রানা প্লাজার পুনর্খনন দাবি করছে পরিবারগুলো

10/02/2014 7:19 amViews: 6

রানা প্লাজা পুনর্খননের দাবিতে ঢাকায় বিক্ষোভ

ঢাকা: রানা প্লাজা ধসের প্রায় ১০ মাস পর নিখোঁজ শ্রমিকদের আত্মীয়স্বজনেরা দুর্ঘটনাস্থলে আবারও উদ্ধার কাজ চালাতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।বেঁচে যাওয়া কয়েকজন গার্মেন্ট শ্রমিক ও নিখোঁজ পরিবারের সদস্যরা রোববার শ্রম প্রতিমন্ত্রীর কাছে এই দাবি তুলে ধরেছেন।

সম্প্রতি ভবনটির ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে কিছু হাড়গোড় ও মাথার খুলি উদ্ধার করার ঘটনায় তারা ধারণা করছেন যে, নিখোঁজ শ্রমিকদের কঙ্কাল সেখানে পাওয়া যেতে পারে।

সরকারের হিসেবেই পৌনে চারশোর মতো শ্রমিকের এখনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

রাজধানীর কাছে সাভারে দেশটির ইতিহাসে ভয়াবহ এই শিল্প দুর্ঘটনায় ১১০০রও বেশি শ্রমিক নিহত হয়।

গত বছরের ২৪ এপ্রিলের রানা প্লাজা ভবন ধসের ভয়াবহ ঘটনায় নিহত এবং নিখোঁজ পোশাক শ্রমিকদের পরিবারের কান্না এখনো থামেনি।

ঘটনার পর ১০ মাস পার হয়ে গেলেও অধিকাংশ শ্রমিক ক্ষতিপূরণ পায়নি। অনেক নিহত শ্রমিকের ডিএনএ মিললেও তারা কবর বুঝে পাননি।

উদ্ধার অভিযান শেষ করবার পরে রানা প্লাজা নামে ওই ভবনের ধ্বংসস্তূপটি এখন টিন দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। গত ডিসেম্বর মাস থেকে এই ভবনের পেছনে বেশ কয়েকবার হাড় কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে।

ভবনের কয়েক গজ দূর থেকে সম্প্রতি একটি মাথার খুলিও উদ্ধার করেছে পথশিশুরা। ফলে নিখোঁজ শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা মনে করছেন, রানা প্লাজার ধ্বংসাবশেষ আর জঞ্জালের মধ্যেই এখনো ছিন্ন ভিন্ন দেহাবশেষ কঙ্কাল হয়ে পড়ে থাকতে পারে।

আর এ কারণেই তারা সেখানে আবারও উদ্ধার অভিযান চালানোর দাবি করছেন।

বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সমন্বয়কারী তাসলিমা আক্তার বলছিলেন, নিখোঁজ শ্রমিকদের সংখ্যা নিয়েও বিভ্রান্তি রয়েছে।

তাসলিমা আক্তার বলেন, ”আমরা দেখেছি প্রকৃত তালিকা এখনো আমাদের হাতে নেই। ডিএনএ মিরছে ১৫৭ জনের। কিন্তু কবর রয়েছে ২৯১ জনের। আবার অনেকের ডিএনএ পরিচয় মিললেও তাদের কবর আমরা খুঁজে পাইনি। একজনের লাশ অন্যজন নিয়ে গেছে। সেখানে কঙ্কাল পাওয়া গিয়েছে। ফলে এসব ঘটনা থেকে আমরা বুঝতে পারছি শতাধিক নিখোঁজদের শুধু ডিএনএ পরীক্ষা করে খুঁজে বের করা সম্ভব না।”

সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রানা প্লাজার উদ্ধার অভিযান আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্তি ঘোষণা হরা হয় গত বছরের ১৪ মে। এরপর থেকে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন জায়গাটি দেখভাল করছে।

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান মোল্লার জানান, স্থানীয় প্রশাসন হিসেবে তারা রানা প্লাজার জায়গাটিকে দেখভাল করছেন।

সেখানে আবারও উদ্ধার অভিযান চালানো সম্ভব কি না, সে সম্পর্কে তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন প্রশাসনের অনুমতি পেলেই তারা সেটা করতে পারবেন।

রানা প্লাজা ভবন ধসের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১৩৮ জনের মৃত্যুর খবর বলা হচ্ছে। আর শ্রম মন্ত্রণালয় হাইকোর্টে যে তালিকা দিয়েছে, সেখানে নিখোঁজের সংখ্যা বলা হয়েছে ৩৭৯ জন।

তবে ইতিমধ্যে যাদের ডিএনএ শনাক্ত করা হয়েছে, তাদের পরিবারের কাছে অবিলম্বে কবর বুঝিয়ে দেয়ার দাবি করছেন নিহত শ্রমিকদের পরিবার।– বিবিসি।

Leave a Reply