রাবির আরবী বিভাগে ৭৫ আসন ফাঁকা!
রাবি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা অনুষদভুক্ত ‘এ’ ইউনিটে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন হওয়ায় আরবী বিভাগে ১১০ আসনের মধ্যে ৭৫ টি ফাঁকা রয়েছে।
এতে করে অনেকটা বিপাকে পড়েছেন অনুষদের ডিন ও বিভাগের সভাপতি। সংকট থেকে উত্তরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন অনুষদের ডিন আব্দুল হাই তালুকদার।
তবে বিভাগের সভাপতি মুহম্মদ আব্দুস সালাম মিঞা ডিনের সমালোচনা করে বলেছেন, ডিনের পক্ষ থেকে নতুন পদ্ধতিতে এমসিকিউ পরীক্ষা বিভাগের ওপর চাপিয়ে দেয়ার কারণেই এ বছর শিক্ষার্থী পাওয়া যাচ্ছে না।
বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কলা অনুষদের আরবী বিভাগসহ বেশ কয়েকটি বিভাগে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম এমসিকিউ ও লিখিত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। কলা অনুষদের এমসিকিউ পরীক্ষায় ৮৯৭ জন শিক্ষার্থী আরবী বিভাগে লিখিত পরীক্ষা দেয়ার যোগ্য হলেও শুধু মাদরাসা (দাখিল ও আলিম) থেকে পাস করা ২৭০ জন শিক্ষার্থীকে লিখিত পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেয় বিভাগটি। লিখিত পরীক্ষায় ৫০ নম্বরের মধ্যে পাস নম্বর ধরা হয় ১৬। এতে ১১৬ জন শিক্ষার্থী পাস করে। মেধাক্রম অনুসারে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ১১০ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য বিভাগ থেকে নোটিশ দেওয়া হলেও ভর্তি হয় মাত্র ৩২ জন শিক্ষার্থী। এরপর গত ৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় মেধা তালিকায় ৬ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য নোটিশ দেওয়া হলেও তাদের মধ্যে একজন শিক্ষার্থীও ভর্তি হয়নি।
এতে করে ১৬ নম্বর পেয়ে লিখিত পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থী শেষ হয়ে যায়। তাই বাকি ৭৮ আসন ফাঁকা থাকায় বিপাকে পড়ে বিভাগটি। পরে ডিনের কাছে লিখিত পরীক্ষায় পাস নম্বর কমানোর জন্য বিভাগ থেকে আবেদন করা হয়। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে পাস নম্বর নির্ধারণ করা হয় ১২। এতে ২৬ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পায়। ১৬ মার্চ বিভাগ থেকে তৃতীয় মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়। এতে ২৬ জনের মধ্যে ভর্তি হয় মাত্র ৯ জন। সব মিলিয়ে ৪১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও পরবর্তীতে ৬ জন আরবী থেকে পরিবর্তন করে অন্য বিভাগে চলে যায়। তাই সর্বশেষ বিভাগে শিক্ষার্থী থাকে ৩৫ জন। গত ২৫ মার্চ ভর্তির সময় শেষ হয়ে যায়। তবুও আসন ফাঁকা থাকায় আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ভর্তির সময় বাড়ানো হয় বিভাগ থেকে।
তবে বিভাগ থেকে জানানো হয়, তারা একাধিক শিক্ষার্থীর মোবাইল নাম্বারে কথা বলেও তাদেরকে ভর্তি করাতে পারেননি। আরবী বিভাগে চান্স পাওয়া একাধিক শিক্ষার্থী অন্য বিভাগেও ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় তারা সেখানে চলে গেছেন। তাই বর্ধিত সময়ে কেউ বিভাগে আসবেন না বলে তারা এখন নিশ্চিত। এরই মধ্যে প্রথম বর্ষের ক্লাশও শুরু করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
আরবী বিভাগের সভাপতি মুহম্মদ আব্দুস সালাম মিঞা শীর্ষ নিউজকে জানান, আরবী বিভাগে মাদরাসার শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয়। তাই এমসিকিউ পরীক্ষায় আরবী বিষয়ে কোনো প্রশ্ন না থাকায় আমরা পরবর্তীতে মাদরাসার শিক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের সুযোগ দেই।
তিনি আরও জানান, অন্য বারের মতো এমসিকিউ পরীক্ষায় মাদরাসা সংশ্লিষ্ট প্রশ্ন থাকায় লিখিত পরীক্ষার প্রয়োজন পড়েনি। কিন্তু এবার তা না হওয়ায় লিখিত পরীক্ষা নেয়ার পর বিপাকে পড়তে হয়।
কলা অনুষদের ডিন আব্দুল হাই তালুকদার শীর্ষ নিউজকে বলেন, এই সংকট থেকে উত্তরণের কোনো পথ এখন আমাদের কাছে নেই। তবে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয়া ২৭০ শিক্ষার্থীকে যদি মেধাক্রম অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভর্তির সুযোগ দেয় তা হলেই ফাঁকা আসন পূর্ণ করা যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য মুহম্মদ মিজানউদ্দিন শীর্ষ নিউজকে জানান, শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমরা লিখিত পরীক্ষা নিতে না চাইলেও বিভাগ থেকে তা শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়। তাই আরবী বিভাগে আসন ফাঁকা থাকলেও লিখিত পরীক্ষায় অংশ গ্রহণকারীদের ভর্তির সুযোগ দেয়া যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।