রাতে বিমানবন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বাসভবনে বোমা

28/10/2013 7:06 pmViews: 18

55555_9361প্রতিবেদক : সোমবার সন্ধ্যার পর রাজধানীতে একের পর এক বোমা ও ককটেল হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলা হয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এবং ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুস সালাম, যুবলীগ ঢাকা মহানগরের (দক্ষিণ) সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাটের বাসভবনে। পুলিশ এসব হামলার সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছে, রাজধানীজুড়েই ককটেল আর বোমার বিস্ফোরণ ঘটেছে। পুলিশ গুলশান এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। বোমার আঘাতে আহত দুজন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রয়েছেন।

সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে শাহবাগে আব্দুল্লাহপুর থেকে গুলিস্তানগামী যাত্রীবাহী একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর মাত্র আধাঘণ্টা পর কারওয়ানবাজারে জনতা ভবনের পাশে শ্রমিক লীগের ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। রাত পৌনে আটটার দিকে বাংলামটরে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। ককটেলের স্প্লিন্টারের আঘাতে এক রিকশাচালক আহত হন। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদের গুলশানের বাসভবনে সোমবার দুই দফায় বোমা হামলা হয়েছে। প্রথম দফায় হামলা হয় সকালে এবং দ্বিতীয় দফায় হামলা হয় সন্ধ্যায়। পুলিশ জানায়, দুই দফায় এ হামলায় অন্তত ৭টি বিস্ফোরণ হয়েছে। তবে এতে কেউ আহত হননি।

রাত আটটার দিকে গুলশান অ্যাভিনিউতে জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর বাসভবনে বোমা হামলা হয়েছে। গুলশান থানার ওসি (তদন্ত) নূরে আজম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি বর্তমানকে জানান, রাত আটটার দিকে কে বা কারা সংসদ উপনেতার বাসভবনের পিছন দিক দিয়ে বোমা নিক্ষেপ করে। তিনি বলেন, একটি বোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে গেছে। এ সময় সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বাসায় ছিলেন না। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

এদিকে সোমবার রাতে বায়তুল মোকাররম-পল্টন এলাকায় ছাত্রশিবির হরতালের সমর্থনে ঝটিকা মিছিল বের করে। তবে মিছিলে পুলিশের বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃস্টি হয়। ঘটনাস্থলে র্যাব পৌঁছলে শিবিরকর্মীরা পিছু হটে। পল্টন থানার ওসি সরোয়ার হোসেন বর্তমানকে বলেন, মিছিল করতে না পেরে শিবির পুলিশকে লক্ষ্য করে হাতবোমা নিক্ষেপ করে। পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে পাল্টা দুই রাউন্ড গুলি ছোড়ে। তবে ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। একই সময়ে উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরে একটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। রাতে গ্রিন রোডের ‘গ্রিন লাইফ হাসপাতাল’-এর সামনে একটি বোমা বিস্ফোরণ হয়। মগবাজারে পরপর তিনটি বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে।

রাত পৌনে দশটার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ২ নম্বর গেটের পাশে পার্কিং এলাকায় একটি এবং তথ্যকেন্দ্রের সামনে একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। বিমানবন্দরের মতো স্পর্শকাতর ও সুরক্ষিত এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মালিবাগে টুইন টাওয়ারের সামনেও পর পর দুটি বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। রাতে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরে দুদক চেয়ারম্যান বদিউজ্জামানের বাসভবন এবং সাংবাদিক আবেদ খানের বাসভবনের সামনে বোমা হামলা হয়। ঠিক একই সময়ে মহানগর যুবলীগের (দক্ষিণ) সভাপতি ইসমাইল হোসেনের শান্তিনগরের বাসভবনে তিন দিক দিয়ে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় ওই এলাকায় পুলিশ বা র্যাবের টহল ছিল না। যুবলীগ নেতার বাসায় বোমা হামলার পর পরই একই এলাকায় গুলিবর্ষণ করা হয় ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালামের বাসভবনে। এ সময় তিনি বাসায় ছিলেন না।

পুলিশ জানায়, রাত সাড়ে ১০টার দিকে কয়েকটি মোটরসাইকেলযোগে ১০ থেকে ১২ সন্ত্রাসী এসে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বাসায় হামলা চালায়। হামলাকারীরা বাসা লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করে পালিয়ে যায়।

ঠিক একই সময়ে নটর ডেম কলেজের পূর্বদিকে ঈগল পরিবহণের দুটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। রাত পৌনে ১১টার দিকে রাজধানীর তাঁতীবাজারে বিএনপির স্থানীয় অফিসে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দেয়। রাত ১১টার দিকে ধানমণ্ডি ৩/এ নম্বরে আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে একটি প্রাইভেট কারে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এর পরপরই র্যাব ও পুলিশের টহলগাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

Leave a Reply