করা খাবার সরবরাহ
৩. ঠাণ্ডা কফি
৪. তাকে সম্মানিত নাৎসি বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করার অধিকার বঞ্চিত করা এবং তাদের একজনকে বিয়ে করতে না দেওয়া
৫. দ্য ব্রেইভিক ডায়েরিস এবং দ্য নরডিক স্টেট নামে তাকে দুটি বই প্রকাশ করতে না দেওয়া
২০১১ সালের জুলাই মাসে অ্যান্ডার্স বেরিং ব্রেইভিক অসলোর সরকারি স্থাপনায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটান এবং উটোয়া দ্বীপে নরওয়েজিয়ান লেবার পার্টির গ্রীষ্মকালীন তরুণ ক্যাম্পে বন্দুক হামলা চালান যেখানে নিহতদের মধ্যে অনেকেই ছিল কিশোর। ব্রেইভিকের গুলিতে প্রাণ হারান ৭৭ জন নিরপরাধ মানুষ। তিনি বর্তমানে ২১ বছরের কারাবাস ভোগ করছেন। ৩৭ বছর বয়সী ব্রেইভিক নরওয়ে সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকারের ইউরোপীয় কনভেনশনের দুটি ধারা লঙ্ঘণ করার অভিযোগ এনেছেন।
এই ধারা দুটির একটিতে ‘ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন’ এর অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর এবং ‘লিখিত যোগাযোগ’ এবং ‘অমানবিক ও লাঞ্ছনাকর ব্যবহার অথবা শাস্তি’ বিষয়গুলো নিষেধ করা হয়েছে। ব্রেইভিকের আইনজীবী জানিয়েছেন, বিচ্ছিন্নতার কারণে খুব বিমর্ষ হয়ে আছেন ব্রেইভিক। ব্রেইভিককে অসলো থেকে ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে স্কিয়েন কারাগারে রাখা হয়েছে। বিবিসি।